পরিবেশ: পানি নিয়ে রাজনীতি আর বিরোধ

আফ্রিকার ব্লগাররা পানি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরছেন: যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতি পানির মানের এক বিশেষজ্ঞকে পদচ্যুত করেছে, পানি সংগ্রহ আর পরিষ্কারের নতুন যন্ত্র ব্যবহার আর পূর্ব আফ্রিকার লেক অঞ্চলে ‘মাছের জন্য কাড়াকাড়ি'।
tap
ফ্লিকারে জুলিয়েন হার্নিসের ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সে প্রকাশিত ছবি

আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা দিয়ে শুরু করি যেখানে আরবানস্প্রাউট ব্লগ তুলে ধরেছে ড: এন্থোনী টার্টন এর সাময়িক বরখাস্তের ঘটনাটি। ডঃ টার্টন একজন গবেষক যিনি প্রস্তুত ছিলেন “বিজ্ঞান: বাস্তব এবং প্রাসঙ্গিক” শীর্ষক কনফারেন্সে একটি প্রতিবেদন পাঠে। তাকে এটা থেকে বিরত করা হয়, আর পরে বিজ্ঞান আর শিল্প সংক্রান্ত গবেষণা কাউন্সিল (সিএসআইআর) থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এই ব্লগার বরখাস্তের কারন সম্পর্কে তার ধারণা এবং যা সিএসআইআর জানিয়েছে তাও তুলে ধরেছেন, কিন্তু তিনি ড: টার্টনের পেপারের বিষয়বস্তুও খতিয়ে দেখেছেন [পিডিএফ হিসাবে আছে environment.co.za সাইটে] আর লক্ষ্য করেছেন…

ড: টার্টনের প্রতিবেদনে দেখলাম সংক্ষিপ্তভাবে তিনি তর্ক করেছেন যে নব্বুইয়ের দশকের প্রথম ভাগ থেকে দেশে বিজ্ঞান, প্রকৌশল আর প্রয়ুক্তিতে বিনিয়োগের অভাব আছে। গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রকপ্ল বাদ দেয়া আর চুক্তি ভিত্তিক আয়ের মডেলের দিকে ঝুঁকে পড়া একটা ‘বিপর্যয়ী ফল’ তৈরি করেছে আমাদের জাতীয় বৈজ্ঞানিক ক্ষমতার উপর যার মাধ্যমে আমাদের পানির মান যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তার মোকাবেলা সম্ভব নয়।

এরপরে আছে বিজ্ঞানীদের তাদের গবেষণালব্ধ জিনিষ তুলে ধরার শিক্ষাগত স্বাধীনতা প্রসঙ্গ। আরবানস্প্রাউট একজন বিজ্ঞান সাংবাদিকের কথা উদ্ধৃত করেছেন যিনি ড: টার্টনের সাময়িক বরখাস্তের খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন:

বিজ্ঞান সাংবাদিক আর ভুতপূর্ব স্টেলেনবশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার প্রধান ডঃ জর্জ ক্লাসেন একমত হয়েছেন যে সিএসআইআর কর্তৃক প্রতিবেদন পাঠকে থামিয়ে দেয়া ‘সম্পূর্ণ লজ্জ্বার’ একটা বিষয় হয়েছে। “এটা শিক্ষাগত স্বাধীনতা আর বিজ্ঞানীদের তাদের প্রাপ্তির ফলাফল জানানোর স্বাধীনতার উপর গুরুতর হস্তক্ষেপ, যদিও আমাদের দৃষ্টিতে এইসব ফলাফল যতই খারাপ হোক না কেন”, উনি মন্তব্য করেছেন। ক্লাসেন জানিয়েছেন যে সংবিধানের ১৬ নং ধারা অনুসারে শিক্ষাগত আর গবেষণার স্বাধীনতা সংরক্ষিত আছে, যেখানে বলা আছে যে প্রত্যেকের অভিব্যক্তির স্বাধীনতা আছে, যার মধ্যে শিক্ষাগত আর বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বাধীনতাও আছে।

আরবানস্প্রাউট লিঙ্ক দিয়েছেন ড: টার্টনের সমর্থনে একটি অনলাইন পিটিশনের জন্য আর শেষ করেছেন এই বলে:

ড: টার্টনের প্রতিবেদন তুলে ধরেছিল যে দক্ষিণ আফ্রিকা পানি সরবরাহ আর পানির গুণগত মান নিয়ে একটা সংকটের দিকে যাচ্ছে যা খারাপভাবে দেশের অথনৈতিক সমৃদ্ধি আর উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে পারে, আর তার সাথে সামাজিক অবিশ্বাস সৃষ্টি হতে পারে। এই খবর দক্ষিণ আফ্রিকা বিদ্যুত খাতের সমস্যার মত পানি সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে না সাম্প্রতিক সরকারের এমন আশ্বাস এর সাথে প্রবল বৈষম্য তৈরি করছে।

আরবানস্প্রাউট পূর্বের একটি পোস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার পানি সংকটের উপর আরো বেশী তথ্য দিয়েছে, যেখানে মিউনিসিপাল ট্রিটমেন্ট কাজের বর্জ নর্দমার চুয়ানো পানি নদীতে পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়ছে। নদীর পানি স্থানীয় কলের পানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

বিএলডিজি ব্লগে একটা নবউদ্ভাবিত পানির মিল (ওয়াটারমিল) সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই যন্ত্র ‘তিনটি লাইটের বাল্বের সমান বিদ্যুত খরচ করে বাতাস থেকে জলীয় বাষ্পকে ঘনীভূত করে বিশুদ্ধ করে খাবার পানিতে পরিনত করতে পারে'। কার্বন স্মার্ট ব্লগের রোরি বিএলডিজির পোস্টটি লিঙ্ক করেছেন আর ভাবছেন যে এই পানির মিলের মতো ‘মাইক্রো কৌশল’ শহরের জন্য এটা বিশুদ্ধ পানির উৎস হতে পারে কিনা। তিনি লিখেছেন:

পানির মিল নিয়ে আলোচনা- এটি একটা স্বল্প মাত্রার ডিহিউমিডিফায়ার যা বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করে পরিষ্কার করে। – এটি সম্ভাবনা সৃষ্টি করে যে শুধুমাত্র কতোটুকু খাওয়ার পানি বাতাস থেকে আসবে এমন ভাবনাই না, বরং এই রকম স্বল্প এনার্জির হাজার হাজার যন্ত্র স্থাপন করে শহরের শুষ্ক আবহাওয়ায় বড় রকমের পরিবর্তন করা যাবে কিনা সেটাও। আমরা কি বেশ কয়েকটা শক্তি নি:শেষ করা শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বাতিল করে আমাদের পরিবেশকে আরো আরামদায়ক করতে পারি আরো ভালো গৃহ নির্মান ডিজাইন, সঠিক পোশাক, জমি চাষ আর বাতাসের জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমিয়ে হাজার হাজার পানির মিল ব্যবহার করে?

পূর্ব আফ্রিকায়, কেনিয়ার ব্লগ কেনভিরোনিউজ নামলা মাথশান্ডার একটি লেখা তুলে ধরেছে আফ্রিকার নিরাপত্তা বিশ্লেষণ প্রোগ্রামের উপর। এখানে লেক ভিক্টোরিয়ার মিগিঙ্গো দীপ নিয়ে যে বিরোধ তা আলোচনা করা হয়েছে যা উগান্ডা আর কেনিয়া দুই দেশই দাবি করে। লেখাটা সাবধান করেছে:

লেক ভিক্টোরিয়ায় কথিত ‘মাছের জন্য কাড়াকাড়ি’ লেকের ধারের দেশের মধ্যে বিরোধের কারনে পরিণত হচ্ছে আর আঞ্চলিক স্থায়ীত্বের জন্য হুমকি হতে পারে। গত মাসেই লেকের চারপাশে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যা উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া আর কেনিয়ার মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন এটা পরিষ্কার যে সংঘাতের মূল কারন হলো লেক ভিক্টোরিয়া ভাগ করে তিন দেশের মধ্যে পরিষ্কার সীমানা চিহ্নিতকরনের অভাব।

২০০৩ থেকে ‘সাধারণ সীমানা বেআাইনিভাবে পার হওয়ার জন্য’ তাঞ্জানিয়া বা উগান্ডার কতৃপক্ষ দ্বেশ কয়েকজন কেনিয়ান জেলেকে আটক করেছে আর তাদের নৌকা আর মাছ ধরার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় প্রায় ৪০০ জন কেনিয়ার জেলেকে মিগিঙ্গো দীপ থেকে উগান্ডার কর্তৃপক্ষ বের করে দেয়। এই ঘটনায় দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনাকর সম্পর্কে আরো ফাটল দেখা দিয়েছে। কেনিয়ার জেলেরা তাদের রাজনৈতিক নেতাদেরকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করেছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ সংঘর্ষের ভয়ও দেখিয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .