ইরান: “বর্ণীল কারাবন্দী”- এর মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে

Delara Darabi

দেলারা দারাবি

গত শুক্রবার (১লা মে, ২০০৯) সকালে ইরানি কর্তৃপক্ষ দেলারা দারাবিকে দেওয়া মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করে। ২৩ বছরের ইরানি মহিলা দেলারা দারবির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে সে খুন করছে। যখন সে খুন করে তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর, সে তা স্বীকার করে। এরপর তাকে রাস্ত সেন্ট্রাল জেলে কয়েক বছর রাখা হয়। সেখানে দেলারা “বর্ণীল কারাবন্দী” হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তার এই পরিচিতির কারন তার বন্দী জীবনে আঁকা ছবি, যা অনেকে পছন্দ করেছিল।

আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে ঘোষণা দিয়েছে, ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ১৯ এপ্রিল এই মৃত্যুদন্ডাদেশ দুই মাস স্থগিত করা সত্বেও তা কার্যকর করা হয়।

বেশ কিছু ব্লগার, যাদের মধ্যে কিছু আইনজীবিও রয়েছে, দেলারার মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করায় তারা তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেছে। তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় অপরাধ করা ব্যাক্তিকে মৃত্যুদন্ড দেবার জন্য ইরানি বিচার বিভাগীয় পদ্ধতির সমালোচনা করেছে।

মোহাম্মদ মোস্তাফাই একজন আইনজীবি যিনি খুব কাছ থেকে দেলারার বিচার প্রক্রিয়া দেখেছেন। তিনি বলেছেন (ফার্সী ভাষায়)

قاضی جاوید نیا حکم اعدام دلارا را صادر کرد. پس از مدتی دادستان رشت شد. از زمانی که او متصدی این پست گردید. یک نفر در این شهر سنگسار شد و امروز دلارا دارابی جانش از بدنش جدا شد.
ولی چرا؟
عده ای می گویند دلارا مقصر است. عده ای می گویند پدرش مقصر است و عده ای می گویند وکلیش؟ من می گویم دستگاه قضایی. چرا با وجودی که بسیاری از کشورهای دنیا اعدام اطفال زیر ۱۸ سال را منع کرده اند دستگاه قضایی بر اعدام اطفال پافشاری می کند؟
এই মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক জাভিদ নেয়া। তিনি রাস্ত জেলের প্রধান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবার পরপরই এই আদেশ জারি করেন। তিনি একজনকে বিষ দিতে আদেশ করেন এবং আজ (শুক্রবার) দেলারার আত্মা তার শরীর ছেড়ে চলে যায়। কেউ বলছে দেলারা দোষী। কেউ বলছে এ ব্যাপারে আসল দোষী তার পিতা এবং অন্যেরা বলছে দোষ তার আইনজীবির। কিন্তু আমি বলি দোষ ইরানের বিচার ব্যবস্থার। কিভাবে ইরানের বিচার ব্যবস্থা একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে মৃত্যুদন্ড দিতে উৎসাহ প্রদান করে, যেখানে বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশেই ১৮ বছরের নীচে যে কোন শিশুর মৃত্যুদন্ড বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে ?

মোস্তফাই ইরানের বেশ কয়েকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বন্দীর হয়ে আইনী লড়াই লড়েছেন। তিনি আরো বলছেন, কর্তৃপক্ষ তার আইনজীবি এবং পরিবার কাউকে না জানিয়েই দেলারার মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করে, কারন তারা জানতো সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ তাকে সমর্থন করে।

এই বিচার নিয়ে যারা সচেতন মোস্তফাই হয়তো তাদের সংখ্যা বেশী মনে করেছেন, কিন্তু ভার্চুয়াল বা ইন্টারনেট ও বাস্তব উভয় জগতে দেলারার অনেক সমর্থক ছিল।

লন্ডনের এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কিছুদিন আগে লল্ডনের ইরানী দুতবাসের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করছিল, যাতে দেলারার মৃত্যুদন্ড বন্ধ করা যায়।

ভার্চুয়াল বা ইন্টারনেটের টুইটার ফেসবুক দেলারাকে বাঁচাও প্রচারণা চালু করেছিল।

বালুচ বলছেন, ইরান নামের রাষ্ট্রটি “উন্মত্ততা দেখালো এবং মানবকে হত্যা (কেটে) করলো”। এই ব্লগার প্রশ্ন করছে রাষ্ট্রপতি পদে যারা প্রার্থী তাদের এই বিষয়ে মতামত কি।

সাসসান আগাহি (ফার্সী ভাষায়) দেলারার জন্য একটি কবিতা উৎসর্গ করছেন যার শিরোনাম “হয়তো আগামীকাল”। লেখিকা বলছেন এই গল্পটি লেখা সাধ্যের বাইরে এবং একে প্রকাশ করার জন্য কবিতার প্রয়োজন। তার কবিতার একটি অংশ এরকম,

شاید همین فردا
و باز همین فردا، پس فردا
فرشته‌ی مرگ سیراب نشده،
آغوش تازه‌ای می‌خواهد؛
شاید همین تو را.
হয়তো আগামীকাল অথবা আগামীকালের পরেরদিন
অতৃপ্ত মৃত্যুর ফেরেশতা নতুন কোন জীবন হাতে নিতে চাইবে
সেটা হয়তো তুমি।

আরদাভান লিখছে (ফার্সী ভাষায়) অবশেষে আজ দেলারা কোন দু:স্বপ্ন ছাড়াই ঘুমাতে পারবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .