আসলেই কি আর্জেন্টিনা ‘বিদেশী অপরাধীদের দ্বারা আক্রান্ত’? নাকি বিদেশী বিদ্বেষের রাজনীতি?

Sergio Berni. Image from Security Ministery Flickr account under  CC BY-NC-ND 2.0.

আর্জেন্টিনার নিরাপত্তামন্ত্রী সের্জিও বেরনি। ছবি নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের ফ্লিকার একাউন্ট থেকে নেওয়া (সিসি বাই-এনসি-এনডি ২.০ )

আর্জেন্টিনায় বিদেশীদের হাতে ঘটা অপরাধ নিয়ে মন্তব্য করার কারণে এক রাজনীতিবীদ জাতিগত বিদ্বেষ-এর মত এক অভিযোগের মুখে পড়েছেন, যেখানে নিরাপত্তাহীনতা ক্রমশ দেশটিতে এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অধিবাসী, মিডিয়া এবং কর্মকর্তাদের মাঝে নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে এখনো প্রায়শ বিতর্কের সূত্রপাত ঘটেছে, যদিও ইউনাইটেড নেশনস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনডিপির) রিপোর্ট অনুসারে আর্জেন্টিনায় প্রতিবেশী অঞ্চলের তুলনায় খুনের কারণে ঘটা মৃত্যুর হার অনেক কম (১০০,০০০জন নাগরিকের মাঝে ৫.৫ শতাংশ ক্ষেত্রে খুনের কারণে মৃত্যু ঘটে থাকে)। তবে, এই সমস্যার ক্ষেত্রে প্রকৃত পরিস্থিতি আসলে কি তার বের করা কঠিন, বিশেষ করে যখন ২০০৯ সাল থেকে আর্জেন্টিনা অপরাধের আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

অনেক আলোচনায় যে সাধারণ বিষয়টি সবার চিন্তায় আসে যে সংঘঠিত অপরাধের একটা বড় অংশ বিদেশীদের দ্বারা ঘটেছে, যেটি এই বিতর্ককে এই প্রশ্নে রূপান্তরিত করে যে এই সমস্ত অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করা দেওয়া উচিত কি না?

আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা মন্ত্রী সের্গিও বেরনি খানিকটা বিতর্কিত ভাবে এই বিষয়কে মূল্যায়ন করে, যখন অক্টোবর ২০১৪-এ সে তার বক্তব্য উপস্থাপন করে, যেমনটা সংবাদ ওয়েবসাইট ইনফোবে বর্ণনা করেছে:

Estamos infectados de delincuentes extranjeros

বিদেশী অপরাধীদের দ্বারা আমরা আক্রান্ত হয়েছি।

তার এই মন্তব্য বিদেশী বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। ‘গঠনমূলক তত্ত্ব এবং রাজনৈতিক দর্শনের বিষয়ে সেমিনার‘ নামক ব্লগ বৈধ ভাবে আসলে কি করা উচিত সে বিষয়ের উপর মনোযোগ প্রদান করেছে, এদিকে লুকাস রাফার ব্লগ এই সমস্ত অপরাধের পেছনে নীচের বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা করেছে:

El tema tiene unos puntos claves de los que no se habla:

  • Si el tema es que no los atrapás, el problema [eres tú] policía, no los extranjeros.
  • Si el tema es que los atrapás pero no van presos, el problema es tu ley y proceso, no los extranjeros.
  • Si el tema es que son ilegales, el problema es la protección de tu frontera.
  • Si el tema es que son reincidentes y siguen entrando al país a robar, el problema es que no cumplís con la ley migratoria.

এই ক্ষেত্রে কিছু অলিখিত বিষয় আছে:

  • যদি বিষয়টি এমন হয় যে তারা অপরাধীদের ধরতে পারছে না তাহলে দোষ বিদেশীদের নয়, পুলিশের।
  • যদি তাদের ধরা যায়, কিন্তু কারাগারে পাঠানো না যায়, তাহলে সমস্যা আমাদের আইন এবং প্রক্রিয়ায়, বিদেশীরা নয়।
  • যদি তাদের সম্বন্ধে কোন তথ্য নথিবদ্ধ না করা হয়, তাহলে সমস্যা হচ্ছে আপনি কি ভাবে আপনার সীমান্ত রক্ষা করবেন সেটি।
  • যদি সমস্যাটা এমন হয় যে তারা বার বার অপরাধ করে এবং চুরি করার জন্য ঘুরে ফিরে এই দেশে ফিরে আসছে, তাহলে সমস্যা হচ্ছে আপনি অভিবাসন আইনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করতে পারেননি।

আর এর উপসংহার হচ্ছে :

El problema es el Estado, no los extranjeros. Y este país, para el que no tenga memoria, al igual que Estados Unidos, se formó con extranjeros.

এই ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে রাষ্ট্র, বিদেশীরা নয়, এবং এই দেশের ক্ষেত্রেও যে বিষয়টি কেউ স্মরণে রাখে না সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মত এই দেশটিও বিদেশীদের হাতে গঠিত হয়েছে।

পেরুয়ানোস এন আর্জেন্টিনা (আর্জেন্টিনার পেরুবাসি) নামক ব্লগ যুক্তি দেখাচ্ছে যে নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে অভিযোগ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া আর্জেন্টিনার সরকারের জন্য নতুন কিছু নয়। আর্জেন্টিনার প্যারাগুয়ে সম্প্রদায়ের সংবাদপত্র প্যারাগুয়ে নানে রেতা এই বিতর্কে ক্ষেত্রে কিছু তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধের এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে :

El año pasado, la Corte Suprema de Justicia presentó un relevamiento sobre homicidios dolosos en Capital Federal y en los departamentos judiciales de San Martín y La Plata, con datos referidos a 2010 y 2011. En cuanto a los victimarios, ese informe indicó que en Buenos Aires el 15% de los imputados es extranjero (paraguayos, 7% y peruanos, 3%). En La Plata, el 10%; en San Martín, el 4%.

গত বছর, আর্জেন্টিনার রাজধানী শহরের স্বেচ্ছায় মানব হত্যার উপর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এবং সান মার্টিন ও লা প্লাটার বিচার বিভাগ এক জরিপ চালিয়েছিল, যেগুলো ২০১০ এবং ২০১১ সালে তৈরী করা ডাটার ভিত্তিতে করা। এই তথ্য অনুসারে অপরাধীদের ক্ষেত্রে বুয়েন্স আইরেস-এর বিদেশির হার ছিল ১৫ শতাংশ (প্যারাগুয়ের নাগরিক ৭ শতাংশ,পেরুর নাগরিক ৩ শতাংশ)। লা প্লাটায় ১০ শতাংশ; সান মার্টিন ৪ শতাংশ অপরাধী বিদেশী নাগরিক।

এদিকে আর্জেন্টিনার জাতীয় বৈষম্য, জাতি বিদ্বেষ, এবং বর্ণবাদ (আইএনএআইডি) নির্মূল প্রতিষ্ঠা সরকারি কর্মকর্তাদের দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার সময় শব্দ চয়নে সতর্ক হতে বলেছে:

Hay que ser cuidadosos al expresar públicamente desde el Estado hechos y situaciones tan complejas como son las que giran alrededor de la seguridad, porque mas allá de la intencionalidad con la que se manifiestan esos dichos, lo que termina sucediendo es que se legitiman discursos y prácticas racistas y xenófobas de sectores que, no casualmente, son los mismos que critican los avances en materia de Derechos Humanos desde 2003 hasta esta parte.

এদিকে আর্জেন্টিনার জাতীয় বৈষম্য, জাতি বিদ্বেষ,এবং বর্ণবাদ নির্মূল প্রতিষ্ঠা সরকারি কর্মকর্তাদের দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার সময় শব্দ চয়নে সতর্ক হতে বলেছে। এদিকে আর্জেন্টিনার জাতীয় বৈষম্য, জাতি বিদ্বেষ, এবং বর্ণবাদ নির্মূল প্রতিষ্ঠা সরকারি কর্মকর্তাদের দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার সময় শব্দ চয়নে সতর্ক হতে বলেছেঃ আমরা যারা সরকারে আছি তারা জটিল ঘটনা এবং পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকব, যেমন যারা নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছে, কারণ এই সকল বিবৃতির ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য যাই থাক না কেন, শেষে যা ঘটবে তা হচ্ছে তার বর্ণবাদ এবং জাতিগত ঘৃণা নিয়ে আলোচনাকে বৈধ করে তুলবে এবং সমাজের মাঝে এই তার অনুশীলন শুরু হবে আর এটি কোন দুর্ঘটনা নয় যে একই ঘটনা যা ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মানবাধিকারের অগ্রগতিকে সমালোচনার মুখে ফেলে দিয়েছে।

টেলাম নামক সংবাদ সংস্থার মতে, যারা তাকে জাতি বিদ্বেষী বলে সমালোচনা করছে তাদের ক্ষেত্রে বেরনি স্বয়ং নিজের পক্ষে সাফাই গেয়েছে এই বলে যে, তিনি কোন উপসংহার টানেননি, বরং যা ঘটছে তা সমাজের কাছে বর্ণনা করছেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .