পাকিস্তান: বেলুচিস্তান কম্পন

বুধবার, ২৯শে অক্টোবর ২০০৮ সকালে রিক্টার স্কেলের বিশাল ৬.৫ কম্পনের একটা ভুমিকম্প পাকিস্তানের পূর্ব ভাগকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলুচিস্তানের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল জিয়ারাত। এর ফলে ৩০০ জনের বেশী নিহত, শত শত আহত আর হাজারো লোক শীতের জমে যাওয়া ঠান্ডায় গৃহহীণ অবস্থায় রয়েছে।

বৈঠক ব্লগ লক্ষ্য করেছে যে:

পিশিন, জিয়ারাত, কিলা আব্দুল্লাহ, চামান, লোরালিয়া, সিব্বি ও মাস্তুং এর বেশ ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তানের ভুতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তরের কথা অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল চিলতান পর্বতে। জিয়ারাত হচ্ছে সব থেকে খারাপভাবে আক্রান্ত এলাকা।

ঘটনার খুব অল্প সময়ের মধ্যে উইকি পাকিস্তানের নাম করা ব্লগার ইফকির এর তত্বাবধানে এই কম্পনের উপর একটা উইকি পাতা তৈরি করা হয়েছে। কেয়ার এর ওয়েবসাইটে আক্রান্ত এলাকার একটি পু:খানুপুঙ্খ ম্যাপ পাওয়া যাবে।

নীচে পাকি রাজপুত কর্তৃক ইউটিউবে আপলোড করা ভুমিকম্পের একটা ভিডিও আছে:

পাকিস্তানিয়াত একটি গা হিম করা পোস্ট দিয়ে শুরু করেছে যেখানে সে ঘটনার তথ্য দিয়েছে:

কতৃপক্ষ বলছে যে দুটো কম্পন হয়েছে, যা পাকিস্তান সময়ে প্রায় সকাল ৪টা নয় মিনিট এ আর পাঁচটা দশ মিনিটে আঘাত হেনেছে এবং এর পরে অন্তত তিনটা আফটার শক (পরবর্তী কম্পন) হয়েছে।

আদনান তার চিন্তার কথা জানিয়েছে:

অর্থনৈতিকভাবে সব কিছু ২০০৫ এর মতো ভালো না তবে আশা আছে। আর ইনশাল্লাহ অন্যান্য পাকিস্তানীদের সহায়তায় এই দুর্যোগ থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। আমি শুধু আশা করতে পারি যে সব রাজনৈতিক দল, উকিল, সেনা সদস্যেরা মুহুর্তের জন্য তাদের ব্যক্তিগত প্রভেদ ভুলে আক্রান্তদের সাহায্যের প্রস্তুতি যেন নেয়। আল্লাহ যেন আমাদের সহায়তা করে আর আমরা যেন অন্যদের সাহায্য করতে পারি।

চেঞ্জিং আপ পাকিস্তান লিখেছে:

আজকে আরো একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, এইবার কঠিন একটা শীতের শুরুতে। সব থেকে খারাপভাবে আক্রান্ত একটা গ্রাম ওয়ামের একজন বাসিন্দা মোহাম্মাদ হাশিম এএফপিকে বলেছে, ”আমরা শেষ… রাতের ঠান্ডা থেকে আমাদের পরিবারকে বাঁচানোর মতো আমাদের কাছে কিছুই অবশিষ্ট নেই।” অনেক বাসিন্দা দিন কাটিয়েছে তাদের ভালোবাসার মানুষকে খুঁজে অথবা মৃতদের গণকবর দিয়ে, যখন প্রাথমিক কম্পনের মত বড় আফটার শক (পরবর্তী কম্পন) হচ্ছিল বিশাল এলাকাকে কাঁপিয়ে দিয়ে। এর ফলে কাছের পাহাড়ের চুড়া থেকে পাথর ভেঙ্গে পড়ে আবার নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছিল।”

লাহোর মেটব্লগস পরের কম্পনের কথা বলেছে তার প্রকৃতির রাগ আবার একটা অক্টোবরকে রক্তে ভিজিয়েছে পোস্টে:

ধংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া আর ভূমিধসে আটকে থাকা যতজনকে সম্ভব উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে। শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হচ্ছে কোয়েটার চারপাশে, আর জিয়ারাত ভ্যালির ভূকম্পনকেন্দ্রের কাছে, যেটা এলাকার মধ্যে সব থেকে সুন্দর এলাকা।

ইসলামাবাদ মেটব্লগস জিয়ারাতের মেয়রের আবেদন প্রচার করেছে:

“অনেক ক্ষতি হয়েছে। একটা বাড়ীও আস্ত নেই।”

বেলুচিস্তানের আমাদের ভাই বোনের প্রতি কর্তব্য আমাদেরকে ডাকছে। আমরা গত অক্টোবর ০৮, ২০০৫ এর ভূমিকম্পের শিকারদের জন্য যা যা সম্ভব তা করেছি আর আমাদের চেষ্টা বৃথা যায়নি। আমরা একত্র হওয়ার জন্য আর একটা আবেদন করছি আর আরো বড় মাত্রার একাত্মতা। উৎসাহ আর কষ্টে থাকা আমাদের মুসলিম ভাই বোনদের জন্য আমাদের ভালোবাসা দেখাতে চাই।

আমার নিজের ব্লগে আমি দুটি রিলিফ প্রচেষ্টা তুলে ধরেছি যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সাহায্যের চেষ্টা করা হচ্ছে: আইডিএসপির পরিচালকের একটা আহ্বান আর আর একটা আহ্বান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফাস্ট এর যার ছাত্ররা ফাস্ট রিলিফ সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে যাতে দুর্গত এলাকায় দ্রুত রিলিফ দেয়া যায়।

আরো প্রচেষ্টা দেখা যাবে উইকি পাকিস্তান ভূমিকম্প পেজে যা এই কারনে তৈরি করা হয়েছে।
Wiki Pakistan page

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .