মরোক্কো: কাহিনী এক, নাম ভিন্ন ভিন্ন



[আলি আনুজলা এবং জামাল বুদুমা উভয়কে ২ লাখ মরোক্কান ডিনার (আমেরিকান ডলার তেইশ হাজার আটশ) জরিমানা করা হয়েছে]

বাহ্যিক উন্নয়ন সত্বেও, গত কয়েক বছরে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে মরোক্কোর সংবাদপত্র বেশ কয়েকটি বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে। সম্প্রতি মরোক্কোর সংবাদপত্র আল-জারিদা আল-ওয়ালার ম্যানেজিং এডিটর বা সম্পাদক আলি আনুজলা এবং পাবলিশিং এডিটর বা প্রকাশক সম্পাদক জামাল বুদুমাকে দুমাসের বিলম্বিত কারাদন্ড এবং ২ লাখ মরোক্কান ডলার (প্রায় ২৩,৮০০ আমেরিকান ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। মরোক্কোর বিচার বিভাগের নামে অপবাদ দেওয়া ও অপমান করার জন্য তাদের এই শাস্তি প্রদান করা হয়। আনsজলা বলেছেন, “কোর্টের আদেশ তাদের কাছে আসা মাত্রই তাদের উকিল এই আদেশের বিরুদ্ধে দরখাস্ত বা আপীল করবে”।

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট ( সিপিজে)’ নামের প্রতিষ্ঠানের মতে:

একই প্রবন্ধের বিরুদ্ধে আইনের এই ধারা তিনমাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার প্রয়োগ হলো। আর এই বিষয়টি ঘটলো খালিল হাশেমি ইদ্রিসির দ্বারা। ইদ্রিসি ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত ‘অজুদহুই লো মরোক্কো’ বা ‘আজকের মরোক্কোর’ সম্পাদক। তিনি জানুয়ারী মাসে আল-জারিদা আল-ওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ইদ্রিসি এর আগে একই আইনে আনুজলার বিরদ্ধে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম মামলা দায়ের করেছিলেন। সে সময় আল-জারিদা আল-ওয়ালা পত্রিকাটি একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এই সংবাদে জানা যায় হাসান আল ইয়াকুবি একজন ট্রাফিক পুলিশকে গুলি করে আহত করেছে। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ তাকে থামতে বলেছিল, এটাই ইয়াকুবির গুলি করার কারন। হাসান আল- ইয়াকুবি মরোক্কোর বাদশাহ ষষ্ঠ মোহাম্মদের খালাতো ভাই ।

সিপিজের মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর অফ্রিকার প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর বা অনুষ্ঠানসুচী সমন্বয়ক মোহাম্মদ আবদেল দাইয়াম বলেন, “আমরা আপিল কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছি, তারা যেন এই অন্যায় বিধি বাতিল করে। যদি আপীল কোর্ট জানুয়ারীতে জারী করা এই জরিমানা এবং শাস্তি বহাল রাখে তা রাজনৈতিক স্থিরতার উপর হতাশা তৈরী করবে এবং সংবাদপত্রকে থামিয়ে দেবে”।

ইদ্রিসি ‘অজুদহুই লো মরোক্কো’ -এর একটি অংশে লিখেন, যে সংবাদপত্র এই ঘটনার বর্ণনা করেছে তারা দেশদ্রোহী, তাদের নৈতিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে। সিপিজেকে পত্রিকার সম্পাদক আনুজলা বলেন, “সে সময় কেবল আল-জারিদা আল ওয়ালা এই ঘটনার সংবাদটি ছেপেছিল”।

মরোক্কোর লেখিকা লায়লা লালামি তার ব্লগে এই বিষয় সমন্ধে লিখেছেন। তিনি এই বিষয়ে পরিস্কারভাবে কোর্টের সিদ্ধান্তের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

“আমকে দেখতে দাও! আমি যদি সরাসরি বিষয়টি দেখি, তাহলে দেখতে পাবো একজন বিখ্যাত সাংবাদিক আরেকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে এবং জিতেছে (এবং তা ঘটেছে কারন বিষয়টি জটিল, এখানে শাসক নিজেই আল-ইয়কুবির মামলা নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে)। সেন্সরশীপ মেশিন আজকাল এত ভালোভাবে তৈলাক্ত যে সরকারের আর কোন কিছুর করার দরকার নেই।

ওয়ান হাম্প অর টু ব্লগের উইল আশা করছে যে এই বিবৃতি কোন এক জায়গায় প্রকাশিত হবে:

“আমি আশাকরি আল -জারিদা আল -ওয়ালা যদি এই বিপদ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে চলতে চায়, তাহলে সে ধারাবাহিকভাবে সত্য প্রকাশ করতে থাকবে, যা তার যোগ্য নয়। সে বিদেশী পত্রিকার কাছে সংবাদ বিক্রি করে দেবে (আমি মনে করি সংবাদ বিক্রি করার জন্য স্পেন সবচেয়ে সেরা জায়গায়)। এটি কোন আর্দশ সামাধান নয়। এ কারনে মরোক্কোতে সঠিক তথ্য পাওয়া আরো কঠিন হয়ে উঠবে।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .