ফিলিপাইনস: মাগুইন্দানাও গণহত্যাকে স্মরণ

মাগুইন্দানাও গণহত্যা

মাগুইন্দানাও গণহত্যা

এক মাসের বেশী সময় কেটে গেছে গত নভেম্বর ২৩, ২০০৯ এর গণহত্যার পরে যেখানে মাগুইন্দানাওতে ৬০ জন নারী ও পুরুষ নিহত হন। তাদের উপর এই গণত্যা চালিয়েছে যুদ্ধবাজ গোত্র আম্পাতুয়ানের নিজস্ব বাহিনী যারা ফিলিপিনের প্রেসিডেন্ট গ্লোরিয়া- মাকাপাগাল আরোয়োর সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু মনে হচ্ছে এই বিভৎস ঘটনা এরই মধ্যে ফিলিপাইনসের মানুষের সমষ্টিগত কল্পনার অংশে পরিণত হয়েছে।

একটি কৌতুকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে যে আপনার পথে আসা বাধা আর সমস্যা নিয়ে আপনি কি করবেন। উত্তর হলো এগুলোকে চেপে যেতে শেখা যাতে এরা দূরে থাকে। এই কৌতুকটিতে অবশ্যই আম্পাতুয়ানদের অগভীর কবরে গণহত্যার মানুষদের কবর দেয়ার প্রতি ইঙ্গিত আছে। গণহত্যাকে আরও অনেকভাবে স্মরণ করা হচ্ছে।

মর্মস্পর্শী ছবি অনলাইনে প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে।
ফিলিপাইনসের ব্লগ ও সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো এই ভয়ঙ্কর ঘটনার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন

সনাতন ফিলিপিনো চলচ্চিত্রে রাষ্ট্র প্রযোজিত মানবাধিকার লঙ্ঘন আর রাজনৈতিক সংঘর্ষ সংক্রান্ত আলোচনায় ক্রিটিক আফটার ডার্ক মাগুইন্দানাও গণহত্যাকে চলচ্চিত্রের সাথে সম্পর্কিত করেছেন

ভিলেজ ইডিয়ট সাভান্ট বিশ্বাস করেন গণহত্যায় মৃতদের কেবলমাত্র শিকার হিসেবে দেখা উচিত না।

মাঙ্গুদাদাতুসরা জেনে শুনে নারী আর সাংবাদিকদের দেহরক্ষী বা অস্ত্র ছাড়া পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন- তাদের শান্তিপূর্ণ লক্ষ্যকে দেখানোর জন্য। আমরা জানি এর ফল কি হয়েছিল। তাই জন্য এদেরকে শিকার কিন্তু শহিদ হিসেবে দেখা উচিত।

একই সাথে, এই গণহত্যা বিক্ষোভ আর ঐতিহ্যবাহী কাজের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দ্যা ভেরা ফাইলস জানিয়েছে যে গত ডিসেম্বরে ফিলিপাইনস বিশ্ববিদ্যালয়ের দিলিমান ক্যাম্পাসের বাৎসরিক ল্যান্টার্ন প্যারেডে একটা প্রযোজনায় মাগুইদানো গণহত্যাকে দেখানো হয়েছে।

আইন কলেজ আর চরমপন্থী ছাত্র সংগঠন স্ট্যান্ড আপ তাদের বার্তাতে মাগুইন্দানাও গণহত্যার কথা বলেছেন। স্ট্যান্ড আপ প্রতীক দাঁড় করিয়েছে কাস্তে আর ভাঙ্গা গাড়ির, যে দুটি ৫৭ জন মানুষকে হত্যার প্রতীকে পরিণত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩০জন সাংবাদিক। এরা গত নভেম্বরের ২৩ তারিখে মাগুইন্দানাওতে যুদ্ধবাজ গোত্র আম্পাতুয়ান দ্বারা নিহত হন। আইন কলেজ জীবন্ত চিত্রপট তৈরি করেছেন গণহত্যার শিকারদের যার পিছনে বন্দুকধারী একজন যুদ্ধবাজ দাঁড়ানোর ম্যুরাল আছে।

ইতিমধ্যে, ফিলিপাইনসে অবস্থিত কবিতা ভিত্তিক পত্রিকা হাই চেয়ার, কবিতা জমার আবেদন করেছে তাদের ১২ তম সংস্করণের জন্য যেটা ‘মাগুইন্দানাও গণহত্যার মুল্যায়ন করবে’।

গত মাসে আরোয়ো সরকার মাগুইন্দানাও অঞ্চলে এক সপ্তাহের জন্য সামরিক শাসন জারি করেন যাতে তারা আম্পাতুয়ান আর তাদের নিজস্ব বাহিনীকে ধাওয়া করতে পারে। তবে, দেখার বিষয় যে অপরাধীদের বিচার হয় কিনা।

টনিও ক্রুজের মতে, সাম্প্রতিক সামরিক শাসন জারিকে আরোয়ো সরকার ব্যবহার করেছেন গণহত্যার দোষীদের আইনের পুরো কব্জা থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করতে।

যদি সামরিক আইনের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করা না হয়, ফিলিপিনোরা বেশ কিছু জিনিষ হারায়। প্রথমত আমরা সব থেকে খারাপ যুদ্ধবাজ পরিবারের যার প্রেসিডেন্ট আরোয়ার সহযোগীদের বিচার করার সুযোগ হারাবো যারা সাম্প্রতিক ইতিহাসের জঘন্য একটা গণহত্যাতে অংশগ্রহণ করেছেন।

এই আলোকে দ্যা ম্যান্টেলের মারিয়ানা গুর্তোভনিক মাগুইন্দানাও গণহত্যার ব্যাপারে মন্তব্য চেয়েছেন:

১) ফিলিপাইনসের মূল রাজনৈতিক দলরা কিভাবে গত নভেম্বরে মাগুইন্দানাও এ আম্পাতুয়ানদের গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন?

২) প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষের দিকে, প্রেসিডেন্ট আরোয়ো কি এই তদন্ত শেষ করে আম্পাতুয়ান্দের শাস্তি দেবেন? কেন?

৩) ফিলিপাইনসের সরকার এখন কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন আম্পাতুয়ান্দের মদদপুষ্ট মিলিশিয়াদের নিরস্ত্র করার ব্যাপারে যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ আছে?

৪) মাগুইন্দানাও এর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আম্পাতুয়ান্দের শাস্তি দান কি প্রভাব রাখতে পারে?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .