মিশর: বলার অধিকার

২২ জানুয়ারি মিশরীয় ব্লগার এবং এক্টিভিস্টরা এক সম্মেলনের আয়োজন করে। তাদের এই সম্মেলন ছিল বলার অধিকার নিয়ে যা ২০ জন ব্লগারকে গ্রেফতার করা উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়। কিছুদিন আগে নাগা হাম্মাদিতে এক গণহত্যায় বেশ কিছু কপ্ট খ্রীস্টান নিহত হয়। সে সময় একদল ব্লগার ও এক্টিভিস্ট ট্রেনে করে নাগা হাম্মাদিতে পৌঁছায়। ট্রেন সেখানে থামার সাথে সাথে ২০ জন ব্লগারকে গ্রেফতার করা হয়। কিভাবে কর্তৃপক্ষ তাদের উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবারবর্গকে সহানুভূতি জানাতে দেয়নি তার কথা তারা তুলে ধরেন

গ্রেফতার হওয়া ব্লগাররা

গ্রেফতার হওয়া ব্লগাররা

ওয়া৭ডা মাসরইয়া এক মহিলা এক্টিভিস্ট যিনি ব্লগারদের সাথে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ব্লগারদের ছবি উপরে দেওয়া হয়েছে। ভদ্রমহিলা তার ব্লগে লেখেন:

ركبنا سيارة الترحيلات و كانت قذرة و مظلمة و ضيقة سيارة الترحيلات مكتوب عليها من برة تحت جنب النمرة “لنقل المساجين” في رأسي جاءت ميت فكرة و راحت “هو إحنا مساجين؟” “هو إحنا عملنا إيه؟” “هما حياخدونا فين” بالرغم من الاسئلة دي كلها لم ينتابني لحظة خوف واحدة لأني أعلم تماما أننا على حق
আমাদের সেখান থেকে বের করে দেবার জন্য যে গাড়ি আনা হয়েছিল আমরা সেটাতে উঠলাম এবং প্রথমবার আবিষ্কার করলাম সেটা কতটা অন্ধকার, নোংরা এবং খাঁচার মত একটা যান। এর প্লেট নম্বরের কথায় আসি, সেখানে একটা লাইনে লেখা ছিল, “বন্দিদের বহন করার জন্য” এবং আমি বিস্মিত বোধ করলাম, আমরা কি বন্দি। আমি তাদের জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কি এবং আমাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাথায় শত শত প্রশ্ন ঘোরা সত্ত্বেও আমার এক মুহূর্ত কোন ভয় বা সন্দেহ জাগেনি, কারণ আমি জানি আমাদের সকল অধিকার রয়েছে [নাগা হাম্মাদিতে যাবার]।

এই যাত্রায় বন্দি হওয়া ব্লগারদের মধ্যে মিশরীয় ব্লগার ওয়াএল আব্বাসও ছিলেন। । সে কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হয়কায়রো বিমান বন্দর তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার ঘরে তাকে এক পুলিশ কর্মকর্তা আঘাত করে। ওয়াএল জেনছে যে, তাকে ছয় মাসের জেল প্রদান করা হয়েছে:

তাকে ছয় মাসের জেল দেওয়া হয়েছে এবং ৫০০ মিশরীয় পাউন্ড (৯২ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে) জামিন হিসেবে জরিমানা করা হয়েছে। এক নাগরিক, আব্বাস ও তার পুলিশ কর্মকর্তা ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যে, তারা ইন্টারনেটের এক তার নষ্ট করেছে। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে তাকে অনুপস্থিত ঘোষণা করা হয়।

আব্বাস- সরকারের কাছে এক কাঁটার মত- বিবিসি হার্ড টক ( ভিডিওটির ভাষা ইংরেজী) নামের অনুষ্ঠানে তিনি ব্লগারদের কথা বলেছেন যাদের হয়রানি, ধরে নিয়ে যাওয়া এবং জোর করে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গ্রেফতারের সময় তিনি তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করেন:

কতৃত্বশালী এক শাসনব্যবস্থাকে পাল্টে দেবার ক্ষেত্রে ব্লগারদের কি কোন প্রভাব রয়েছে?
এখানে তারা কি সেলিব্রেটি বা তারকা মর্যাদা লাভ করেছে, নাকি সত্যিকারের পার্থক্য গড়ে তুলছে?

ড: মোস্তফা এল নাগগার কথা বলার অধিকারের উপর মিশরীয় ব্লগারদের ঘোষণাপত্র পোস্ট করেছে:

ونؤكد كشباب مصري يعتز بوطنه وانتمائه ويعلي قيمة المواطنة أننا لم نكن يوماً من مثيري الشغب، وأننا لم نتجمهر في نجع حمادي ولم نكن ننوي التجمهر كما حاولوا التلفيق لنا، بل كانت زيارتنا لنجع حمادي مواساة لإخواننا الأقباط في مصابهم الذي هو مصاب مصر كلها، وأننا أحرص الناس على الوحدة الوطنية التي اتهمونا بمحاولة الإضرار بها. كما نعيد التأكيد على أن زيارتنا لم تكن منظمة من قبل أي حزب ولا حركة، وكل من يدعي خلاف ذلك فهو مجافٍ للصواب. جمع السجن بيننا كمسلمين وأقباط، لأننا مصريون في وطن واحد وسجن واحد، ولن يثنينا ما حدث لنا عن العمل كنشطاء مصريين مستقلين من أجل تعميق روح المواطنة وتحقيق معنى الوحدة الوطنية الحقيقي. دامت مصر بأمن وسلام
একজন গর্বিত দেশপ্রেমী মিশরীয় তরুণ হিসেবে আমরা সত্যিকার নাগরিক হয়ে উঠার প্রতি বিশ্বাস করি এবং আমরা জানাতে চাই যে আমরা কোন সমস্যা তৈরিকারক বা খ্যাতি লোভী নই। আমরা নাগা হাম্মাদিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা দাঙ্গাবাজী করতে বা দাঙ্গা বাঁধাতে যাইনি। তারপরেও কর্তৃপক্ষ দাঙ্গা বাঁধানোর মিথ্যা অজুহাতে আমাদের গ্রেফতার করেছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দেশবাসী কপ্ট পরিবারকে সান্ত্বনা প্রদান করা এবং একই জাতীয়তাবাদকে শক্তিশালী করা। কর্তৃপক্ষ দাবি করছে আমরা সেই জাতীয়তাবাদকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি। আরো একবার আমরা এই বাস্তবতার কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে চাই যে আমাদের এই যাত্রা কোন রাজনৈতিক দল বা আন্দো্লনের পক্ষে ছিল না এবং যারা এ ধরনের দাবি করছে তারা আসলে মিথ্যা কথা বলছে। আমরা যারা মুসলিম এবং খ্রীস্টান, তারা একই আত্মার মানুষ, একই অভিযোগে অভিযুক্ত এবং একই রাষ্ট্রকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। আমরা এক এবং কেউ আমাদের কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীন কন্ঠকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। যা কিছুই ঘটুক না কেন তা আমাদের লক্ষ্যকে দমিয়ে রাখতে পারবে না এবং এটা নির্ভর করছে দেশের একতার অনুভূতির উপর… মিশর দীর্ঘজীবী হউক, নিরাপদে এবং শান্তিতে থাকুক।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .