প্রবল বন্যায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে বুলগেরিয়ার মিজিয়া শহর

Collecting food and water with names of the people who help and send aid. (Facebook.)

বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে খাবার এবং পানি সংগ্রহ চলছে। (ফেসবুক)  

বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সার্বিয়া এবং অন্যান্য এলাকাতে ২০১৪ সালের মে মাসের সর্বনাশা বন্যায় বেশ কিছু লোক মারা যায় এবং কয়েক বিলিয়ন ইউরো মূল্যের সম্পদ নষ্ট হয়। বুলগেরিয়া তখন এ ধরণের ব্যাপক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু গত জুলাই মাসের শেষে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত বুলগেরিয়াকে এখন প্রতিবেশীদের সেই একই কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বন্যার জন্য বুলগেরিয়াও এখন প্রচণ্ড দুঃখ কষ্ট ভোগ করছে।  

জুন মাসের শুরুতে প্রথম বর্ষণের সময় বুলগেরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর ভারনাতে আঘাত হানে বন্যা। শহরটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র। কয়েক ডজন লোক এতে তাদের জীবন হারিয়েছেন এবং আরও অনেক দালান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার ফলে কয়েক মিলিয়ন ইউরো অর্থের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বন্যা ভেলিকো, তারনভো এবং দোবরিক সহ অন্যান্য শহরেও আঘাত হেনেছে। 

ভারনাতে আঘাত হানার পরেও বুলগেরিয়া দ্বিতীয় দফায় বন্যা প্লাবিত হয়। দ্বিতীয় বারে প্রথম বারের চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মিজিয়া শহরের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে কয়েক শত লোক তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। অবিরাম বৃষ্টির ফলে স্কাট নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বন্যার সৃষ্টি হয়। এক শতেরও বেশি সংখ্যক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে অথবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী, এসব বাড়িঘর আবার মেরামত করতে কয়েক মিলিয়ন ইউরো খরচ হবে। নাগরিক নিরাপত্তা বাহিনী শহরটি থেকে পাঁচশতেরও বেশি অধিবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। তারা তাদের প্রতিবেদনে দুইটি দূর্ঘটনা এবং ১০ জন লোকের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছে।

৪ হাজার লোকের আবসস্থল শহরটিতে ১৬ ফুট উঁচু প্রবল ঢেউ আঘাত হেনেছে। মিজিয়াতে যেন বাইবেলের বর্ননা দেয়া রোজ কেয়ামত ঘটেছে  http://t.co/nZ2WUa2tUO 

“কোউগার” হেলিকপ্টারটি সাহায্য করেছে pic.twitter.com/GyDRVN8mdr

মিজিয়া শহরটি সমতল ভূমিতে অবস্থিত। শহরটির চারপাশ ঘিরে রয়েছে কয়েকটি বাঁধ। স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, বাঁধগুলোর ফাটল মেরামতের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বেশ ধীর গতিতে কাজ করেছে। তবে প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মিজিয়ার অধিবাসীরা বন্যা দূর্গতদের জন্য সরকারের রিলিফ কার্যক্রমের বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বুলগেরিয়ান রেড ক্রস, স্থানীয় অগ্নি নির্বাপণ কর্মী এবং নাগরিক স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে নিয়ে দেশটির নাগরিক নিরাপত্তা সংস্থা মূলত এই কার্যক্রমগুলো ব্যবস্থাপনা করে আসছে। (২৩ জুলাই, ২০১৪ তারিখে সাবেক প্রশাসন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছে। তাই বুলগেরিয়ার এই প্রদেশটিতে বর্তমানে কোন নির্বাচিত সরকার নেই। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সাবেক সরকার একটি তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রীসভার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে দিয়ে গেছে।)

সংবাদ প্রচারকারী একটি বুলগেরিয়ান ওয়েবসাইট মিজিয়াতে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিমান থেকে তোলা কয়েকটি ছবি টুইট করেছেঃ 

GALLERY: A bird's eye view of the disaster in Mizia. http://t.co/TDkOFXpfcBpic.twitter.com/SBuOFbs506

— Vevestibg (@vevestibg) August 3, 2014

গ্যালারিঃ এক নজরে মিজিয়াতে দূর্যোগের চিত্র। 

বুলগেরিয়ানরা একটি ফেসবুক গ্রুপ চালু করেছেন। মিজিয়াতে বন্যা দূর্গতদের জন্য পাঠানো বিভিন্ন সাহায্য সামগ্রী সংগ্রহের কাজটি সমন্বয় করতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রুপটির পরিচালকগণ বলেছেন, এই মুহুর্তে মিজিয়ার স্থানীয় অধিবাসীদের কোন দ্রব্যগুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সে সম্পর্কে তারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। সেগুলো হলঃ খাদ্য এবং বোতলজাত পানি। বুলগেরিয়ান রেড ক্রস স্বেচ্ছাসেবকদের জরুরি সাহায্য এবং অর্থনৈতিক সহায়তা দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়াও সংস্থাটি বন্যা দূর্গত মানুষের জন্য জনহিতকর বিভিন্ন উদ্যোগকে একত্রিত করতে এবং অর্থনৈতিক সাহায্যের জন্য তহবিল গঠন প্রচারাভিযানও শুরু করেছে।  

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .