সৌদি আরব: নাম নিয়েই সবকিছূ

এটা সাধারণ নিয়ম যে যারা ইসলামে ধর্মান্তরিত হবে তারা মুসলিম নাম রাখবে। কিন্তু এটার কি দরকার – আর কি ধরনের নাম ঠিক হবে? একজন সৌদি ব্লগার এ ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করেছেন, আর অন্য কিছু ব্লগার ব্লগে ছদ্মনাম ব্যবহারের কথা চিন্তা করছেন- আর আর একজন সরকারকে উৎসাহ দিচ্ছেন (সন্ত্রাসীদের) ‘নাম জানানোর জন্য'।

আমার নাম পিটার হলে কি হতো?’ নামক লেখায় জুহায়ের জিজ্ঞাসা করেছেন যে ধর্মান্তরিত হলে নাম পাল্টানো দরকার কিনা:

سؤال يخطر على بالي حين اسمع عن تحول احد غير المسلمين الى الإسلام. ا ذاو ما يفعل بعد النطق بالشهادتين هو تغيير اسمه الى اسم عربي. ولا ادري كيف أصبح الاسم العربي هو الاسم الإسلامي؟ وهل لو احتفظ الإنسان باسمه الذي سماه أبواه سيكون إسلامه ناقصا؟ ولست هنا اتحدث عن الناحية الشرعية اذ اني لا اعرفها ولكني أتسائل عن الحكمة وراء تغيير الأسماء. وهناك امر اخر فبعض أسماءنا العربية هي ترجمة لأسماء مسيحية او يهودية مثل يوسف وداود وهي أسماء أنبياء بني إسرائيل ونستخدمها نحن المسلمون. فهل يعني ذلك اني لو ترجمت احد أسماء الحواريين لاستطعت استعماله؟

আমি যখনই শুনি যে কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছে একটা প্রশ্ন আমার মাথায় আসে। শাহাদাহ ঘোষণার পর প্রথম যে কাজ তারা করে তা হল তাদের নাম পালটিয়ে একটা আরবী নাম রাখে। আমি বুঝিনা আরবী নাম কবে থেকে ইসলামিক হল। এটার মানে কি যে একজন ধর্মান্তরিত যদি তার বাবা মার দেয়া নাম রাখে তাহলে তার ইসলাম ধর্ম পালন কম হবে? আমি এখানে শরিয়া আইনের দৃষ্টিকোন থেকে বলছি না কারন আমি তা জানি না। আমি শুধুমাত্র নাম পাল্টানোর পিছনে যুক্তি ও জ্ঞানের কথা বলছি। আর একটা ব্যাপার আছে। আমাদের কিছু আরবী নাম খ্রীস্টান আর ইহুদি নামের ভাষান্তর যেমন ইউসুফ (জোসেফ) আর দাউদ (ডেভিড) যেগুলো বনি ইস্রাইলের নবীদের নাম আর যা মুসলিম হিসাবে আমরা ব্যবহার করি। এর মানে কি যে আমি যদি [জিশুর] অনুসারীদের নাম ভাষান্তর করি তাহলে আমি তা ব্যবহার করতে পারবো?

আলী আল ওমারি ভাবছেন যে অনলাইনে ছদ্মনাম ব্যবহার করা ভালো কিনা:

يتخّفى معظم كتاب المدونات والمنتديات خلف أسماء مستعارة أو أسماء وهمية, وقد يمتلك بعضهم عدة أسماء يكتب مرة تحت هذا الاسم ومرة تحت ذاك!!!
وقد يعتبر البعض أن هذه الظاهرة ظاهرة شكلية لا يجب الوقوف عندها أو السعي إلى التخلص منها, وأنا لا أتفق مع هذا البعض, بل أرى فيها أحد أهم العوامل المتسببة في فقر الويب العربي وتدني مستوى التواصل والحوار بين أفراده.
صحيح أن التخفي خلف اسم مستعار, من شأنه أن يمنح المتخفي هامشا أكبر من الحرية والانطلاق دون قيود, إلا أنه سيضعف لديه الإحساس بالمسؤولية الأدبية, وقد يبدد من نفسه الطاقة التي تدفعه إلى بذل الجهد في إنجاز عمل ما بشكل جيد.
بالطبع؛ لا مانع من أن يكتب البعض تحت اسم مستعار حين يكون هنالك ضرورة تسّوغ له ذلك, أما أن يتحول الإنرنت إلى حفلة تنكرية, فلا أظننا سنعزز من وجودنا في هذا العالم بهذا اللون من الهرب الجماعي.

অনলাইন ফোরামের অনেক ব্লগার আর মন্তব্যকারী ছদ্মনামের পিছনে লুকিয়ে থাকে। কারো কারো একের বেশী নাম থাকতে পারে, এক নামে এখানে আর আর এক নামে অন্যখানে লিখতে পারে! কেউ কেউ এই ব্যাপারটা একটা বাহুল্য বিষয় ভাবতে পারে যা বিবেচনা করা বা পাল্টানো উচিত না – তবে আমি এটার সাথে একমত না। আমার মনে হয় আরবী ওয়েবের খারাপ অবস্থার অনেক কারনের মধ্যে এটা একটা – যারা এটা ব্যবহার করে তাদের মধ্যে নিম্নমানের যোগাযোগ আর কথোপকথন। যদিও এটা সত্যি যে ছদ্মনামের পিছনে লুকালে লেখকের স্বাধীনতা বাড়ে আর কোন ধরনের বাঁধা ছাড়া সে লিখতে পারে, এটা তার লেখক হিসাবে দায়িত্বও কমিয়ে দেয় আর অনলাইনে এনার্জি দেখানোর প্রেরণা কমিয়ে দেয়। অবশ্য ছদ্মনামে লেখাতে কোন ক্ষতি নেই যদি তার পিছনে কারন থাকে- কিন্তু আমি মনে করি না যে আমাদের অনলাইনে উপস্থিতি ঠিকমত বোঝা যাবে যদি আমরা সবাই পালিয়ে ইন্টারনেটকে মুখোশধারীদের স্থানে পরিণত করি।

এর মধ্যে ব্লগার সামওয়ান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে সততাই সব থেকে ভালো নীতি:

الأسماء المستعارة تمنح صاحبها مجالاً واسعاً من الحديث في كل شيء، فللمستخدم مثلاً أن يتقمص فكراً ويكتب بلسانه ويشارك وينتقد ، وهو لا يعتقد بشيء مما يكتب ويقول، ومن دون أن يكون لحديثه أثر شخصي عليه سلباً أو إيجاباً ، وربما تعرض كلامه للسرقة الأدبية من دون أن يكون له الحق في الاعتراض القضائي لأنه مجهول أساسا

ছদ্মনাম লেখককে সুযোগ করে দেয় সব কিছু নিয়ে লেখার। লেখক একটা জিনিষ চিন্তা করে, লিখে, অংশগ্রহণ আর সমালোচনা করতে পারে এটা না ভেবে যে সে কি চিন্তা করলো আর কি বলল, আর এটার কোন ভালো বা খারাপ প্রভাব তার ব্যক্তিগত জীবনে পড়ে না। কিন্তু তার লেখা চুরি হতে পারে- আর আদালতে অভিযোগ করার তার অধিকার থাকবে না কারন প্রথমত: সে অচেনা।

…أما الأسماء الصريحة، فأول رسالة نفهمها حينما نقرأ اسماً صريحاً هي مسؤولية تحمل التبعات، وهذه مسؤولية عظيمة وخطيرة ، خصوصاً إن خاض المرء مخاض النقد ، فحالة المجتمع التي نحن فيها لا تسمح للناس بأن يفرقوا بين الكلمة وبين قائلها ، فكل ما يقوله يعود بشكل أساسي إلى شخصه. وكل النقد الذي يتفوه به المرء سوف تعود نتائجه في النهاية إلى رصيده الشخصي عند الناس حتى وإن كانت له سوابق تشفع له ، وهو ما يجعل علاقاته الاجتماعية في خطر محدق، بل في بعض الأحيان حالته الأمنية لن تكون على مايرام.

সত্যিকারের নাম নিয়ে, প্রথম যে জিনিষটা মাথায় আসে তা হলো যে কোন পরিণতির মুখোমুখি হওয়ার দায়িত্ব। এই দায়িদ্ব বিশাল আর গুরুতর, বিশেষ করে ব্লগার যখন আর একজনের সমালোচনা করছে। আমরা যে সমাজে বাস করি তা আমাদেরকে যে কথা বলা হয়েছে আর যে তা বলেছে তার মধ্যে পার্থক্য করতে দেয় না। যা একজন লিখবে তা তার উপর ফিরে আসবে আর প্রত্যেকবার সে কিছুর সমালোচনা করবে, তা তার ব্যক্তিগত হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে যদিও আগের কোন ঘটনায় তাকে মাফ করা যায়। এর ফলে তার সামাজিক সম্পর্ক বিপদের সম্মুখীন হয়, আর তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

انطلاقاً من المسؤولية الفكرية للكلمة التي نكتبها، ومن قيمي ومبادئي التي تفرض على المرء أن يخوض مبادرة الإصلاح والتغيير في شتى الميادين، ومن منطلقاتي التي تنص على تحمل التبعات الشخصية لما أكتب من أفكار ورؤى وتقبل النقد حولها بصدر رحب ، ومن رؤيتي التي تحتم على كل ناقد الإفصاح عن نفسه وشخصه، حتى يؤدي نقده غرضه،
فإني أعلن التالي:

أولاً: تغيير اسمي المستعار “someone” الذي أكتب به التدوينات إلى اسمي الصريح : فهد الحازمي.
ثانياً: الإفصاح عن ما يمكن الإفصاح عنه في صفحة النبذة الذاتية، مثل النشأة والدراسة وغيرها من الأمور.
ثالثاً: إمكانية استيراد البعض من كتاباتي ومقالاتي المنشورة في مواقع مختلفة مثل الإسلام اليوم ومجلة العصر وفضاء الفضائيات وغيرها إلى المدونة مع إضافة تعقيبات وأفكار جديدة حولها.
رابعاً: يُبلغ أمرنا هذا إلى الجهات المختصة.

والله يستر وبس ، ويعيننا على تحمل التبعات.

আমরা যা লিখি তার বুদ্ধিগত দায়িত্বও বহন করি, আর আমার ব্যক্তিগত মূল্যবোধ এই যে ব্যক্তির উচিৎ পরিবর্তন আনা আর জীবনের সব ক্ষেত্রে পুনর্গঠন করা। আর আমি বিশ্বাস করি যে কেউ কিছু লিখলে তার জন্য দায়ী থাকতে হবে আর যে সমালোচনা হবে তা গ্রহণ করতে সক্ষম হতে হবে। আমার মত যে একজন সমালোচকের নাম আর ব্যক্তিত্ব প্রকাশিত হওয়া উচিত তার লক্ষ্য পূরণের জন্য, এই ধারনা থেকে আমি নীচের ব্যাপারটা ঘোষণা করি:

প্রথমত: আমি আমার ছদ্মনাম ‘সামওয়ান’ থেকে পরিবর্তন করে আমার ব্লগে আমার নিজের নাম ফাহাদ আল হাজনি নামে লিখব।

দ্বিতীয়ত: আমি আমার প্রোফাইল পাতায় আমার সম্পর্কে যা জানানো সম্ভব যেমন শিক্ষা, সংস্কৃতি, বেড়ে ওঠা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরব।

তৃতীয়ত: অন্য সাইটে আমার যে লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছে, যেমন ইসলাম টুডেতে, তার থেকে যা সম্ভব উদ্ধার করে নতুন ধারণাসহ আমার ব্লগে যুক্ত করব।

চতুর্থ: সশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষ যাতে এই সিদ্ধান্ত জানতে পারে তা আমি চাই।

আর আল্লাহ যেন আমাকে রক্ষা করেন, আর এইসবের ফল বহন করার শক্তি দেন।

একজন ভুতপূর্ব আমেরিকান কূটনীতিক জন বুরজেস, যিনি সৌদি আরব সম্পর্কে ব্লগ করেন, নাম আর লজ্জার ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন তার ‘সৌদি আরবে নাম উচ্চারনের সময় হয়েছে‘ শীর্ষক লেখায়:

সৌদি আরবে একটা চল আছে- যেমন বেশীরভাগ আরব দেশে- নিজেদের খারাপ জিনিষ জনসমক্ষে প্রকাশ না করা, তা অন্য লোকের হলেও। যার জন্য আমরা অপরাধের কথা শুনি, কিন্তু কে করেছে তা কখনো জানতে পারিনা… এট বেশ বড় একটা ব্যতিক্রম ছিল ২০০৩ সালে যখন সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের রাজ্যে বসবাসরত আল-কায়দা সন্ত্রাসীদের নাম প্রকাশ করেছিল এবং যা সে দেশে প্রথম প্রকাশিত ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ (সন্ত্রাসীর) তালিকা ছিল। যদি সরকার স্বীকার করে যে জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, তাহলে তাদের দায়ীত্ব জনগণকে জানানো যে বিপজ্জনক লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা যথেষ্ট না যে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের খামখেয়ালিপনায় মুক্তি দেয়া। তাহলে এরা আবার জেলের বাইরে এসে অপরাধ করতে পারবে আর জনগণ সাবধানও হতে পারবে না। আরব সংস্কৃতিতে লজ্জা একটি শক্তিশালী অস্ত্র। সরকার আর মিডিয়ার এটা ব্যবহার করা উচিত, যখন দরকার, সমাজের কাজে লাগানোর সময় হলে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .