পেরু: ইন্টারনেটে পেরুর রান্না

সেভিচে নামক খাবারের ছবি, ফ্লিকারের স্কায়ার্ডি_কাটের তোলা চিত্র, সিসি লাইসেন্স অনুসারে এটি ব্যবহার করা হয়েছে।

সেভিচে নামক খাবারের ছবি, ফ্লিকারের স্কায়ার্ডি_কাটের- তোলা চিত্র, সিসি লাইসেন্স অনুসারে এটি ব্যবহার করা হয়েছে।


পেরুর খাবার সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৈচিত্র্যময় খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। এর কারণ হচ্ছে এই দেশটি ভৌগোলিকভাবে বৈচিত্র্যময়। বিভিন্ন সংস্কৃতির মিশ্রণ থেকে নামকরা খাবার এসেছে এবং এর ফলে প্রাচীন রন্ধন প্রণালীকে এখনো এখানে খুঁজে পাওয়া যায়, সেই প্রণালীকে আবার আধুনিক রান্না গ্রহণ করে নিয়েছে। এই পোস্টে আমরা কিছু অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে পেরুর কিছু রান্নার দৃশ্য তুলে ধরবো যা আপনাকে পেরুর সবচেয়ে মজাদার কিছু খাবার রান্নায় উৎসাহিত করতে পারে।

সেভেন কুলিনারি ওয়ান্ডার অফ পেরু (পেরুর সাতটি বিস্ময়কর রান্না) সাইটে, সেরা সাতটি রান্নার তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যা পেরুর নিজস্ব রান্নার প্রতিনিধিত্ব করে। এই খাবারগুলো হল: সেভিচে, লোমো সালটাডো, আজি ডে গালিনা, আন্টিকুচোস, চুপে ডে কামারোনেস, পাপা এ লা হুয়ানকানিয়া এবং কাউসা। তবে, এমন আরো ডজনখানেক খাবার রয়েছে যেগুলো সেরাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তবে তারা সেখানে আসার যোগ্য। এইসব খাবার আবার অন্য অঞ্চলের প্রিয়। এভাবে পেরুর লোকেরা তাদের রন্ধন প্রণালীর অনুসন্ধান বাড়িয়ে চলেছে এবং পেরুর প্রতিটি প্রদেশের সেরা সাতটি রান্নার খোঁজ করছে

প্রথমে আমরা সেভিচে দিয়ে শুরু করি। এটা পেরুর সব জায়গায় জনপ্রিয়। তাজা মাছ লেবুর রসে রান্না করা হয়। সেভিচে (অথবা শেভিচ বা সেবিচে এই কয়ভাবে এটাকে উচ্চারণ করা হয়, এটাকে যেভাবে লেখা হয় তাতে সবগুলো উচ্চারণ সঠিক)- রান্নার উপর ওয়েবে ডজনখানেক ভিডিও রয়েছে, এর মধ্যে কয়েকটি আবার দেখিয়ে দেয় কি ভাবে এটাকে প্রস্তুত করতে হবে, অন্য ভিডিওতে দেখতে পাবেন এই রান্না খাবার পর মানুষ যে আনন্দদায়ক অনুভূতি লাভ করে তার দৃশ্য। পরবর্তী ভিডিওতে, দ্রুত এবং সহজ পদ্ধতিতে বাসায় সেভিচে রান্নার জন্য কি কি করা দরকার সেই দৃশ্য রয়েছে। এই ভিডিওতে পাচক বা শেফ কুচো লা রোজা ব্যাখ্যা করছে, সেরা সেভিচে পাঁচটি উপাদান রান্না করা হয়: একদম তাজা মাছ, পেঁয়াজ, লেবুর রস, পেরুর মরিচের গুঁড়া এবং লবণ। একবার যদি সেভিচে রান্না হয়ে যায়, তাহলে তার সাথে বাড়তি উপাদান হিসেবে লেটুস পাতা, কচি ভুট্টার টুকরা এবং মিষ্টি আলুর টুকরা যুক্ত করতে পারেন:

আরেকটি রান্নার প্রস্তুত প্রণালী রয়েছে যার নাম আজি ডে গালিয়ানা, যাকে অনেকটা ঝাল মুরগি (মরিচ দিয়ে) রান্না হিসেবে অনুবাদ করা হয়। সাধারণ এই মশলাদার খাবার রান্নার জন্য বাদাম, মুরগি এবং চাল-এর, সাথে বিভিন্ন গন্ধযুক্ত উপাদান যুক্ত করা মশলা। এর রন্ধন প্রণালী ইংরেজীতে দেওয়া হয়েছে, এই প্রণালী আমাদের জানাচ্ছে পাচক বা শেফ গুইলিয়ারমো:

সকল বিখ্যাত রন্ধন প্রণালী এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যেমন এখানে হাজার বছর ধরে চলে আসা রান্না আন্দেয়ান পাচামানকা। এর রান্না প্রণালী অনেকটা পাঁচটি উপাদানে বানানো সেভিচে রান্নার মত। তবে এই খাবার রান্না করার জন্য পুরো একটা দিন হাতে রাখতে হয়। এর সাথে রান্নায় সাহায্যকারী কয়েক ব্যক্তিকেও প্রয়োজন হয়। বলা যায় এই রান্না কেবল বড় ধরনের ভোজ বা বিশেষ উৎসবে আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে যখন এই রান্নার জন্য লম্বা সময় লাগে, কারণ এর মাংসটিকে মাখিয়ে রাখা হয়, একটা গর্ত খুঁড়তে হয়, এবং পরিষ্কার পানি প্রবাহিত হচ্ছে এমন এলাকার পাথর সংগ্রহ করে তা গরম করতে হয়। এই গরম পাথর চুলায় পরিণত হয়। এই চুলার উপর গরু, শুকর, মুরগি এবং পাঁঠার মাংসের সাথে বিভিন্ন সব্জি যেমন, আলু, ফাভা শিম, মিষ্টি আলু এবং ভুট্টা মেশানো হয়। এই রান্নার গল্পটাই রারেজাএক্সএক্সএক্স তার ভিডিওর মাধ্যমে আমাদের বলছেন। এই ক্ষেত্রে রান্নার পদ্ধতি কেবল গর্ত খোঁড়া থেকে শুরু হয় না, প্রকৃতপক্ষে তা শুরু হয় যে সমস্ত খাবার পেটে যাবে সেগুলো সংগ্রহ করার মধ্যে দিয়ে। আলুর বৈচিত্র্যময় সংগ্রহের তালিকাটি পরীক্ষা করুন। এখানে ভিন্ন পাঁচ রকমের আলু ব্যবহার করা হয়:

পাচামানকা মেক্সিকোর পথে যাত্রা করেছে। পরবর্তী ভিডিও সেই কাহিনী আমাদের জানাচ্ছে। চুচেমান এই বিষয়টি ব্যাখ্যা করছে এবং কি ভাবে রান্না করা হয় সেই ঘটনার বর্ণনা করছে:

এ অঞ্চলের আরেকটি খাবার যা জাতীয় তালিকায় নিজের নাম উঠাতে ব্যর্থ হয়েছে তার নাম জুয়ানে, এটি চাল ও মাংস মিশিয়ে তৈরি করা হয়, এটি টামালের মত বিভিন্ন উপাদানে তৈরি (টামালে, মেক্সিকোর এক খাবার যেখানে সুপক্ব মাংসের সাথে বিভিন্ন উপাদান মিশ্রিত করা হয়)। যদিও এই খাবার সারাবছর ধরে খাওয়া হয়, তারপরেও সাধারণত এই খাবার সান জুয়ান ( সেন্ট জন দ্যা বাপস্টিস্ট নামের খ্রীস্টিয় সাধুকে স্মরণ করে) উৎসবে খাওয়া হয়। এই উৎসব আমাজান জঙ্গলের যে অংশ পেরুতে পরেছে সেই অংশে পালন করা হয়। জুয়ানে আবার অনেক রকমের হয়। তবে মূল রান্নাটি এ রকম: এই খাবার দেখতে গোল চেহারা নেয়, গোল চেহারার কারণ, এটা সেন্ট জনের কাটা মাথাকে কল্পনা করে তৈরি করা হয়। বাইবেলের গল্প অনুসারে সেন্ট জনের কাটা মাথা একটি থালার মধ্যে করে সালোমেকে প্রদান করা হয়েছিল। যদিও এই খাবারে সঙ্গে যে গল্প জড়িয়ে আছে তা মোটে আনন্দদায়ক নয়, তারপরেও এমনকি আমাজান থেকে অন্য কোথাও বাস করার সময় পেরুর এইসব বাসিন্দারা সেন্ট জন উৎসবের সময় এই খাবার প্রস্তুত করে, যেমন এলমাক্সিন যিনি স্পেনে এই খাবার প্রস্তুত করেছেন:

আপনি যেখানে বাস করেন সেখানকার স্থানীয় খাবার কি রকমের? আপনি যদি একটি স্থানীয় খাবারের নাম আমাদের কাছে উপস্থাপন করুন, যেন সারা বিশ্বের লোক এই খাবার রান্নার চেষ্টা করতে পারে, তাহলে আপনি কোন খাবারে নাম প্রস্তাব করবেন? দয়া করে আপনার মন্তব্যের মধ্য দিয়ে, আপনার উত্তরটি আমাদের জানান, এমনকি এর জন্য কিছু ভিডিওর লিঙ্ক বা সংযোগসূত্র দিতে পারেন, যাতে আমরা নিজেদের হাতে সেটি রান্না করে, চেখে দেখতে পারি!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .