মায়ানমার: মান্দালয় শহর প্রতিষ্ঠার ১৫০ বছর পূর্তি

মায়ানমারএর শেষ রাজকীয় রাজধানী হচ্ছে মান্দালয়। এই শহর তার ১৫০ তম বার্ষিকী পালন করেছে ১৪ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী উৎসব দিয়ে।

মান্দা

মান্দালয়ের ১৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন

মান্দালয় ডিভিশনের রাজধানী হচ্ছে মান্দালয়, আর এটি মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।

ইয়ে লুইন ও তার ব্লগে লিখেছেন মান্ডালে প্রতিষ্ঠার ইতিহাস:

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ধনী মান্দালয়, যা ইয়াদানাবোন নামেও পরিচিত, ঐতিহাসিকভাবে রাজা মিন্দোন নির্মান করেন ১৮৫৭ সালে, যা মায়ানমারের শেষ রাজকীয় রাজধানী হিসাবে এখনও দাড়িয়ে আছে।

১৮৫৭ এ মান্দালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি ফাঁকা এলাকায়, কারন, প্রাচীন এক ভবিষ্যৎবাণী অনুসারে, ঠিক ওই জায়গায় একটা শহর গড়ে উঠবে বৌদ্ধ ধর্মের ২৪০০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে।

রাজা মিন্দোন ভবিষ্যৎবাণী পূরণের সিদ্ধান্ত নেন আর তার শাসন আমলে আমারাপুরা রাজ্যে ১৩ জানুয়ারী ১৮৫৭ খ্রীষ্টাব্দে তিনি রাজ আদেশ জারী করেন নতুন এক রাজ্য প্রতিষ্ঠার। সিংহাসনে আরোহনের উৎসব পালিত হয় জুলাই ১৮৫৮ সালে। রাজকীয় শহর আর রাজ্যের সীমানা নির্ধারন করা হয়। পুরো রাজকীয় শহরের নাম হয় লে কুন আং মাই (“চার দ্বীপের উপরের বিজয়ী দেশ”) আর রাজপ্রাসাদের নাম মাই নান সান কোয়া (রাজকীয় পান্না রাজপ্রাসাদ)। রাজ্যের নাম ছিল ইয়াদানাবোন রাজ্য, আর এর সাথে অন্য নাম রত্নপুরা যার মানে “রত্নখচিত স্থান”। পরে রাজপ্রাসাদ থেকে ২.৫ কিমি উত্তর পূর্বে অবস্থিত মান্দালয় পাহাড় অনুসারে এর নামকরন হয় মান্দালয়, আর আজ পর্যন্ত ওই নাম আছে। ‘মান্দালয়ের’ নাম পালির ‘মান্ডালা’ শব্দ থেকে এসেছে, যার মানে ’সমতল ভূমি’ আর আর একটা পালি শব্দ ‘মান্ডারে’ ও হতে পারে এর উৎস যার মানে ‘পূন্য ভূমি”।

এই উৎসব অনেক দর্শনার্থী, চিত্রগ্রাহক আর ব্লগারদের আকৃষ্ট করেছে। নি মিন সান নামে একজন চিত্রগ্রাহক/ ব্লগার তার ব্লগে লিখেছেন:

মিঙ্গালার সেতু থেকে প্যারেড শুরু হবে (৭৩ নং রাস্তা) আর ২৬ নং সড়ক দিয়ে যাবে, এমসিডিসি সিটি হল (মান্দালয় শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) দ্বারা নির্মিত প্যাভিলিয়নকে পার করে সেডোনা হোটেলের কোনা পর্যন্ত। এর পরে তারা ফিরে সিটি হল পর্যন্ত আসবে। আমরা যখন মিংগালার সেতুর কাছে পৌঁছালাম, সেখানে অনেক চিত্রগ্রাহক ছিল। হয়তো শত শত। আমরা এদের সাথে যোগ দেই ও ছবি তুলি, আর তারাও আমাদের ছবি নেয়। এদের অনেকে সাদা শার্ট আর লুঙ্গি পরেছিল, তাই তাদেরকে আমরা যখন দূর থেকে দেখি, সবাই ছিল সাদা। আমি যখন আমার ক্যামেরাকে ছুঁই, আমি নিজেকে থামাতে পারিনি ( ছবি নেয়া থেকে)…

মেঘলা, মান্ডালের আর একজন ব্লগার লিখেছেন:

… (অতীতে) ১০০ তম বার্ষিকি উদযাপন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের উৎসব হিসাবে পালিত হয়, কিন্তু এই ১৫০ তম বার্ষিকী কেবলমাত্র জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়। আমি জানতাম না অনুষ্ঠান কখন শুরু হবে, তাই আমি কিছু সাংবাদিককে জিজ্ঞাসা করি, আর তারা আমাকে বলে সকাল ৮টায়। তাই আমি কাজ থেকে অর্ধ দিবস ছুটি নেই, আর কিছু ছবি নেয়ার জন্য সেখানে যাই। অনুষ্ঠানের জন্য, প্রাচীন কালের মতই আসল ঘোড়া ব্যবহার করা হয়। কিন্তু হাতিগুলো কায়ুক-সে হাতি (পাপেট হাতি – ভিতরে মানুষ থাকে এগুলো নাড়াবার জন্য)। প্রথমে তারা আসল হাতি ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু তারা চায় নি ভীড় দেখে যাতে হাতিগুলো ভয় পায় আর দৌড় দেয়, তাই তারা কেবলমাত্র পাপেট হাতি ব্যবহার করে।

নি মিং সান আর মেঘলার উক্তি যা এই পোস্টে ব্যবহার করা হয়েছে, ভাষান্তর করা হয়েছে লেখক দ্বারা। মূল উদ্ধৃতি বার্মিজ ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .