চীনঃ ফাঁস হয়ে গেল পতিতাবৃত্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নামে গণ মোবাইল নজরদারী

দক্ষিণ চীনে অবস্থিত বহুল আলোচিত যৌন শিল্পের কেন্দ্রস্থল ডংগুয়ানে চীনা সরকার পতিতাবৃতির বিরুদ্ধে একটি বিশাল পরিসরে কঠোর অভিযান চালিয়েছে।

ডংগুয়ানের যৌন শিল্পের দূর্নীতি সম্পর্কে চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত একটি খবরের পাশাপাশি সিনা ওয়েইবো আট-ঘন্টা ব্যাপী একটি অনুষ্ঠান প্রচার করেছে। এ অনুষ্ঠানটিতে ডোনগুয়াং শহরে জনসাধারনের ঢোকা এবং বের হয়ে যাওয়ার মানচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অভিযান চালানোর সময়ে এই পথটিকে “পতিতা” এবং “পতিতাদের গ্রাহকরা” পালিয়ে যাওয়ার পথ হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। বাইদু মানচিত্র থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে বাইদু কিয়ানজি অনুষ্ঠানটি তৈরি করেছে। এই মানচিত্রটিতে দেখানো হয়েছে, অভিযান চলাকালে অধিকাংশ লোকজন হংকং এ “পালিয়ে” গেছে।

Baidu's 8-hour population flow map during the crackdown on prostitution in Dongguan city was released through Sina Weibo official account. Image via Apple Daily.

সিনা উইবোর অফিসিয়াল একাউন্টে প্রকাশিত ডংগুয়ানে পতিতাবৃত্তির উপর কঠোর অভিযান চালানোর সময় বাইদুর ৮ ঘণ্টার জনস্রোতের মানচিত্র। ছবিটি অ্যাপেল ডেইলি থেকে পাওয়া।

প্রকৃত পক্ষে, একটি প্রত্যক্ষীকরণ টুল হিসেবে বাইদু কিউয়ানজি অনুষ্ঠানটির নকশা করা হয়েছে। এই টুলটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যেন চীনা চন্দ্র নববর্ষের সময়ে এটি জনসাধারণের চলাচলের উপর মানচিত্র তৈরি করতে পারে। তথাপি লুও চাংপিং লেটসকর্পে যেমনটি উল্লেখ করেছেন [ম্যান্ডারিন], আসল বিষয়টি হচ্ছে যে পতিতাবৃত্তির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময়ে চারপাশের তথ্য উপাত্তকে বাইদু কিয়ানজির আরও বেশী সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারার মতো সক্ষমতা আছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে কর্তৃপক্ষ এ উপায়ে অপরাধী ধরতে যেয়ে জনসাধারনকে কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছে। বরং তারা এটা না করে শুধুমাত্র সন্দেহভাজন অপরাধীদেরকে এই নজরদারির আওতায় আনতে পারতো। আর এভাবে অভিযান চালাতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের অপ্রকাশিত নম্বরের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে।

কয়েকজন প্রযুক্তি ব্লগার যেমন লুই জুয়েওয়েন লক্ষ্য করেছেন, মানচিত্রে যে তথাকথিত “পলায়ন রুট” দেখানো হয়েছে তা যথেষ্ট ভুলভাবে আমাদের পরিচালিত করছে। কেননা, এখানে জনসাধারণের চলাচলের পেছনে অন্যান্য আরও কিছু কারণ রয়েছে। এমনকি কোন এক সাধারণ দিনেও দুইটি শহরের মধ্যে জনগনের যাতায়াত বেড়ে যেতে পারে। কেননা, ডোনগুয়াঙ্গের বেশির ভাগ কলকারখানার মালিক হংকং থেকে এসেছেন।

এই অভিযান চলাকালীন সময়ে দলীয় প্রচারণা কর্তৃপক্ষের ভৌগোলিক অবস্থান নির্ধারনী প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি জনসাধারণের প্রতি নির্দেশ করে যে বাইদু এবং অন্যান্য মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন প্রস্তুতকারকদের সহায়তায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনের পথ অনুসরণ করতে সক্ষম। যেহেতু সবগুলো মোবাইল ফোনের নাম্বার মোবাইল ফোনধারীদের পরিচয়পত্রের সাথে সংযুক্ত, তাই প্রতিটি মানুষের প্রকৃত পরিচয় এভাবে বের করা যাচ্ছে। এই হুমকির প্রতিক্রিয়ায় হংকং এ বসবাসকারী অনেক ইন্টারনেটবাসী বলেছেন যে চীনে ভ্রমণরত অবস্থায় তারা তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .