প্যালেস্টাইন: ভ্রমণকারীরা বলছেন যে ইজরায়েল বেআইনীভাবে প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করছে

একটি এন্ট্রি স্ট্যাম্প যাতে নির্দেশিত আছে যে প্যালেস্টাইনের অঞ্চলগুলোর মধ্যে অনুমতি সীমাবদ্ধ

একটি এন্ট্রি স্ট্যাম্প যাতে নির্দেশিত আছে যে প্যালেস্টাইনের অঞ্চলগুলোর মধ্যে অনুমতি সীমাবদ্ধ

প্যালেস্টাইনের পশ্চিম তীর ইজরায়েলের দখলে থাকা কালীন অবস্থায় যেসব ভ্রমণকারী ওখানে যেতে চান তাদের ভিসা আর যাতায়াতের সমস্ত কাগজপত্র নিতে হচ্ছে ইজরায়েলি কন্সুলেট থেকে। ভ্রমণকারীর ইচ্ছা অনুযায়ী এই কাগজ ভ্রমণকারীকে বাকি ইজরায়েলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অন্তত তাই দিত এতদিন।

এই গ্রীষ্মে, পশ্চিমে তীরে ভ্রমণকারীর অনেকের কাছ থেকে খবর এসেছে যে তাদের ভিসায় ইজরায়েলের বাকি অংশে যাওয়া যাচ্ছে না। টাইম ম্যাগাজিন অনুসারে, ‘নিরাপত্তা পদক্ষেপ’ হিসেবে এই নীতি ইজরায়েল জুন মাস থেকে কোন ঘোষণা ব্যাতিরেকেই গ্রহণ করেছে। বেশ কয়েকজন ব্লগার আর কর্মীর মত অনুসার এই নীতি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আর তা ইজরায়েলে বিদেশী ভ্রমণকারীদের বাধাহীন ভ্রমণের ব্যাপারে ১৯৯৫ সালের অসলো ২ চুক্তিরও পরিপন্থী।

ফিলিস্তিনি- আমেরিকান তৌফিক হাদ্দাদ, অনলাইন সংবাদপত্র দ্যা ফাস্টার টাইমসের জন্য লিখতে গিয়ে, এই অপরাধের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সম্ভাব্য তুলনা টেনে:

এই ভ্রমণের বাধা আসলে একটা দেশের জন্য ভিসা না দিয়ে একটা এলাকার জন্য ভিসা দেয়ার সামিল। এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ম্যানহাটানের কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত হারলেমের জন্য কেবলমাত্র কানেক্টিকাটের মাশান্টুকেট পিকোটে আদিবাসীদের বাসভূমে ভিসা দেয়ার সাথে।

বডি অন দ্যা লাইন ব্লগের মার্সি নিউম্যান, যিনি কিছুদিন আগে পর্যন্ত প্যালেস্টাইনের নাবলুসে বাস করতেন, দখলকৃত এলাকায় থাকার তার নিজের বিভীষিকার কথা বলেছেন:

আমি জানতাম যে শেষ পর্যন্ত আমি প্যালেস্টাইনে থাকতে পারবো না কারণ বিদেশীরা (ফিলিস্তিনি না, পড়ুন ইজরায়েলি ঔপনিবেশিক সন্ত্রাসী) এখানে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে আর যে সকল মানুষ প্যালেস্টাইনে ঢুকে তাদের জীবন নিয়ে তারা খেলা করতে পারে তারা ফিলিস্তিনি বাসিন্দা হোক বা না হোক। আমি অনেক দিন ধরে গল্প শুনেছি আর ইমেইল পেয়েছি- কিছু বন্ধু আর দোসরদের কাছ থেকে, কিছু একেবারে অজ্ঞাত লোকের কাছ থেকে যারা ঢুকতে অস্বীকৃতি প্রদানের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন। অথবা কোন কোন ক্ষেত্রে সীমিত প্রবেশাধিকার দেয়া হয়েছে মাত্র কিছু দিনের। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে আমার এক বন্ধু আম্মানে গিয়েছিল তার ভিসা বাড়াতে। সে রামাল্লাহতে থাকে আর তার গবেষণা শেষ করছে। সে ফিরে এসে জানাল যে তার হাতে অল্প কয়েক দিন আছে আর তাকে আবার ফিরে যেতে হবে। সে কেবল যে এক সপ্তাহ থাকতে পারছিল তাই না (সাধারণ তিন মাসের ভিসার বদলে যা বিদেশীরা পেয়ে থাকে বাদশা হুসেইন ব্রিজে), তাকে কেবলমাত্র পশ্চিম তীরের ভিসা দেয়া হয়েছে। এই প্রথম আমি এমন জিনিষ শুনলাম। কিন্তু দেখা গেল এটা দ্রুত বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে।

ক্যানাডিয় পত্রিকা দ্যা গ্লোব এন্ড মেইল বলেছে যে এই নীতি অন্যায় ভাবে আরব- আমেরিকান আর কানাডিয়দেরকে লক্ষ্য করেছে আর যাদের ‘আরব ঘেষা নাম আছে’। কানাডিয় ডগস ব্লগ একমত হয়ে লিখেছেন:

কানাডা একমাত্র দেশ না যেখানে ‘মজার নাম’ থাকা- যেমন আব্দেলরাজিক, মোহামুদ, খাদর বা আরার- আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। ইজরায়েলে যাওয়ার চেষ্টা করেন যদি আপনার এমন নাম থাকে।

কানাডিয় আর আমেরিকান নাগরিক যাদের ‘ফিলিস্তিনি শোনা যায় এমন নাম’ আছে তাদেরকে নিয়মিতভাবে বেন গুরিওন জাতীয় বিমানবন্দরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না, আর তাদেরকে জর্ডান থেকে পশ্চিম তীরের আলেনবাই স্থল সেতু ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু একবার তারা সেখানে গেলে তাদের পাসপোর্টে ‘কেবলমাত্র ফিলিস্তিনি অঞ্চল’ ছাপ দেয়া হয় আর ইজরায়েলে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয় না।

যে সকল আমেরিকান নাগরিকের সাথে এটা হয়েছে তারা একত্র হয়েছেন আর আমেরিকান কন্সুলেটে অভিযোগ করেছেন। ফিলিস্তিনি জোহরা বেকার, যিনি মিফতাহ এর জন্য লেখেন, অন্যদেরকেও এমন অভিযোগ করতে উৎসাহিত করছেন:

তাহলে আমেরিকান নাগরিক সকল, পরের বার আপনাদেরকে ইজরায়েলের কোন একটা সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয় বা কেবল পিএ ছাপ দেয়া হয়, ভালো পদক্ষেপের জন্য আমেরিকান কন্সুলেটে অভিযোগ করেন। কেবল কোন উত্তর আশা করবেন না।

যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাণী দিয়েছেন ইজরায়েলের ব্যবহারকে তিরস্কার করে, ভিসার এই বাধা বলবৎ রয়েছে। আরব আমেরিকা ইন্সটিটিউটের আমেরিকায় একটি স্থানীয় প্রচারণা উৎসাহিত করে আমেরিকার নাগরিকদের যাদেরকে আলেনবাই সেতুতে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয় নি যাতে তারা একটা তথ্যসূচক ফর্ম পূরণ করে আমেরিকার কর্তৃপক্ষ জমা দেয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .