বাংলাদেশ: ব্লগারদের বই

বাংলা ব্লগিং এর ইতিহাস তুলোনামূলকভাবে ছোট। ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম বাংলা ব্লগিং প্লাটফর্ম শুরু হয়। অচিরেই আরো নতুন ব্লগের আগমন ঘটে। ওপেন সোর্স বাংলা ইনপুট ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে পৃথিবীব্যাপী বাংলা কম্পিউটিং সহজ হয়ে গেছে এবং ক্রমশ: অনেকেই ব্লগিং এর জগতে পা রাখছে।

বাংলা ব্লগিং এর সব থেকে উৎসাহজনক দিক হলো বাংলা ব্লগাররা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই প্রকাশ করেছেন। ফরিদ লিখেছেন:

বাংলা ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম চালু হবার পরে গত তিন চার বছরে অনেক অলেখকও যেমন লেখালেখিতে হাত পাকিয়েছেন তেমনি অনেক নবীন লেখকরাও ব্লগে লিখে তাদের লেখনীকে ধারিয়ে নিয়েছেন। আর তাই গত প্রায় তিন বছর ধরে প্রতি বছরেই ব্লগ পরিমন্ডল ও ব্লগারদের লেখা বইয়ের সংখ্যা উত্তোরত্তর বাড়ছে। এইবছর তো মোটামুটি ব্লগাররা মিছিল করেই বই ছাপিয়েছেন বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে।

একুশে বই মেলাকে সামনে রেখে এই বছর ব্লগাররা এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টির মত বই প্রকাশ করেছেন। এখানে ব্লগার মেঘবাজির তৈরি করা সেই সব বইএর একটা তালিকা পাবেন। এছাড়া একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে ‘ব্লগার্স বুক‘ নামে। বেশীরভাগ লেখকের/ব্লগারের বই গল্প, কবিতা আর প্রবন্ধ আর গুটিকয়েক বই রয়েছে ব্লগে প্রকাশিত লেখা নিয়ে।

Opor Bastob

সামহোয়ারইন ব্লগের কয়েকজন ব্লগারের উদ্যোগে ব্লগে প্রকাশিত লেখার তৃতীয় সংকলন অপর বাস্তব-৩ প্রকাশিত হয়েছে। এবছরের বিষয় হলো ‘ছোট গল্প'। ব্রিগেড সিক্সটিন বইটির ব্যাপারে লিখেছেন:

মুক্ত গণমাধ্যমের মুক্ত মতামত কেমন হতে পারে, সে ধারণা আমাদের অনেকেরই আছে। কিন্তু মুক্ত গণমাধ্যমের সাহিত্য – গল্প, কবিতা, উপন্যাস – তাও কি সম্ভব? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্লগের নির্বাচিত লেখা নিয়ে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল সংকলন ‘অপরবাস্তব’।

ব্লগারদের কাছ থেকে মনোনয়ন আহ্বান করা হয়েছিল গত বছরের নভেম্বরে। একমাসেরও বেশি সময় ধরে মনোনয়ন গ্রহণের পর নির্বাচিত গল্পগুলো ব্লগারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নির্বাচক প্যানেলের কাছে পাঠানো হয়। তাঁরা একমাস ধরে যাচাই-বাছাই শেষে মোট ২২টি গল্প চূড়ান্ত করেন, যা স্থান পেয়েছে সংকলনে।

বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। বিক্রিলব্ধ সমুদয় অর্থ ব্লগের নানা উদ্যোগ, ক্যাম্পেইন, মানবিক কর্মকান্ড ইত্যাদিতে ব্যয় করা হবে।

শাহরিয়ার হাসান ঐ পোস্টের মন্তব্যে লিখেছেন:

অনেকেই মনে করেন ব্লগিং মানেই সময় নষ্ট। বইটা তাদের কিনে পড়া উচিৎ।

মন্তব্যে কৌশিক আরও লিখেছেন:

২০০৮ এ ব্লগারদের বই বোধহয় বের হয়েছিল ৭/৮। ২০০৯ এ তো মনে হইতেছে পুরা বইমেলা দখল কইরা নিছে ব্লগাররা। ৫০ টার মত বই! গ্রেট!

পূর্ণমুঠিগত বছর অনলাইন লেখকের ফোরাম সচলায়তনের ব্লগাররা ‘পুর্ণমুঠি’ নামে ব্লগের লেখার একটা সংকলন বের করেন। এই বছর সচলায়তন ব্লগাররা তাদের আরো কিছু লেখার সংকলন প্রকাশ করছেন।

সচলায়তন ব্লগারদের দ্বারা প্রকাশিত বই এর একটা ক্যাটালগ প্রকাশ করা হয়েছে লেখকদের বিস্তারিত বর্ণনাসহ। এই পর্যন্ত লেখকের এই ফোরাম চারটি ই-বই প্রকাশ করেছে।

এখন দেখা যাক এই বিষয়ে ব্লগাররা কি প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। মাহবুব শাহরিয়ার লিখেছেন:

এবারের বইমেলা আমার জন্য অন্যরকম৷ অন্যরকম এই কারণে যে এবারই প্রথম আমি মেলায় লেখক হিসেবে এলাম৷ এর আগে কতবার মেলায় এসেছি পাঠক হিসেবে৷

লিনা দিলরুবা তার মনোভাব জানিয়েছেন নতুন বই আর ব্লগারদের বই কেনার ব্যাপারে:

আজকে বইমেলায় গিয়েছি। ..বইকেনার মূহুর্তগুলো খুব উপভোগ করি।

এই আনন্দ, এই সুখানুভূতির প্রকাশ ঘটানোর জন্য তাই ব্লগে বসলাম।

ব্লগার বন্ধুদের বই কিনিনি আজ। অফিস থেকে যখন বেরিয়েছিলাম তখন বইয়ের লিস্টটা নিয়ে বের হইনি। পরেরবার প্রথম তালিকাটা ব্লগারদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।

মামুন এম. আজিজ, যিনি পথিক ছদ্মনামে লেখেন, জানিয়েছেন:

প্রকাশক ফোন করে জানালেন আজ বইমেলায় চলে এসেছে আমার গল্পের বই –তথাপি।
ইস ! নিজে এখনো দেখলাম না।
কাল ইনশাল্লাহ যাব মেলায়।

প্রকাশক আর ব্লগার আহমেদুর রশিদ বই মেলা আর ব্লগারের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে দৈনিক একটি ধারাবাহিক লিখছেন। আপনি অনলাইনে বাংলা বই কিনতে পারেন আর বই মেলা সম্পর্কে আরো তথ্য এখানে জানতে পারেনঅন্য আনন বই মেলার কিছু ছবি এখানে পোস্ট করেছেন।

অনেক ব্লগার ব্লগকে ব্যবহার করছেন তাদের বইএর বিনামূল্যে প্রচারণার জন্য আর নতুন পাঠকদের আকৃষ্ট করতে বইয়ের সমালোচনাও দেয়া হচ্ছে।
(, , , , , , , , , ১০)

বই এর প্রকাশনা আর বই মেলা প্লাটফর্মভেদে সব ব্লগারদেরকে একত্র করেছে। মাহমুদুর রহমান লিখেছেন:

আজ বইমেলায় ব্লগারদের বিশাল মহামিলন ঘটবে। সচলায়তন, সা.ইন, আমার ব্লগ এবং প্রথমআলো ব্লগের ব্লগাররা মিলিত হবেন ১৯২নং স্টলের সামনে। আজ অনেক ব্লগারের বই বের হবে। ঢাকার বাহিরের অনেক ব্লগারই আসবেন আজ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .