লেবানন হাম্মাস খাবার নিয়ে যুদ্ধে মনোযোগ দিয়েছে

ছবি মায়া জানকুলের সৌজন্যে (mayazankoul.wordpress.com)

ছবি মায়া জানকুলের সৌজন্যে (mayazankoul.wordpress.com)

৩০০ জনের মতো লেবাননী রাঁধুনী বৈরুতে একত্র হয়েছিলেন গতকাল হাম্মাস নামক খাদ্যের সব থেকে বড় প্লেট তৈরি করতে যাতে তারা এই জনপ্রিয় বুট (চানা) দিয়ে তৈরি খাবারের মালিকানা নিজেদের হাতে নিতে পারেন।

নতুন এই বিশ্ব রেকর্ড লেবাননের চলতি একটা প্রচারণার অংশ যেখানে এই দেশ ইজরায়েলে তৈরি করা বেশ কয়েকটা খাদ্যের উপরে তাদের দাবী জোরদার করতে পারেন – যেখানে হাম্মাসের মালিকানা ঝগড়ার একটি প্রধান বিষয়।

হাম্মাসের ইজরায়েলি আর লেবাননী প্রস্তুতকারকেরা কঠিন একটা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত আছেন বিশ্বের বাড়তে থাকা পছন্দ মধ্যপ্রাচ্যের এই মজার খাবারের বিষয়ে।

লেবাননী প্রস্তুতকারকেরা দাবি করছেন যে ইজরায়েল ‘লেবানীজ’ খাবার কেড়ে নিচ্ছে আর বিশ্বব্যাপী সেটাকে নিজের বলে দাবি করছে।

ইজরায়েলীরা সব থেকে বড় হামাসের প্লেটের জন্য আগের বিশ্ব রেকর্ড ধারী ছিলেন যার ফলে লেবানীজরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

সরকারীভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে লিপ্ত এই দুই দেশ মনে হচ্ছে হাম্মাসের ব্যাপারটা ঢুকিয়ে তাদের মতভেদের জায়গা বাড়াচ্ছে।

প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে একই খাবারের প্রস্তুত কারক অন্যান্য দেশ যেমন সিরিয়া, জর্ডান আর প্যালেস্টাইন খাবার যুদ্ধে নামবে?

লেবানীজ ব্লগাররা হামাসের ব্যাপারে তাদের মতামত জানিয়েছেন।

মায়া জানকুল এ নিয়ে মজার একটা কার্টুন (উপরে দ্রষ্টব্য) বানিয়ে এই যুদ্ধ নিয়ে কৌতুক করছেন:

গতকাল, লেবানন বিশ্ব রেকর্ড ভেঙ্গেছে সব থেকে বড় হাম্মাস প্লেটের। প্লেট তৈরির পরে আমি ওই এলাকা দিয়ে গিয়েছিলাম, আর এটাকে অত বড় মনে হয় নি… তাই আমি ভাবলাম কিছু দিন পরে আর একজন চ্যালেঞ্জ নেবে আমাদের রেকর্ড ভাঙ্গার আর তার পরে আরো। এর পরে? কাউকে তো এই বোকামি বন্ধ করা উচিত!

একই ধরনের মতামত জানানো হয় দ্যা সেডার ট্রি ব্লগে:

প্রথমে, আমি সব থেকে বড় কিব্বেহ প্লেটের কথা শুনেছিলাম, আর আমি ভেবেছিলাম ওইসব লেবাননী নারীরা কি মিষ্টি। এর পরে সব থেকে বড় হাম্মাস প্লেটে নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছে আর আমার মনে হল এটা অদ্ভুত হচ্ছে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মতামত সত্ত্বেও, লেবানীজরা তাদের হাম্মাসের ব্যাপারে খুব আবেগ তাড়িত আর তাই আমরা বিশ্ব গিনিস বুক অফ রেকর্ডে আছি সব থেকে বড় হাম্মাসের জন্য। আমি আশা করি সবাই এটা নিয়ে খুশি। আমরা কি এখন এগিয়ে যেতে পারি? না। আর একটা যুদ্ধ বাকি (আশা করা যায় এটা শেষ হবে) আর সেটা সব থেকে বড় টেবুল্লেহ প্লেটের জন্য, যা ২৫শে অক্টোবরের জন্য নির্ধারিত। ঠিক আছে, এখন আমার মনে হচ্ছে এই মানুষগুলোর মাথা কি খারাপ? দরকারটা কি? আমরা বইতে নাম ওঠাবো, তার পরে কি/ আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমি লেবানিজ হাম্মাস ভালবাসি, কিন্তু আমি আসলে বিশ্বাস করি আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যুদ্ধ করার মতো খাওয়ার আর বিশ্ব রেকর্ড ছাড়াও।

দুটো প্রশ্নের উত্তর জানতে পারলে ভালো হত- এক, আজকের অনুষ্ঠানের জন্য কত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে? দুই, সব হাম্মাস দিয়ে তারা কি করেছে?

আ ডায়মন্ডস আই ভিউ অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড ব্লগের এক পোস্টে অবাক (বা মজার) অনুভূতি পাওয়া গেছে এই অনুষ্ঠান নিয়ে:

আমি মানছি যে ইজরায়েলি বা ইজরায়েলি- ভাবধারীদের আমাদের হাম্মাস এর উচ্চারণ ঠিক করিয়ে দেয়া ‘খুমুস’ হিসাবে- (বেশী থুথু নিয়ে বলেন ভালো ফলের জন্য)- খুবই বিরক্তিকর। কিন্তু অদ্ভুত পরিমাণে একটা খাবার রান্না করে সেটাকে দাবি করা? আর এটার জন্য গর্বিত হওয়া? আর লজ্জাজনক একটা স্লোগান তৈরি করা- ইংরেজীতে, কিছু কম? হে ইশ্বর।

যুদ্ধে আর একটা দিক যোগ করে, অ্যা্ংরি আরব ব্লগের আসাদ আবু খালিল জানিয়েছেন যে হাম্মাসের শুরু লেবাননে না বরং প্যালেস্টাইনে:

“কারো অধিকার নেই হাম্মাস আর ফালাফেলকে তাদের জাতীয় খাবার বলার,” বলেছেন সিহাম বাগদাদি জুরুব, রামাল্লায় অবস্থিত রাঁধুনি আর আরবী ভাষার রান্নার বই ফিলিস্তিনের রান্নার লেখক। তিনি তর্ক করেছেন যে ফিলিস্তিনিরা চানাবুট থেকে প্রথম হাম্মাস তৈরি করেছিলেন, যেহেতু এটার অনেক ফসল হত, ফাভা বিজ থেকে না করে যেমন করা হয় মিশর বা সিরিয়াতে। কিছু খাবারে কপিরাইট আরোপ করা হিংসুক কাজ যা নিরাপত্তাহীনতা আর সাধারণ জ্ঞানের অভাব তুলে ধরে।“

লেবানন আর ইজরায়েলের মধ্যে হাম্মাস নিয়ে এই টানাটানি টুইটার ব্যবহারকারীদেরও নজরে পড়েছে:

এটা জাতীয় গৌরব বা হাসির খোরাক হিসেবে ধরা হলেও হাম্মাস নিয়ে সাম্প্রতিক যুদ্ধ লেবানন আর ইজরায়েলের মধ্যকার উত্তপ্ত সম্পর্কে ইন্ধন যোগাবে, এতে দ্বিমত নেই।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .