ব্রুনাই: আলী বাবা উপসর্গ

ব্রুনাইয়ের বিভিন্ন কোনা থেকে নিত্য নতুন বাণিজ্য উদ্যোগ শুরু হতে দেখা যাচ্ছে। যেমন ধারণা করার আগেই হয়ত আপনার কাছেই চালু হয়ে যাবে একটি নতুন রেস্তোরা, একটি নতুন কাপকেক ফ্যাক্টরী, একজন নতুন সঙ্গীতশিল্পী, অথবা একটি নতুন শপিং মল। এ ছাড়াও এসব ব্যবসার বেশীরভাগই এদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় মালয়েশিয়ার ব্রুনাইয়ানদের দখলে। এটি প্রমাণ করে যে মালয়দের ব্যবসা শুরু করার মত অর্থনৈতিক সামর্থের অভাব নেই এবং তারা অনায়াসে উদ্যোক্তা হতে পারেন। তবে তারা বাণিজ্য প্রসারে অবদান রাখলেও তাদের অনেকেই ব্যবসা পরিচালনা করেন না। রুজ ইকনমিস্ট একে আলী বাবা উপসর্গ বলছেন:

উদাহরণ স্বরুপ ধরুণ বাণিজ্য সেক্টরের “আলী বাবা উপসর্গ”। আমরা অতি দ্রুত এবং সহজে ধনী হতে চাই। নিজেরা ব্যবসা পরিচালনা করার বদলে আমরা আমাদের পার্মিট এবং লাইসেন্সকে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করি বা ভাড়া দেই। এর ফলে সত্যিকার অর্থে উদ্যোক্তা হতে পেরেছে এবং যাদের নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি এমন লোকের সংখ্যা মাত্র দশেরও কম। অথচ তুলনামূলক ভাবে বহুগুণ বেশী বাণিজ্য উদ্যোগ আমাদের দেশে রয়েছে। বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য ‘কেদাই রানসিট’ (মুদি দোকান), নাপিতখানা এবং দর্জির দোকান।

ছবি আনাক ব্রুনাইয়ের সৌজন্যে।

ব্রুনাই সরকার মানবসম্পদের সদ্ব্যবহার এবং দেশের অর্থনীতিকে বহুমূখী করার জন্যে নানা সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে পরিকল্পনা, উদ্দীপক বা নতুন চিন্তা ফলপ্রসু হয় না যদি মানবসম্পদ তা বাস্তবায়নে অপারগ হয়। উন্নয়নে এ ধরণের বাঁধার মূলে রয়েছে অবশ্য ব্রুনাইয়ের সংস্কৃতি। রুজ ইকনমিস্ট ব্রুনাইয়ের মালয়দের কাজের ধরণকে উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন:

আরেকটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে ব্রুনাইয়ের মালয়দের কাজের ধরণ সম্পর্কে। দিনে পাঁচটি চা বিরতি সরকারী চাকুরীতে নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। ‘পরে করব’ এই সংস্কৃতি চাকুরিরতদের মাঝে গেড়ে বসায় সরকারের উৎপাদনশীলতায় প্রভাব ফেলেছে ও লক্ষ লক্ষ ডলার লোকসানের কারন হয়েছে। ফরে সরকারী খাত, যা ব্রুনাই মালয়দের চাকুরী হিসেবে প্রথম পছন্দ ধীর গতিতে ও পশ্চাদপদভাবে কাজ করছে। আরেক জেলায় চিঠি পাঠাতে হয়ত তাদের কয়েক সপ্তাহ লাগে এবং কোন আবেদনে সারা দিতে হয়ত কয়েক মাস লাগতে পারে। (বলেন কি? আমাদের দেশের জনসংখ্যা কত?)

তাই ব্রুনাইয়ের জন্যে একটি উপযোগী পরিবেশ দরকার যাতে ব্রনাইয়ের মানবসম্পদ বিশেষ করে মালয়রা তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে। যদি এইসব ব্যবসায়িক উদ্যোক্তারা এগুতে না পারে তাহলে দেশের উন্নয়ন হয়ত স্বপ্নই থেকে যাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .