মরোক্কো: কাসা নেগ্রা অস্কারে মরোক্কোর প্রতিনিধিত্ব করবে

 কাসা নেগ্রা চলচ্চিত্র মরোক্কোতে এক আলোড়ন তৈরি করেছে

কাসা নেগ্রা চলচ্চিত্র মরোক্কোতে এক আলোড়ন তৈরি করেছে

বিগত কয়েক বছর মরোক্কোর চলচ্চিত্র শিল্পের বেশ প্রসার ঘটেছে: অন্য দেশের ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রে (কিংডম অফ হ্যাভেন, ব্লাক হক ডাউন, বাবেল) উত্তর আফ্রিকান জাতির পটভূমি হিসেব নয়, নিজস্ব চলচ্চিত্র বিদেশে প্রভাব বিস্তার করছে।

মরোক্কো টাইমস ব্লগে জাকারিয়া রামাদি ঘোষণা দিয়েছে, সম্প্রতি মরোক্কোর ছবি কাসা নেগ্রা ২০১০ সালের একাডেমি পুরস্কার (অস্কার) প্রতিযোগিতায় মরোক্কোর প্রতিনিধিত্ব কারী ছবি হিসেবে মনোনীত হয়েছে। রামাদি ছবিটির প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন:

এটা এক সাধারণ ছবি, যা মরোক্কোর বাস্তবতার আয়নায় তার সকল বৈপরীত্য তুলে ধরে। এই ছবি মরোক্কোর সেই সব লোকদের উপর আলো ফেলে, যারা আরো ভালো এক বাস্তবতার দিকে তাকাতে চায়, কাসাব্লাঙ্কার প্রতিদিনের খিস্তিখেউড়ের উপর জীবন চলতে থাকে। এভাবে নুরুদ্দিন লাখহামারি যে কিনা একজন পরিচালক ও অভিনেতার ম্যানেজার দু'টি পেশায় বেশ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তিনি মরোক্কোর দর্শকদের অনুরোধ করেছেন, এই ছবিটি সিনেমা হলে গিয়ে দেখার জন্য, তারা যেন এর নকল কপি না কিনে। তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন, মরোক্কোর দর্শকদের ছবিটি আকর্ষণ করবে, কারণ ছবিটি দর্শকদের সচেতনতাকে তুলে এনেছে।

ব্লগার অগাহারাসকে ছবিটি তেমন আকর্ষণ করেনি, সে লিখেছে:

J’aime pas trop casser, de démystifier les œuvres des autres, artistique dans l’âme je préfère toujours laisser le public juger de lui même. Pour cette fois je vais faire l’exception et dire que ce film n’est rien de marocain sauf bien sûr les lieux. La technique de mise en œuvre est ce que je trouve très particulière pour un film marocain, c’est le point qui m’a touché le plus dans Casa Negra. Sur le long de son streaming vidéo et surtout audio : Une jeunesse marocaine qui sollicite tous les moyens pour réussir, chose que je juge être le lot de toutes les sociétés qui connaissent des changements dans la perception de l’individualisme primaire. Le film présente une Casablanca noirci par les mots les plus déplacés, des scènes de violences et des situations qui ne font pas dans le lot majoritaire de la vie d’un casablancais !! C’est pas parce-que une bande de cons vivent en marge qu’il faut généraliser le vécu a l’ensemble de marocains.

আমি অন্য কারো শিল্প নষ্ট/ধ্বংস করা অথবা প্রকাশ/ উন্মোচন করা পছন্দ করি না। আমার ভিতর যে শিল্পী সত্তা রয়েছে, তার মাধ্যমে বলছি, আমি সব সময় জনতার নিজস্ব বিচারের উপর শিল্পকে ছেড়ে দিই, এইবার আমি এক আশা নিয়ে গিয়েছিলাম, যে আমি এক ব্যতিক্রম ছবি দেখব, কিন্তু বলতে হচ্ছে, এই ছবিটিতে মরোক্কোর কিছুই নেই, কেবল ছবির শুটিং করা স্থানগুলো ছাড়া। যে ভাবে এই ছবি বানানো হয়েছে / অথবা এই ছবির বানানোর পদ্ধতি কাসা নেগ্রার পটভুমিতে তৈরি, এতে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে -তাতে হওয়া উচিত ছিল এটা একটা মরোক্কোর ছবি-আমার কাছে তা অদ্ভুত বলে মনে হয়। এই ছবি, (অথবা লেখকের নিজের শব্দে, পুরো ভিডিও এবং অডিও) দেখাচ্ছে যে মরোক্কোর এক তরুণ, সে যে কোন ভাবেই হোক সাফল্য পেতে চায়। ছবিতে এমন কিছু রয়েছে প্রচুর/ ঘটনাটি, যেমন সমাজের সকল অভিজ্ঞতা [সামাজিক] পাল্টে গেছে [যেখানে তার চেহারা] “প্রাথমিক ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতায় রূপ নিয়েছে, হয়তো তার নিজস্ব উপলব্ধি/অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবে।
এই চলচ্চিত্র, বর্ণনা করে/ দেখায় কাসাব্লাঙ্কা এক অশ্লীল/সঠিক নয়, এমন ভাষার অন্ধকারে ডুবে আছে, সংঘর্ষ ময় দৃশ্য এবং এমন সব পরিস্থিতি, যা শহরের বেশীর ভাগ বাসিন্দাদের কাছে অপরিচিত। কয়েকজন আহাম্মকের সমাজের প্রান্তে বাস করার মানে এই নয় যে, তাদের অভিজ্ঞতা/ জীবনধারণ মরোক্কোর সমাজের বাকি দের জীবন যাপন।

এই ছবিতে রয়েছে, দুই স্বল্প সময়ের জন্য চোরে পরিণত হওয়া ব্যক্তির গল্প, যারা কাসাব্লাঙ্কা শহর ছেড়ে পালাতে চাইছে। পরিচালক নুরউদ্দিন লাখমারির দ্বিতীয় ছবি ইতোমধ্যে বেশ কিছু চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে।

হাসান মাসিকি, মরোক্কো আমেরিকান বোর্ড “ভিউপয়েন্ট” এ ব্লগ করেন। তিনি এই ছবির একটি পর্যালোচনা করেছেন যাতে একে তিনি “সত্যিকারের রত্ন” বলে অভিহিত করেছেন এবং লিখেছেন :

এই ছবিটি মরোক্কোর কয়েকজন তরুণের বাস্তব ধর্মী জীবন ছবি এঁকেছে। তারা সমাজের প্রান্তিক অবস্থানে বাস করে। তবে তাদের এই বসবাস নিজেদের বেছে নেবার কারণে নয়, ঘটনাক্রমে তারা এই পরিস্থিতিতে পরে যায়, যা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। চলচ্চিত্রে দুই প্রধান চরিত্র, আদিল ও করিম। তারা উভয়ে অসাধারণ অভিনয় করেছে। তারা তাদের অভিনয়ে, মরোক্কোর তরুণদের উদ্দীপনা, পতন এবং আশাকে ফুটিয়ে তুলেছে, দেশটির হতাশা ও আশাহীন অবস্থার মাঝে। মরোক্কোর প্রতিদিনের জীবনে যে সমস্ত বিতর্কিত সামাজিক বিষয় সমাজের অংশ জুড়ে থাকে কাসা নেগ্রা সেই সমস্ত বিষয়গুলো তুলে এনেছে। যা এখনো রক্ষণশীল ব্যবস্থায় সততা সাথে ও খোলামেলা ভাবে আলোচনা হয় না। এখানে মদ্য পান এবং নেশা করা ও ঘরের ভিতর যে অত্যাচার চলে সেই বিষয় থেকে নিয়ে, সামাজিক শোষণ তুলে ধরা হয়েছে, নুরউদ্দিন সামাজিক অসুস্থতা গুলো ছবিতে প্রদর্শন করতে লজ্জা বোধ করেন নি। তিনি বিষয় গুলোকে এক শৈল্পিক উপায়ে এবং ক্যামেরার পটভূমিতে অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

এলা এল আলাউয়ু মরোক্কোর ছবি নিয়ে ব্লগ করেন। তিনি মে মাসে এই ছবির পর্যালোচনা করেছেন। এক খোলা চিঠির আকারে তিনি ছবির পরিচালককে লিখেছেন:

আমি একটা বিষয় জানি যে মরোক্কোর দর্শকরা নিজেদের ঘৃণা করে। কারণ আপনার ছবিতে আপনি খিস্তি খেউড়ের স্টাইলে ভাষা প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি, আপনি এই স্টাইলে ভাষা প্রয়োগের এক অগ্র পথিক, কারণ আমরা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছর ধরে মরোক্কোর চলচ্চিত্রকে দেখেছি। বাস্তব ধর্মী ইউরোপ ও আমেরিকান সিনেমায় একই ভাবে খিস্তি ব্যবহার করা হয়, যা কিনা রাস্তার ভাষা। মরোক্কোর চলচ্চিত্রে ধাপে ধাপে এই ভাষা ব্যবহার করা শুরু করবে। এটা এমন এক বিষয়, যা আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, শীঘ্রই এই ঘটনা আরো ঘটতে যাচ্ছে। কাজেই চল কাসা নেগ্রা দেখতে যাই এবং এবং আমাদের নিজেদের দেখি এই সুন্দর গল্পের মধ্য দিয়ে, যার লেখক নুরুউদ্দিন লাখহামারি।

মন্তব্যকারী মোহামেদ জাফজাফ একমত, তিনি লিখেছেন:

আমি আপনার মত এবং এই ছবি সম্বন্ধে আপনার মূল্যায়নের সাথে একমত। যদি এটা কিছু দিক থেকে স্থূল, আমরা মরোক্কোর লোকেরা এই ধরনের শৈল্পিক ধরনের সাথে পরিচিত নই। বাস্তবতা বিশেষ করে ভাষা ব্যবহারের উপর নির্ভর করা, যা চলচ্চিত্রের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল, আমিও মনে করি এই ছবি মানবীয় শর্তের কথা বলে, যা কিনা কেবল মরোক্কোর লোকদের একার জীবন নয়, বিশ্বের কথা বলে… কিছু চিন্তার কথা।

কাসা নেগ্রা চলচ্চিত্রটি এখনও ইংরেজী লেখা অনুবাদ বা সাবটাইটেল সহ এখন মুক্তি পায় নি। এই ছবির একটা নিজস্ব ব্লগ [ফরাসী ভাষায়], ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট রয়েছে। মরোক্কোর চলচ্চিত্র শিল্প সম্বন্ধে আরো জানার জন্য সান্ড্রা গাইল কার্টারের নতুন বই: হোয়াট মরোক্কোন সিনেমা?: এ হিস্টরিকাল এন্ড ক্রিটিকাল স্টাডি পড়তে পারেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .