ইকুয়েডর: ২০০ বছর আগে তোলা স্বাধীনতার জন্য আওয়াজ

১৮০৯ সালের ৯ই আগস্ট কুইটো শহরের একদল লোক “স্প্যানিশ-আমেরিকানদের প্রথম আওয়াজ” নামে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। কুইটো বর্তমানে ইকুয়েডরের রাজধানী। তাদের এই আওয়াজ ছিল স্পেনের রাজার শাসনের বিপক্ষে এই অঞ্চলের স্বাধীনতার জন্য তোলা প্রথম কোন কণ্ঠস্বর। সে সময় পুরো দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তৃত অঞ্চলের অনেকেই স্বাধীনতার দাবী তুললেও সেটাই ছিল স্বাধীনতার দাবীতে প্রথম আন্দোলন। ১৮২২ সালের আগে ইকুয়েডর পুরোপুরি স্বাধীন হতে পারে নি, কিন্তু এই স্বাধীনতা আন্দোলন এক সময় ইকুয়েডরের স্বাধীনতার যুদ্ধে রূপ নেয়। এ বছর ইকুয়েডর তার স্বাধীনতা আন্দোলনের দুশ বছর উদযাপন করছে, সেই ঘটনার স্মৃতিতে, যা এখন থেকে ২০০ বছর আগে ঘটেছিল।

ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোর ছবি, তুলেছেন এর মার্সিও রামালহো এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত।

ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোর ছবি, তুলেছেন এর মার্সিও রামালহো এবং ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সের আওতায় ব্যবহৃত।

যারা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের একজন ছিলেন ইউজেনিও এসপাজো, তিনি তার প্রভাব দিয়ে স্বাধীন স্প্যানিশ আমেরিকাকে এক ধাপ এগিয়ে নেবার চেষ্টা করেন। তার স্বপ্ন সফল হয় ১৮০৯ সালের ১০ই আগস্টের শুরুর মুহূর্তেই। বেলেন প্রোয়ানো, যিনি টেম্পাস পারা ডেবাটির [স্প্যানিশ ভাষায়]-এ লেখেন, তিনি স্বাধীনতার মুহূর্তে এসপাজোর ভূমিকার কথা লিখছেন:

Las ideas de Espejo, fueron el punto de partida de una nueva concepción de lo que hasta ese entonces se entendía por patria, afirma el historiador Jorge Núñez, autor del libro Eugenio Espejo y el pensamiento precursor de la independencia . “Se empieza a entender por patria a Quito, y ya no a España. Nace una toma de consciencia sobre lo que será después la nación ecuatoriana”.

এসপাজো এক নতুন চিন্তার কথা নির্দেশ করেন, আমরা বুঝতে পারি, তা ছিল আমাদের জন্য এক নতুন মাতৃভূমি, একথা বলেন ইতিহাসবিদ জর্জ নুনেজ। তিনি একটি বই লিখেন যার নাম, ইউজেনইও এসপাজো এন্ড দি থটস অফ প্রিকার্সর টু ইনডিপেন্ডেন্স (ইউজেনইও এসপাজো ও স্বাধীনতার চিন্তাশীল অগ্রদূত)। এক স্বাধীন মাতৃভূমির চিন্তা ও স্পেনের মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকার জন্য তারা কুইটোকে বেছে নেন। এর ফলে এক সচেতনতার জন্ম নেয়। ফলে তা দ্রুত ইকুয়েডর নামের এক জাতি গঠন করে”।

৯ই আগস্টের রাতে, পুরো কুইটো শহরে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। সেদিন অনেকে “প্রতিরোধ কক্ষে” চলে যায়। এর মালিক ছিলেন ডোনা ম্যানুয়েলা কানিজারেস। পরদিন সকালে সে সময়কার কুইটো শহরের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি এক সাথে জড়ো হন এবং স্বাধীন সরকার গঠন করেন এবং একই সাথে সেই সরকারের কর্মকর্তাদের নির্বাচিত করেন। পরে ১৮০৯ সালের ১৬ই আগস্টে এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং কুইটোর স্বাধীনতার দলিলে স্বাক্ষর করা হয়।

প্রথম স্বাধীনতার আওয়াজ তোলার জন্য কুইটো শহরকে “লুজ দে আমেরিকা” বা (আমেরিকার আলো) উপাধি দেওয়া হয় এবং এই শহর সে সময় অন্যান্য স্বাধীনতা বুভুক্ষু জাতির প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। কুইটো বীজ বপন করে এবং অবশিষ্ট আমেরিকা তা অনুসরণ করে। ব্লগ ব্রিগাডা কুইটজালকোয়াল্ট [স্প্যানিশ ভাষায়] এখানে বলিভিয়ার দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করেছে। এ বছর বলিভিয়া নিজেদের স্বাধীনতা আন্দোলনের দ্বিশত বার্ষিকী উদযাপন করছে

কুইটোর উদাহরণ অনুসরণ করে, কারাকাস স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু করে ১৮১০ সালের ১৮ই এপ্রিল। বুয়েনোস আইয়ার্সে স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয় ২৫ই মে, বোগোটোতে ২০শে জুলাই, মেক্সিকোতে ১৬ই সেপ্টেম্বর, সান্তিয়াগো দে চিলিতে শুরু হয় ১৮ই মে। পুরো আমেরিকা মহাদেশে স্বাধীনতার আগুন জ্বলে উঠে, যার স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছিল কুইটোর লোকজনের কাছ থেকে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .