বাংলা ব্লগ: হাইতির জন্য শোক প্রকাশ এবং এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া

এক ভয়ংকর ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের সাথে হাইতি লড়ছে, যা দেশটির অজস্র প্রাণ, সম্পত্তি এবং কাঠামোর ক্ষতি সাধন করেছে, সারা বিশ্বের সাথে বাংলার ব্লগাররাও হাইতির মানুষের জন্য শোক প্রকাশ করছে এবং তাদের দিকে দ্রুত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য অনুরোধ করছে।

বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের অন্যতম ব্লগ আমারব্লগের শিরোনামে লেখা রয়েছে:

হাইতির আর্ত মানবতার প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা

কি ভাবে আমরা তাদের সাহায্য করতে পারি? এই বিষয়টি নিয়ে অনেক বাংলা ব্লগের সভা ও পোস্টে এভাবে আলোচনা হয়েছে: (,,)।

একই সময় ব্লগার সালিম৬২৫১ নেটবাসীদের সতর্ক করে দিয়েছেন, যাতে তারা নেটে অর্থলোভী ও প্রতারক বা স্ক্যামারদের হাতে টাকা প্রদান না করে।

সচলায়তনের ব্লগার শিক্ষানবিশ সেখানে এক লেখা পোস্ট করেছে:

…কিছু সময়ের জন্য বিভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে একসাথে হাইতির পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা নয়, এখন কেবল তাদের বাঁচার অধিকারটুকু প্রতিষ্ঠা করার সময়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা মানুষগুলো যেন নিজেদেরকে একা মনে না করে…

এক আবেগপূর্ণ কবিতায় ব্লগার নাহারমনিকা হাইতির ভূমিকম্পের ফলে যে ভয়াবহ ধ্বংস সাধিত হয়েছে তার জন্য বেদনা প্রকাশ করেছেন

কবে হলো এ পৃথিবী মানুষের গ্রাম!
ক্ষ্যাপাটে মাটির রাগে রাজবাড়ি কাঁপে, দমবন্ধ স্কুল,
আবদ্ধ মায়ের হাতে শিশু ছিটকে গেলে
নিষিদ্ধ ত্বক ফেটে রক্ত আসে বাস্তুহারা সাপ।

একই সময় কিছু ব্লগার হাইতির ভূমিকম্পের বিপর্যয় এবং তার থেকে পাওয়া শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করছে।

পশ্চিম বাংলার বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের ব্লগ কফিহাউসের আড্ডাতে আদিত্য বিলাপ করছে:

হাইতি! তুমি আমাদেরকে খুব বেশি দুশ্চিন্তায় ফেললে…আমরা কিভাবে ঠেকিয়ে রাখবো আমাদের ব্যাঙের ছাতার মত একটির সঙ্গে লাগা ‍আরেকটি ভবন?…খুব দেরি হয়ে গেছে। এখন কারো দোহাই মানবে না এই প্রকৃতি। পৃথিবী তার কক্ষপথে ডানে কিংবা বামে..উত্তরে কিংবা দক্ষিণে সামান্য সরলেই বরফে ঢেকে যাবো আমরা কিংবা খরায় মরুভূমি হবে এই সবুজ জমিন…পৃথিবী তুমি একটু আড়মোড়া ছাড়লেই কুপোকাত আমাদের পনের কোটিসহ ঝুঁকি পূর্ণ শত কোটি মানুষ…কোথায় যাবো আমরা ?

ব্লগার শেখ নজরুল বিস্মিত, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কি প্রস্তুতি রয়েছে যাতে হাইতির মত বিপর্যয় এড়াতে পারে। তিনি এই ধরনের ঝুঁকি মোকাবেলার ক্ষেত্রে কিছু প্রস্তাব রাখছেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে ভূমিকম্পন প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় দ্রুত জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি বহুতলভবন ডিজাইন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা অবশ্য জরুরি। বিশেষ করে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা দরকার। ভূমিকম্পন প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা সম্ভব হলেও তার মাত্রা যেহেতু নির্ধারণ যায় না সে ক্ষেত্রে দুর্যোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা ও নিরাপদ বসবাস পদ্ধতি অবলম্বন করারও কোন বিকল্প নেই। তবে অবশ্যই ভূমিকম্পন পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার পূর্বপ্রস্তুতি থাকতেই হবে।

মুক্তাঙ্গনের ব্লগার ফারুক ওয়াসিফ এ ব্যাপারে একমত, তিনি লিখেছেন:

হাইতিতে যা ঘটেছে, তা ঢাকাতেও আচানক ঘটে যেতে পারে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের অবস্থান ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার মাঝে। ঢাকা তেহরানের পরে সবচেয়ে ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকা নগরী পৌরাণিক জতুগৃহ। ঢাকার আবাসন ও ভবনের গঠন হাইতির মতো না হলেও নাজুক…হাইতির মৃত্যু তাই খুব দূরে নয়, মৃত্যুপুরীর পাগলা ঘণ্টা ঢাকা শহর থেকেও শোনা যায়।

হাইতিতে সংঘটিত ভূমিকম্পের উপর আরো তথ্যের জন্য আমাদের বিশেষ পাতায় দেখুন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .