মরোক্কো: পশ্চিম সাহারা নিয়ে আলোচনা শুরু

পশ্চিম সাহারা নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে- তা বেশ জটিল। মরোক্কো দাবি করে এই এলাকাটি তার। অন্যদিকে সাহারা স্বাধীনতা আন্দোলন (সাহারান ইনডিপেনডেন্ট মুভমেন্ট-সাহারার আদিবাসী পলিসারিওরা মরোক্কোর কাছ থেকে এই অঞ্চলের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করছে) এ এলাকাকে স্বাধীন করতে চায়। এদের সমর্থন দিচ্ছে আলজেরিয়া। তিন বছর আগে মরোক্কো সরকার এবং পলিসারিওদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। তবে চার দফা আনুষ্ঠানিক সমঝোতা আলোচনার পরও কারো পক্ষে কোন সমঝোতায় উপনীত হওয়া সম্ভব হয় নি। বর্তমানে মরোক্কো এই অঞ্চলকে স্বায়ত্তশাসন দেবার পক্ষে। তবে পলিসারিওরা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ-এর প্রশ্নে গণভোট আয়োজনের কথা বলছে। তারা চাইছে এই গণভোটের মধ্যে স্বাধীনতার বিষয়টি যুক্ত থাকবে।

সাম্প্রতিক সংবাদ হচ্ছে, ১০ ফেব্রুয়ারিতে উভয় পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। এটি নিউইর্য়কের মূল এলাকার বাইরের এক স্থানে শুরু হয়েছে। ব্লগাররা এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎের ব্যাপারে যে আলোচনার ক্ষেত্রে নিজেদের চিন্তা প্রদর্শন করে এর গুরুত্ব তুলে ধরছে। মাঘরেব ব্লগের লেখক যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে। তিনি এই সংঘর্ষের ইতিহাস তুলে ধরছেন এবং তার এই মতামত প্রদর্শন করছেন:

যদি পরিকল্পনাটি (পলিসারিওদের) তাদের মনের মত না হয়, এবং সেটাই হবার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি, সেক্ষেত্রে আলজেরিয় এবং পলিসারিওদের দায়িত্ব আরেকটু সামনে এগিয়ে আসা এবং এমন এক প্রস্তাবনা রাখা যা কোন বাঁধার সৃষ্টি করবে না, যা অনেক বাস্তবসম্মত। একটি দাবির স্বপক্ষে যে কোন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ফলে সেটি মরোক্কোর বর্তমান নমনীয় অবস্থানকে পাল্টে ফেলবে, কারণ বর্তমানে পুরো পরিস্থিতি মরোক্কোর অনুকূলে। মরোক্কো এবং আলজেরিয়ার মধ্যে যে কোন অর্থবহ সমঝোতা উভয় রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলজনক হবে, একই সাথে তা মাঘরেব অঞ্চলের বাকী তিনটি রাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে, কারণ এটি হবে এই অঞ্চলের এইসব রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক যুক্ততার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।

মন্তব্যকারী চাষলি উপরের ব্লগারের মূল্যায়নের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন, তিনি বলেন:

আপনি এবং রাবাতের শাসকেরা পলিসারিওদের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। কিছুদিন আগে মরোক্কোর সরকার স্বায়ত্তশাসন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়। তারা এটি করে তখন, যখন পলিসারিওরা এই অঞ্চলে এক গণভোটের পরিকল্পনার কথা উত্থাপন করে। আমি বলতে পারি, এই গণভোটে একটি বিষয়ের কথা উল্লেখ থাকবে, তা হল স্বাধীনতার দাবি। যদি এখানকার অধিবাসীরা স্বাধীনতার স্বপক্ষে ভোট দেয় তা হলে পলিসারিওরা অবৈধ মরোক্কোর বাসিন্দা, যারা তাদের এই উপনিবেশে বাস করছে, তাদের এখানেই থাকতে দেবে এবং মরোক্কোর সাথে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি করবে। যে সমস্ত বিষয় নিয়ে রাবাতের লোকজন উদ্বিগ্ন, তার সাপেক্ষে আমি মনে করি এটাই সবচেয়ে ভালো সমঝোতা প্রস্তাব; যেহেতু রাবাত পরিষ্কারভাবে জাতি সংঘ প্রস্তাবিত আদিবাসীদের নিজেদের নেওয়া সিদ্ধান্ত কি, জানার জন্য গণভোটের বিরোধিতা করে, তার মানে তারা পলিসারিওদের প্রস্তাবের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করে।

মন্তব্য বিভাগে এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলছে। ব্লগার আনালিকিটিস তার সাম্প্রতিক এক পোস্টে এই বিষয়ের অবতারণা করেছেন: সম্প্রতি জাতি সংঘ এ ব্যাপারে যে বিবৃতি দিয়েছে সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন:

এই বিবৃতি পাঠ করার পর এবং সংঘর্ষে লিপ্ত দলগুলোকে আরেক দফা বৈঠকে বসার প্রস্তাব গ্রহণ করতে দেখে যে আনন্দ হয় তাতে মনে হচ্ছে যে পশ্চিম সাহারার এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা বুঝি হাতের নাগালে; এর জন্য যা প্রয়োজন তা হচ্ছে জাতি সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবনা, মহাসচিবের বিশেষ প্রতিবেদন, বিশেষ প্রতিনিধির এক বিবৃতি, এবং একটি দলকে বিরস বদনে সেই প্রস্তাবনা মেনে নেওয়া, যার মধ্যে দিয়ে ৩৫ বছর ধরে চলে আসা এই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে। এই প্রক্রিয়ার উপর খুব সামান্য মনোযোগ প্রদান করা হয়েছে, দলগুলোর তৈরি থাকা, এবং শর্তাবলির প্রেক্ষাপট বিপরীত সঙ্কেত প্রদান করে। আমি যতদুর জানি, উভয় দল অথবা জাতি সংঘ (আমি এখানে পদটিকে খানিকটা শিথিল অর্থে ব্যবহার করেছি) কোন ধরনের অর্থবহ এবং সৎ ভাবে এই আলোচনায় যুক্ত নয়, যা এই সংঘাতকে কমিয়ে আনবে, যে সংঘাত পশ্চিম সাহারার সংঘর্ষ বলে পরিচিত ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .