কঙ্গো ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক: শিপাঞ্জি পোষ্য না

প্রচারমাধ্যমগুলো সরব হয়ে আছে এই খবরে যে ১৫ বছরের ২০০ পাউন্ডের (৯০ কেজি) একটা শিম্পাঞ্জি আমেরিকার কানেক্টিকাট এর স্টামফোর্ডে একজন মহিলাকে আক্রমণ করেছে। টিভি বিজ্ঞাপন আর চলচিত্রে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই বানর তার মালিকের বন্ধু এই মহিলাটিকে আক্রমন করে খুবই খারাপ অবস্থায় রেখে চলে যায়।

একটি পূর্ণবয়স্ক শিম্পান্জি

একটি পূর্ণবয়স্ক শিম্পান্জি

যেমন ধারণা করা হয়েছিল যে জীববিজ্ঞানী আর প্রিমাটোলজিস্টরা এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কড়া সাবধানবাণী দিয়ে যে শিম্পাঞ্জি- আর একটু বাড়িয়ে বললে- সকল বন্যপ্রাণীকে পোষ্য হিসাবে রাখা ঠিক না।

লোলা ইয়া বোনোবা ব্লগ ওয়াইল্ডলাইফডাইরেক্টে ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন শিম্পাঞ্জিকে পোষ্য হিসাবে নেয়া যায়না। তারা অনেক কারন দিয়েছে যার মধ্যে আছে যে এরা বন্য পশু, কুকুর বা বিড়ালের মতো না যাদেরকে হাজার বছর ধরে গৃহপালিত করা হয়েছে আর এর ফলে মানুষ তাদের জীন থেকে বেছে নিয়ে বাছাইকৃত প্রজনন করতে পারে।

লোলা ইয়া বোনোবো অনুসারে এই আক্রমণাত্মক দিকটা বাদরগুলো যখন বাচ্চা থাকে তখন এত বোঝা যায় না। এই কারনে শিম্পাঞ্জি পাচারকারীরা তাদেরকে বাচ্চা অবস্থায় পাচার করে কিন্তু যখন তারা বড় হতে থাকে – একটা পুর্ন বয়স্ক পুরুষের সমান বড়, কিন্তু ১০ জন হেভিওয়েট মুষ্ঠিযোদ্ধার সমান শক্তি- মালিকরা তখন এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।

চিড়িয়াখানা বা অভয়ারন্যে শিম্পাঞ্জিকে ভালোভাবে আর নিরাপদে রাখা একটা কঠিন কাজ। ব্যক্তি মালিকানাধীনদের উপায় নেই চিড়িয়াখানায় যা আছে তা তাদের কাছেও রাখার। এর ফলে আগ্রাসী ভাব আর মানুষের জীবনের প্রতি ঝুঁকি বেড়ে যায়।

শিম্পাঞ্জি আর সকল প্রাইমেট, মানুষের সাথে তাদের ঘনিষ্ট জেনেটিক মিলের কারনে, এমন কিছু জীবানুর সম্ভাব্য বাহক যা সহজে মানুষের মধ্যে আসতে পারে যেমন হার্পস বি, হলুদ জ্বর, মাঙ্কিপক্স, ইবোলা, মারবুর্গ, এস৪ আর যক্ষা। এটার কারনেই মানুষের উচিত না প্রাইমেটদের পোষ্য করে রাখা।

এর পরেও চুড়ান্ত একটি কারন আছে কেন বন্য পশুকে পোষ্য হিসাবে রাখা ঠিক না: পোষ্য পাচার একটা আর্ন্তজাতিক বিভ্রাট যা বেশ কয়েকটা প্রজাতির শেষ হওয়ার জন্য দায়ী। সংরক্ষণবাদীরা চেষ্টা করছেন এই ব্যবসা বন্ধ করতে উন্নয়নশীল দেশে যেখানে মানুষ বিপদ্গ্রস্ত পশুকে ফাঁদ পেতে ধরে দেশে আর বিদেশে পোষ্য হিসাবে রাখার জন্য বিক্রি করে। কিন্তু এটা শুধুমাত্র উন্নয়নশীল দেশের সমস্যা না। লোলা ইয়া বোনোবো বলেছেনঃ

… এই দেশের রাজনীতিবিদরা আমেরিকার আইনের অভাবের কথা বলে আর বলে কেন তাদের জন্য এটা ভুল আর বেয়াইনী একটা শিম্পাঞ্জিকে পোষ্য হিসাবে রাখা, আর যদি শিম্পাঞ্জি বিপদ্গ্রস্ত প্রানী হয় যাদেরকে সংরক্ষণ আর নিরাপদে রাখতে হবে, [কেন] আমেরিকায় কেউ [পারবে] একটির অর্ডার ইন্টারনেটে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দিতে পারবে?

লোলা ইয়া বোনোবো শেষ করেছেন এই বলেঃ

আমরা এখন আর মানুষ কেনা বেচা করি না। যেহেতু সিম্পাঞ্জি আর বোনোবোর সাথে আমাদের ডিএনএর ৯৮.৭% ভাগ মিলে তাদের কি একই সম্মান পাওয়া উচিত না?

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .