চিলি: রাজনৈতিক মনোযোগের মাঝে ভূমিকম্প

১১ মার্চ, চিলির নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে সেবাস্টিয়ান পিনেরা শপথ গ্রহণ করবেন। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি মিশেল ব্যাশেলেট-এর স্থলাভিষিক্ত হবেন। চিলিতে সংঘটিত হয়ে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প সত্বেও রাষ্ট্রপতির এই পরিবর্তন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে এবং চিলির অনেক পর্যবেক্ষক- সেই সমস্ত ব্যক্তির সমালোচনা করছে, যারা এই সময়টিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করার সময় বলে মনে করেন,- এই সমস্ত ব্যক্তিরা সপ্তাহের ছুটির দিনে ঘটা এই বিপর্যয়কর ঘটনার রাজনৈতিক প্রয়োগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দিয়েছেন।

ব্লগার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যাট্রিসিয়া নাভিয়া তার পোস্ট [স্প্যানিশ ভাষায়] শুরু করেছেন এ ভাবে যে, এই ভূমিকম্প নতুন রাষ্ট্রপতি সেবাস্টিয়ান পিনেরার জন্য এক রাজনৈতিক বিজয় বয়ে আনবে:

Ningún gobierno aspira a enfrentar un desastre natural mientras está en el poder. Pero si se pudiese escoger el momento para un devastador terremoto, el comienzo del periodo -o justo antes de asumir- es preferible a los últimos días de mandato. En ese sentido, Piñera tiene mucho más que ganar políticamente que Bachelet. Aunque los errores que cometa Piñera en estos días también le pesarán más que los traspiés en que incurra el saliente gobierno […]

A su vez, como no ha asumido el poder, a Piñera nadie lo hará responsable de los desaciertos, atrasos y errores de la respuesta estatal inmediata. Ya que la reconstrucción comenzará durante su mandato, él hará los anuncios de nuevas obras y también las inauguraciones posteriores.

কোন সরকারই ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে চায় না। কিন্তু যদি কেউ বিপর্যয়কর ভূমিকম্পের সেই মুহূর্তটাকে পেতে চায়, সে ক্ষেত্রে শাসনকাল শুরু করার সময়টাই তার উপযুক্ত সময়-অথবা যখন সে শপথ নেবে তার শুরুতে,- বিষয়টি পছন্দনীয়, শাসনকার্যের শেষ দিনগুলোর চেয়ে। সেই হিসেবে এই ঘটনায় পিনেরা রাজনৈতিক ভাবে ব্যাশেলেটের চেয়ে অনেক বেশি জয়ী হয়েছেন। এমনকি যদিও পিনেরা এই দিনগুলোতে কোন ভুল করেন, তা হলে সেগুলো তাকে ওজনদার করবে, অন্তত বিদায়ী সরকারের ত্রুটিগুলোর চেয়ে […]

একই সময়ে বলা যায় নতুন রাষ্ট্রপতি এখনো শপথ গ্রহণ করেননি। বর্তমানে রাষ্ট্র যদি উদ্ধারকার্যে যে কোন গণ্ডগোল, দেরি অথবা ত্রুটি প্রদর্শন করে, তার জন্য কেউ তাকে দায়ী করবে না। যেহেতু তার সময়ে দেশটির পুনর্নির্মাণ শুরু হবে, সেক্ষেত্রে তিনি নতুন নতুন প্রকল্প এবং সেগুলোর উদ্বোধনের কথা ঘোষণা করবেন।

অধ্যাপক মশাই তার রচনার উপসংহার টানেন এভাবে যে, যদি বর্তমান এবং নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি যৌথভাবে সততার সাথে কাজ করে, তা হলে উভয়ে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন:

Si colaboran, Bachelet cerrará su gobierno brillantemente y Piñera iniciará el suyo con el pie derecho. Si en cambio compiten por el liderazgo, ambos saldrán perjudicados.

যদি তারা যৌথভাবে কাজ করেন, তা হলে ব্যাশেলেট তার শাসনকার্যের শেষ সময়টা দারুণভাবে শেষ করবেন এবং পিনেরা সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে তার কাজ শুরু করবেন। কিন্তু তার বদলে যদি তারা নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করেন, তা হলে উভয়ের জন্য তা ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।
সান্তিয়াগোর মিয়াপ এলাকার একটি এপার্টমেন্ট ভবন। ছবি এখানে তুলে দিয়েছেন ফ্লিকার ব্যবহারকারী রাপোনচি এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

সান্তিয়াগোর মিয়াপ এলাকার একটি এপার্টমেন্ট ভবন। ছবি এখানে তুলে দিয়েছেন ফ্লিকার ব্যবহারকারী রাপোনচি এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে তা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই বিশ্লেষণ অনেক পাঠকই ভালো চোখে নেয়নি, তারা বিবেচনা করেছে নাভিয়া কোন ধারণা না নিয়েই চিলির এমন এক দুঃখজনক সময়ে এক ধরনের রাজনৈতিক প্রচারণা উপস্থাপন করতে চাইছেন। নাভিয়ার ব্লগ পোস্টে কার্লোস গার্সিয়া এই বলে মন্তব্য করেছেন:

Creo que es un gran error sacar cuentas cortas del oportunismo político que puede generar una catástrofe de este tipo. Hoy hay Chilenos desaparecidos, gente sepultada aún con vida y más de un millon de Chilenos perdieron sus hogares y que en lo último que piensan es sobre que político podría beneficiarse.

আমি মনে করি এই রকম এক বিপর্যয়ের মধ্যে রাজনৈতিক অর্জনের হিসেব কষা বড় ধরনের ভুল বলে বিবেচিত হবে। এখনো চিলির অনেক নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে, তারা জীবিত অবস্থায় বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়ে আছে, এর বাইরেও লক্ষ লক্ষ চিলিবাসী তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে এবং তাদের মনে সর্বশেষ যে ভাবনাটি থাকবে তা হবে, চিলির রাজনীতিবীদরা কিসে লাভবান হতে পারে।

কয়েকজন ব্যবহারকারী এই ব্লগ পোস্টটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, যেমন ব্যবহারকারী কার্লোস, তিনি লিখেছেন:

Creo que es una vision realista de lo que pasa. Lamentablemente asi es la politica y no me cabe duda que los comandos politicos han hecho estas evaluaciones. Los que estan rasgando vestiduras no conocen la naturaleza humana y menos a los politicos.

আমি মনে করি, যা ঘটছে এটি তার ক্ষেত্রে একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি। দুর্ভাগ্যক্রমে যেমনটা বর্ণনা করা হয়েছে, রাজনীতিবীদরা সে রকমই, এবং আমার কোন সন্দেহ নেই যে রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে সেই হিসেব কষতে শুরু করে দিয়েছে। যারা তাদের পোশাক চোখের জলে ভেজাতে শুরু করেছে, তারা মানব প্রকৃতি সম্বন্ধে তেমনটা জানে না এবং এমনকি রাজনীতিবীদদের সম্বন্ধে তাদের ধারণা আরো কম।

জুয়ান ফ্রান্সিস্কো কোলয়ানে “প্রকৃতির রাজনীতি [পলিটিক্স অফ নেচার, স্প্যানিশ ভাষায়]” শিরোনামে এক ব্লগ পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন সমালোচনায় যা বলা হয়েছে, তা সত্বেও, ভূমিকম্প প্রমাণ করেছে যে, প্রকৃতি রাজনীতিকে প্রভাবিত করে:

En la “hermandad política” de coadministradores del sistema, cualquier divergencia anterior pasaba a segundo plano.

La naturaleza con su terremoto se convertía en el agente más político, sin diseño previo y como factor inesperado. Es la especial política de la naturaleza que no está en los manuales políticos. […]

Entonces la premisa de que “la política de la naturaleza es apolítica” no es cierta.

বিদ্যমান ব্যবস্থা “রাজনৈতিক ভ্রাতৃত্বের” মিলিত এক প্রশাসন, পূর্বের যে কোন মত পার্থক্য দ্বিতীয় স্থানে চলে যায়।

প্রকৃতি, ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক মাধ্যম হয়ে এসেছে, পূর্বতন কোন চেহারা ছাড়া এবং এক অনাকাঙ্খিত উপাদান হিসেবে। এটা এক বিশেষ প্রকৃতির রাজনীতি যা কোন রাজনীতির পাঠ্যপুস্তকে পাওয়া যায় না।

কাজেই “প্রকৃতির রাজনীতি যে রাজনীতি মুক্ত” এমন সিদ্ধান্ত সত্য নয়।

এই পোস্টে আরো অনেক ইতিবাচক মন্তব্য এসেছে, যেমন কালোর্স আলবার্টো মন্তব্য করেছেন:

Excelente columna. El gobierno debe seguir trabajando y acelerar sus decisiones y acciones. El futuro gobierno coordinarse y apoyar en vísperas de heredar el problema

অসাধারণ এক প্রবন্ধ। সরকারের কাজ করে যাওয়া প্রয়োজন এবং তার সিদ্ধান্ত ও কাজের গতিকে আরো দ্রুত করা প্রয়োজন। কাজ শুরু করার সময়ে পাওয়া এই সমস্যার ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ-এর সরকারকে বর্তমান সরকারের অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত সান্তিয়াগো বিমান বন্দর। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী জর্জ বারাহোনার এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত সান্তিয়াগো বিমান বন্দর। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী জর্জ বারাহোনার এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

পেদ্রো জেসুস টেরুয়েল [স্প্যানিশ ভাষায়] তার ব্লগে লেখেন, তিনি আশাবাদী, নতুন প্রশাসন চিলিকে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে:

Tras las elecciones que han dado la victoria a Sebastián Piñera, en un contexto de alternancia caracterizado por una admirable normalidad democrática, la nueva orientación política aportará renovaciones estructurales ahora espoleadas por la urgencia. Será el 11 de marzo cuando se inicie la nueva legislatura, marcada ya por el azote inesperado del temblor.

যে নির্বাচনে সেবাস্টিয়ান পিনেরা জয়লাভ করেছে, তা গণতন্ত্রের প্রিয় সাধারণ এক চেহারা, যা বিকল্প চরিত্র তৈরি করে, নতুন রাজনৈতিক দলের আগমন কাঠামোগত এক নতুন বিন্যাস সৃষ্টি করবে। এখন জরুরি অবস্থার কারণে বিষয়টি গতি লাভ করবে। মার্চের ১১ তারিখে যখন নতুন সংসদ চালু হবে, তখন তা অনভিপ্রেত এক ভূমিকম্পের ঘটনার মাধ্যমে এ সংসদকে চিহ্নিত করবে।

টুইটার ব্যবহারকারীরা ভূমিকম্প সম্পর্কিত রাজনীতি এবং রাষ্ট্রপতির পরিবর্তনের উপর মন্তব্য করেছে। অনেক টুইটার ব্যবহারকারী, যেমন চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোর এলিজাবেথ টাপিয়া (@ফিলইমোশন), নাভিয়ার ব্লগ পোস্টে আসা মন্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছে:

No falta la gente que todo lo toma como campaña politica. En estos momentos Chile se debe unir, no pensar en partidos. Solo solidaridad.

এমন অনেক লোক রয়েছে যারা সব সময় রাজনৈতিক প্রচারণার দৃষ্টিকোণ থেকে সবকিছুকে গ্রহণ করে। এই সময়ে, চিলির প্রয়োজন এক হয়ে থাকা, রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে চিন্তা করা নয়, কেবল প্রয়োজন জাতির ঐক্য ।

অন্যেরা এই পরিস্থিতিতে অনেক বেশি বিশ্লেষণাত্মক, যেমন ফ্লোরিডার মিয়ামির বাসিন্দা ফারনান্ডো গালাজ (@ফারনান্ডোগালাহ):

La llegada de Piñera al gobierno será como un partido de futbol que comienza perdiendo 5-0, se viene mucho trabajo

পিনেরা সরকারের আগমন যেন এমন এক ফুটবল দলের মত, যে দলটি ৫-০ গোলে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করেছে, তাদের সমানে অনেক কাজ পড়ে আছে।

ব্যাশেলেট বা পিনেরা দুজনের কেউ এই ঘটনা থেকে কোন রাজনৈতিক সুবিধা লাভের চেষ্টা করছেন, এমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কারণ যদি চেষ্টা করা হত, সেক্ষেত্রে ইতোমধ্যে সামাজিক প্রচার মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে দ্রুত বার্তা পৌঁছে যেত। চিলির বর্তমান বেদনাদায়ক ঘটনায় সমালোচকদের ত্রুটি পূর্ণ অবস্থান সত্ত্বেও আমরা অনেক রাজনৈতিক মন্তব্য আশা করি।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .