প্যারাগুয়ে: অভিবাসীরা তাদের নিজেদের গল্প বলছে

এটি সারা ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে এক সাধারণ গল্প, তারা আশেপাশের অথবা কোন দুরের দেশে অভিবাসী নতুন কোন সবুজ ঘাসের এলাকা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। এটি প্যারাগুয়ের জনগণের জন্য আলাদা কোন বিষয় নয়। তারা তাদের ভাগ্যান্বেষনে পরিবার এবং বন্ধুদের পেছনে ফেলে যায়, হয়তো দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশ অথবা মহাসমুদ্রের ওপারে ইউরোপের কোন দেশে। সিটিজেন মিডিয়া এই রকম কয়েকটি অভিবাসী ব্যাক্তির কাহিনী তুলে ধরছে। সোমোস প্যারাগুয়াস (আমরা প্যারাগুইয়ান) নামের একটি স্প্যানিশ ভাষার ব্লগ সারা বিশ্বের অভিবাসী ব্যাক্তিদের আহবান জানাচ্ছেন তাদের নিজস্ব গল্পগুলো তুলে ধরতে। তাদের অভিজ্ঞতার এবং অন্য প্যারাগুয়ের অধিবাসীদের প্রতি এই ব্লগ আহবান জানিয়েছে তারা যেন মন্তব্যের পাতায় গল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করে।

একটি নতুন দেশে গিয়ে বাস করার চেষ্টায় কি অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা জানা যাবে এই সব গল্পে। এর অনেক গল্পে হৃদয় ব্যাথায় ভরে ওঠে। কিছু গল্পে ছিল কারো সাফল্যে গাঁথা। মিল খুঁজে পাওয়া গল্পগুলোর অনেকের মধ্যে একটা সাধারণ মিল রয়েছে তা হলো ভিন্ন দেশে ভালো একটা অর্থনৈতিক সুযোগ লাভ করা। গ্যাব্রিয়েলা লিখছেন তার ৩০ বছর আর্জেন্টিনা বাসের কথা, এই সময় সে তার মাতৃভুমি প্যারাগুয়ে ছেড়ে যান আর পেছনে রেখে যান তার পিতামাতকে। তার এই বিদেশ গমনের উদ্দেশ্য ছিল টাকা আয় করা। কিন্তু নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে বাস তার জন্য সহজ কোন কাজ ছিল না:

Este dolor por la distancia y la angustia de no ver y escuchar a mis seres mas queridos, de no ver el cielo tan azúl ni los árboles mas verdes y frondozos, la tierra colorada, la polca y el dulce idioma guaraní despertaron en mí la curiosidad por saber mas de mi tierra, y también para defenderme de los interrogatorios a los que me sometían todos quienes se daban cuenta de mi acento

যে ব্যাথাটি তৈরী হয়েছিল, তা দুরত্ব আর যে প্রিয় মানুষদের দেখতে না পাওয়ার উদ্বিগ্নতা, নীল আকাশ দেখতে না পাওয়া, অথবা সবুজ হাসিমুখে দাড়িয়ে থাকা গাছগুলো দেখতে না পাওয়া ও রঙ্গিন পৃথিবীকে হারিয়ে ফেলা। পোলকা নাচ নাচতে না পারা আর প্রিয় গুয়ারানি ভাষা কথা বলতে না পারা ছিল তার জন্য খুব কষ্টের। এতে আমার দেশের মাটি সমন্ধে আরো বেশী কৌতুহল তৈরী হলো। এভাবে আমি আমাকে রক্ষা করলাম। যারা আমরা উচ্চারণ খেয়াল করতো, তারা আমাকে নানা প্রশ্ন করতো।

কারো জন্য মাতৃভূমি ছেড়ে অন্য দেশে বাস করা অনেক সহজ। সেই তুলনায় যে সমস্ত অভিবাসী অভিবাসন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারনে অন্য দেশে প্রবেশ করতে পারে না তাদের জন্য বিষয়টি কঠিন। যারা বিদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করে তারা যে সবাই সফল হয় তা নয়। ইংল্যান্ডে বাস করছে এমন এক পরিবার অলিন্ডাকে সেখানে চাকুরীর নিয়োগ দেয়, কিন্তু লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে নামার পর ইংল্যান্ডের (ইমিগ্রেশন) পুলিশ তাকে সেদেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। (স্প্যানিশ ভাষায়)

Finalmente llegue al mostrador y me atendió una que me hablaba todo en ingles, no le entendía nada, después de una rato trajeron un traductor y me pregunto para que venia y otras cosas mas. Me llevaron a una oficina para preguntarme mas cosas, y ahí ya me asuste. Me preguntaron cuanto pague por el pasaje, cosa que yo no sabia, también me preguntaron de que nacionalidad era mi amiga y su marido (los señores que me contrataron), yo le dije paraguayos pero había sido ella era de nacionalidad argentina y el señor tenia nacionalidad italiana por medio de su papa, ellos antes vivían en Paraguay, pero no sabia todos esos otros detalles. Hasta llamaron a la señora y le preguntaron cosas mías y ella tampoco sabia mucho… y así se dieron cuenta que yo venia a trabajar y me denegaron la entrada al país.

Me dijeron que el vuelo salía al día siguiente recién, por lo que me iba a quedar retenida en el aeropuerto hasta que ellos me embarquen mañana. Y así me llevaron a una habitación con cama, baño y televisión. Donde descanse y espere el día siguiente. La verdad me trataron muy bien los ingleses, y no me puedo quejar, fue mi inocencia y la de los patrones que pensaron que era fácil entrar y cuando no era. Inclusive ellos me dijeron que si algún día quería volver a Inglaterra era bienvenida porque no arme escándalo ni llore como algunos hacen. La verdad no entendí porque me dijeron eso, me hubiesen dejado entrar nomás, no?

Después volví a Asunción al día siguiente, y unos meses después me anime a intentar otra vez, pero esa vez a España. Preste plata para pagar el pasaje esta vez, pero tampoco pude entrar… por tercera y última vez, preste una vez más plata y compre otro pasaje a España y esta vez si pude entrar.

অবশেষে আমি কাউন্টারে এসে পৌঁছলাম। সেখানে এমন একজন ছিল যে কেবল ইংরেজি বলতে পারে। আমি তার কোন কথাই বুঝতে পারছিলাম না। এরপর তারা একজন অনুবাদককে আনলো। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘কেন আমি এখানে এসেছি ও এরকম আরো কিছু প্রশ্ন’। এবার আমি শংকিত হয়ে উঠলাম। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘বিমান ভাড়ার জন্য আমি কতটাকা ব্যায় করেছি’। এর অনেক উত্তর আমরা জানা ছিল না। এবার তারা আমাকে প্রশ্ন করলো, ‘আমার বান্ধবী ও তার স্বামীর জাতীয়তা কি’ (যেই দম্পতি এখানে আমাকে চাকুরীর নিয়োগ দিয়ে আমাকে এখানে আসার জন্য বলেছিল)? আমি বললাম, ‘তারা প্যারাগুয়ের বাসিন্দা’ কিন্তু আবিস্কার হলো যে আমার বান্ধবী আর্জেন্টিনার মানুষ এবং তার স্বামী ছিল ইতালির লোক, কারণ তার বাবা ছিল ইতালির অধিবাসী। তবে তারা এক সময় প্যারাগুয়েতে বাস করত। আমি তাদের অন্য সব বিস্তারিত তথ্য জানতাম না। তারা এবার মহিলাটিকে ডাকলো এবং আমরা সমন্ধে তাকে প্রশ্ন করলো। কিন্তু সেও আমার সমন্ধে তেমন বিস্তারিত কিছু জানতো না। এভাবেই তারা আবিস্কার করলো যে, আমি সেদেশে কাজ করতে এসেছি এবং তারা আমাকে সে দেশে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করলো।

তারা আমাকে বললো যে আমারা পরবর্তী যাত্রার তারিখ পরেরদিন। পরেরদিন যতক্ষণ না আমি বিমানে চড়লাম তার আগ পর্যন্ত তারা আমাকে এয়ারপোর্টে আটকে রাখলো। তারা আমাকে একটা কামরায় নিয়ে গেল, সেখানে একটি বিছানা, বাথরুম এবং টেলিভিশন ছিল। সেখানে আমি অপেক্ষা করলাম এবং পরেরদিন পর্যন্ত বিশ্রাম নিলাম। ইংরেজরা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছিল। তাদের বিরুদ্ধ আমি কোন অভিযোগ করতে পারি না। এটি আসলে আমার অসচেতনতা এবং আমারা স্পনসররা আসলে ভেবেছিল আমার জন্য ইংল্যান্ডে প্রবেশ করা আমার জন্য সহজ হবে, আসলে বিষয়টি তা ছিল না। তারা অমাকে আরো বলেছিল, ‘যদি কোনদিন আবার আমি ইংল্যান্ডে ফিরে আসতে চাই তারা আমাকে স্বাগত জানাবে’ কারণ আমি সেখানে কোন বড় ধরনের নাটকীয়তা করিনি বা অন্যদের মতো কোন কান্নাকাটি করিনি। সত্যি বলতে কি, আমি ঠিক বুঝতে পারিনি কেন তারা আমাকে এ রকম বলেছিল এবং যদি এটিই বিষয় হয় তাহলে ইংল্যান্ড কেন আমাকে সে দেশে প্রবেশ করতে দিল না।

আমি পরের দিনই আসানসিওন-এ ফিরে এলাম এবং কয়েক মাস পরে আবার বিদেশে পাড়ি জামানোর চেষ্টা করলাম। এবার আমার গন্তব্য ঠিক করলাম স্পেন। স্পেনে যাবার টিকেট কেনার জন্য আমি টাকা ধার করলাম। কিন্তু আমি সেদেশে প্রবেশ করতে সক্ষম হলাম না। তৃতীয় এবং চুড়ান্ত বার আমি আরো টাকা ধার করলাম এবং স্পেনে যাবার অন্য আরেকটি টিকেট নিলাম। অবশেষে এবার আমি স্পেনে প্রবেশ করতে সক্ষম হলাম।

একবার বিদেশে প্রবেশ করার পর অনেক অভিবাসী সেখানে নতুন জীবন শুরু করে। সেখানে তারা নতুন আবাসভুমির নাগরিকদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করে এক জীবন শুরু করে। এনজেল নামের একজন স্প্যানিশ নাগরিক এক ব্লগ পোষ্টে তার বেদনাভরা কাহিনী আমাদের বলছেন। এই কাহিনী তার প্যারগুয়ের স্ত্রীকে নিয়ে:

He estado casado dos años y tres meses con una chica paraguaya de San Lorenzo (tres años en total desde que la conocí). Digo he estado porque me he quedado viudo con una preciosa beba que me dejó cuatro días antes de fallecer y un chico de 10 años que lastimosamente volvió con sus abuelos y tuve que separar de su hermanita por asuntos mas legales que sentimentales…..

Una complicación en la cesárea desencadenó en la peor semana de mi vida, la beba nació lunes y mi esposa falleció viernes. Tengo muy claro que en Paraguay el mismo lunes hubiese fallecido, pero eso no tiene vuelta atrás para discutir si acá o allá.

আমি দুই বছর তিন মাস আগে এক প্যারাগুয়ের মেয়েকে বিয়ে করেছিলাম। তার বাস ছিলো সে দেশের সান লরেঞ্জ-এ (তার সাথে দেখা হওয়ার পর পর ঠিক তিন বছর আমরা একসাথে ছিলাম)। আমি বলছি আমরা বিয়ে করেছিলাম, কারণ এখন আমি আমার পত্নীকে হারিয়ে ফেলেছি। সে আমাকে ছেড়ে অন্যজগতে চলে গেছে, এই জগতে রেখে গেছে মূল্যবান এক শিশু। এই শিশুর জন্মের চারদিনের মাথায় সে মারা গেছে। এই শিশুর সাথে সে দশ বছরের এক বালককে রেখে গেছে। দুভার্গ্যজনকভাবে এই বালক এখন নানানানীর কাছে থাকে। তাকে তার ছোট্ট বোনের কাছ থেকে আলাদা হতে হয়েছে কোন আবেগীয় কারনে নয়, স্রেফ অভিবাসন সংক্রান্ত আইনী জটিলতায়।

আমার জীবনে গত সপ্তাহে শূরু হয়েছিল সিজারিয়ান বিভাগের এক জটিলতা দিয়ে। সোমবারে এই শিশুটি জন্মগ্রহণ করে। শুক্রবারে আমার স্ত্রী মারা যায়। আমি নিশ্চিত প্যারাগুয়েতেও সে হয়ত সোমবারেই মারা যেত, কিন্তু এখানে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার মতো কেউ নেই।

1 টি মন্তব্য

  • খুব সুন্দর এই প্রয়াস। অভিবাসী নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে কাজ চলছে। কাজ করছেন অসংখ্য মানুষ। এবার সেই অভিবাসী মানুষদের নিজেদের কথা পড়তে পেরে বেশ ভালো লাগছে। আমরাও যেন ছুঁতে পারছি তাঁর অভিজ্ঞতা। এই ইতিহাস আজকের নয়। অনেক দিনের…আমরাই বয়ে চলেছি আমদের অন্তর্গত রক্ত প্রবাহের মধ্যে…। আপনার অনুবাদ সুন্দর…শুভেচ্ছা রইলো।

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .