আফঘানিস্তান: রাজনৈতিক যান্ত্রিকতা

আফঘানিস্তানের তথাকথিত ‘ধর্ষণ আইন’ একদিকে যেমন পশ্চিমা প্রেসকে সরব করেছে, অভ্যন্তরীণভাবেও এই ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে। মূলধারার মিডিয়া প্রশংসনীয়ভাবে মহিলাদের মিছিল দেখিয়েছে, কিন্তু জাতিগত সংঘাতের ব্যাপারও চিন্তা করতে হচ্ছে।

রেগিস্তান.নেট ইতিমধ্যে এইসব সমস্যা কিছুটা তুলে ধরেছিল- বিশেষ করে, নারীদের অধিকারকে খর্ব করে যে আইন তা আসলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, শিয়াদের উদ্দেশ্যে করা। কিন্তু হাজারিস্থান টাইমস অনুসারে সমস্যা গুরুতর, যার ফলে সংসদের হাজারা সদস্যদের নিয়ে একটা কনফারেন্স ডাকা হচ্ছে। হাজারারা হচ্ছে শিয়া সংখ্যালঘুদের মধ্যে সব থেকে বেশী সংখ্যায় আছে আফঘানিস্থানে। তাদের মন্তব্যের লক্ষ্য ছিল শেখ আসিফ মোহসিনি কান্ধারী, একজন ধর্মীয় নেতা যার ইরানের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে বলে তারা দাবি করে:

একদল হাজারা সাংসদ শেখ আসিফ মোহসিনি কান্ধারীকে সমালোচনা করে, বলেছেন যে পরিবার আইনকে সংশোধন করা দরকার এবং উচিত। শুক্রবার কাবুলে একটা প্রেস কনফারেন্সে কথা বলার সময়ে, কিছু হাজারা সাংসদ বলেছেন যে একজন মোল্লাহ স্থির করতে পারেন না যে আইন কি হবে।

আফঘানিস্থানের রাজনৈতিক অঙ্গনে এটা একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। আগাস্টের নির্বাচন যতো কাছে আসছে, চারিদিকে গুজব রটছে যে কে প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এর জন্য বাস্তবসম্মত চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমেরিকার বিশ্লেষকরা একমত যে বিরোধীরা বেশী বিভক্ত কারজাইএর পুনর্নিবাচিত হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবার জন্য, কিন্তু জেংনামেহ তর্ক করেছেন যে এটা পরিকল্পিত: তিনি তর্ক করেছেন যে পশ্চিমা দেশগুলো একজন পশতুন- কেন্দ্রিক মডেল বাছাই করেছে।

২০০১ থেকে কারজাই আর তাকে ঘিরে থাকা পশতুন গোত্রীয়- জাতীয়তাবাদী, ‘মৌলিক”, “চরমপন্থী” বা ”যুদ্ধবাজ” নাম ব্যবহার করেছে পশতুন না এমন লোকদেরকে সরকার থেকে বাদ দেওয়ার জন্য।

তাই জন্য হিজাব-এ- ওয়াদাত আর জুনবিশ- এ- মিল্লির মধ্যে সম্ভাব্য জোটের খবর এতো গুরুত্বপূর্ণ: এটি বেশ বড় জোট তৈরি করতে পারে কারজাইএর মূলত পশতুন সমর্থকদের ভোটে পরাজিত করতে।

শনিবার কাবুলে একটা প্রেস কনফারেন্সে, দুই দলের ১৮জন নেতা বলেন যে তারা পরের সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করবেন তাদের সমর্থন কোন প্রার্থীর জন্য। হিজাব-এ-ওয়াদাতের প্রধান, হাজি মোহাম্মাদ মুহাকিক বলেছেন, ”পারষ্পরিক বৃহৎ সমঝোতা আর সহযোগিতার ভিত্তিতে, দুই দল একত্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” দুই দলের কারো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিজ নিজ দল থেকে প্রার্থী থাকবে না, কিন্তু সম্মিলিতভাবে কোন এক প্রার্থীকে সমর্থন করবে। এখানে বলা যায় যে জুনবিশের নেতা, জেনারেল দোস্তুম তুরষ্কে আছেন বিগত কয়েক মাস ধরে। বলা হচ্ছে তিনি স্ব-নির্বাসনে আছেন।

উপরের ব্যাপারের সাথে সম্পৃক্ত হতে, ওয়াদাত আসলে একটা শিয়া হাজারি দল আর গৃহযুদ্ধের সময়ে মুজাহিদিন দল ছিল যারা প্রথমে সোভিয়েতদের আর পরে তালিবানদের প্রতিরোধ করেছিল।

আফগানিস্থানের সামনে যে সব রাজনৈতিক বিষয় আছে তাতে মনে হয় যে নির্বাচন কাছে আসার সাথে সাথে এগুলো বাড়বে: এমনকি সরকারী কর্মকর্তা, যারা আগে আমেরিকান নীতি নিয়ে প্রশ্ন করতে দ্বিধান্বিত ছিলেন, এখন মিলিটারী প্রচারণা ‘ঠিক” করার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জনসম্মুখে বলেন। এটা কি করে জাতীয় আর স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করবে তা পরিষ্কার না। কিন্তু এটা নিরাপদ বাজী যে আগস্টের ২০ তারিখ এগিয়ে আসলে এইসব বিতর্ক আরো জোরালো হবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .