বিশ্বকাপ ক্রিকেটঃ মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে ভালবাসা দিবসের নির্মমতা

Cricket World Cup 2015 Australia v England

চ্যানেল ৯ স্পোর্টসের টিভি স্ক্রিনশট
চ্যানেল নাইন স্পোর্টসের টিভি স্ক্রিনশট

শনিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে, আর তাতে প্রথম দিনের খেলায় আয়োজক রাষ্ট্র নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজ নিজ প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা এবং ইংল্যান্ডকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে।

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী খেলায় নিউজিল্যান্ড প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা-কে ৯৮ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছে।

উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় খেলায় অস্ট্রেলিয়া তার প্রতিপক্ষকে ইংল্যান্ডকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করে, দলটি ১১১ রানে জয়লাভ করে।

Image courtesy ICC Cricket World Cup Facebook page

ছবি আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপের ফেসবুকের পাতা থেকে নেওয়া।

ক্রিকেট হচ্ছে টুইটার বান্ধব খেলা কারণ এতে বেশ যথেষ্ট পরিমাণ বিরতি রয়েছে; ওভারের মাঝে, ব্যাটসম্যান আউট হলে, পানি পান, ইত্যাদি বিরতি হচ্ছে অনেকগুলোর মাঝে এর কয়েকটি নাম, যাদের কাছে এই খেলাটা নতুন তারা শিক্ষানবিশদের জন্য বানানো এই গাইড যাচাই করে দেখতে পারেন।

এই খেলার অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ফরম্যাট বা ধরণ রয়েছে, পাচ দিন ধরে খেলতে থাকা টেস্ট ম্যাচ, ওডিআই (৫০ ওভারের এক দিনের আন্তর্জাতিক খেলা) এবং টিটুয়েন্টি। ক্রিকেট বিশ্বকাপ হচ্ছে এক দিনের আন্তর্জাতিক খেলার বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সবগুলো দল ও খেলার সময়সূচি এখানে দেখুন।

অস্ট্রেলিয়ার খেলার সময় প্রথম দুটি জনপ্রিয় টুইটার হ্যাশট্যাগ ছিল #সিডাব্লিউ১৫ এবং #অস্ট্রেভাসইং। প্রথমটি বিভ্রান্তি তৈরী করতে পারে বিশেষ করে যেখানে দুটি খেলার সময় প্রায় কাছাকাছি ছিল,কাজে স্যোশাল মিডিয়া অনুসরণকারীর খেলার বেশীর ভাগ সময় দ্বিতীয় হ্যাশট্যাগটিকে অনুসরণ করেছে।

এমসিজি (মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড) থেকে এই খেলা সম্বন্ধে আসা হাজার হাজার টুইট পরিষ্কার ভাবে কয়েকটি ভাবে বিভক্ত ছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ টুইট ছিল খেলার গতিপ্রকৃতি এবং স্কোর নিয়ে, যেমন উপরের করা টুইট। এছাড়া যে সব টুইট করা হয়েছে সেগুলো ছিল হয় জয়ের গৌরব অথবা পরাজয়ের হতাশা নিয়ে। ইংল্যান্ডের সমর্থকদের মধ্যে একটা সাধারণ বিষয় ছিল তাদের দল এবং দলের খারাপ প্রদর্শনের জন্য দুঃখ প্রকাশ। :

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পনের দৃশ্য দেখার জন্য সকাল সকাল ওঠা ২০ বছরের বেশী সময় ধরে আমার জন্য এক রীতিতে পরিণত হয়েছে।

গতরাতে আমি এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নে আমি দেখছি অস্ট্রেলিয়া ৩৪২ রান করেছে আর আমরা ৯৪ রান তুলতেই ৬টি উইকেট হারিয়েছি… ওহ দাঁড়ান।

এমনকি আইরিশ এবং ওয়েলস–এর বাসিন্দারাও এতে যোগ দিয়েছে। আইরিশ ক্রিকেট খেলোয়াড় প্যাট্রিক ম্যাকডোনাল পর্যবেক্ষণ করেছেন :

মাসব্যাপী সময় ধরে একদিনের ক্রিকেট খেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা আর এই হচ্ছে তাদের সেরা প্রাণঘাতী বোলিং পরিকল্পনা

“রাইট ওভার দি আর্ম স্যাটায়ার” টুইটারে মালিক ওয়েলস-এর বাসিন্দা ম্যাট ওয়েন দুঃখ প্রকাশ করে বলছে :

অন্যদিন আমি বিদ্রূপ করে টুইট করেছিলাম যে অস্ট্রেলিয়া ৩৫০-এর বেশী রান করবে এবং ইংল্যান্ড তার জবাবে ১২০ রানে -৮ উইকেট হারাবে। আমি আমার ধারণার জন্য গর্বিত।

খেলায় অস্ট্রেলিয়ার প্রাধান্য নিয়ে দেশটি ভক্তরা নিজেদের ভাবনা উন্মোচিত করেছে:

কি এক অসাধারণ দর্শক সমাগম! সোনালী উচ্ছ্বলতা- এগিয়ে যাও অস্ট্রেলিয়া

ইংল্যান্ড টসে জিতছে এবং পরাজয় বেছে নিয়ে

যখন দর্শকে ভার সুন্দর মেলবোর্ন দিবসে এবং অস্ট্রেলিয়া যখন প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেয় তখন বিশ্বে এরকম দর্শকপূর্ণ খেলা আছে এই নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়।

যখন ব্যক্তিগত কোন খেলোয়াড়ের বিষয় সামনে আসে তখন কেউ কেউ ক্ষমাশীল নয়:

আসলেই ওয়াটসন খেলছে? তার বদলে ফ্রিসবি মুখে আমি এক কুকুরকে খেলাতে পছন্দ করব।

ক্রিকেটের ধারাভাষ্যকার এবং সেলিব্রেটিরা প্রায়শ টুইটারে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। বিশেষ করে প্রবাদ প্রতীম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট খেলোয়াড় শেন ওয়ার্ন এবং দি মেইল অনলাইনের পিয়ার্স মর্গান:

মাদক বিষয়ে প্রতারণার শিকার হওয়া নিয়ে ওয়ার্ন রসিকতা করেছে। এ প্লাস ধারাভাষ্য।

বিছানা ছেড়ে ওঠ!! তুমি এটা দেখ এবং নিজের রসিকতা আবার নতুন করে ঝালিয়ে নাও!!

ক্রিকেটে অপেক্ষাকৃত কম শক্তি সম্পন্ন দেশগুলোর সাথে ইংল্যান্ডের তুলনা করে দ্রুত একটা মীম তৈরী করা হয়:

আমি ধারনা করি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তান নামক দেশটি ইংল্যান্ডের চেয়ে বেশী রান করবে।

আজকে অস্ট্রেলিয়া যে খেলা প্রদর্শন করল তাতে এই বিতর্ক আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলোর বিশ্বকাপে খেলা উচিত কি না।

এই নিয়ে অনেক মজা করা এবং হাস্যরসের প্রচেষ্টা চলছে, এতে ম্যাট ওয়েন-এর এক টুইট আবার অর্ন্তভুক্ত করা হল:

ইংল্যান্ড… বাড়ী যাও, তোমরা মাতাল হয়ে গেছ।

ইংল্যান্ড উড়ছে। জেতার জন্য ১০ বলে ২ রান দরকার।

পানি পানের বিরতি। মদ দরকার।

কিছু প্রতিক্রিয়া বিচার করে বলা যায় যে আমরা সৌভাগ্যবান এই কারণে যে আমরা কোন কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্রে বাস করি না। তাহলে তাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হত।

অন্য কয়েকটি টুইটের সাথে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল। প্রতিবাদকারীরা অনলাইনে কিছু সমর্থন লাভ করেছে:

ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের খেলায় অস্ট্রেলিয়া দারুণ দেখিয়েছে, উদ্বাস্তু একটিভিস্টরা অস্ট্রেলিয়ার বাজে আশ্রয় সন্ধানী নীতির প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

সরকারের সাথে তুলনায় আন্দাজ করা হয় :

টনি এ্যাবোটের প্রধানমন্ত্রীত্বের কাছে ইংল্যান্ড অনেক বেশী বিশৃঙ্খল।

সবশেষে, ভ্যালেন্টাইন ডে ওরফে ভালবাসা দিবসের মীম অজস্রবার ভেসে উঠেছে, বার বার ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে যা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।:

বিশ্বকাপ ক্রিকেটঃ মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে ভালবাসা দিবসের নির্মমতা

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .