লেবানন: ত্রিপলীতে সন্ত্রাসী হামলা

উত্তর লেবাননের শহর ত্রিপলিতে একটা মিনি বাস যা লেবানিজ সেনা আর সাধারণ লোক নিয়ে যাচ্ছিল সেটাতে লক্ষ্য করে একটি বোমা বিষ্ফোরণ হয়েছে। একজন সাক্ষীর ভাষ্য অনুযায়ী বিষ্ফোরণ সকাল ৭.৫০ মিনিটে হয়। লেবানীজ সেনাবাহিনীর একটা বার্তা জানিয়েছে যে এই আক্রমণে ১১ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯ জন সেনা সদস্য আছে আর আহত হয়েছে ৩০ জন সেনা আর সাধারণ লোক। বার্তায় এই আক্রমণকে সন্ত্রাসী হামলা বলা হয়েছে যা সেনা প্রতিষ্ঠান আর লেবাননের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে লক্ষ্য করেছে। এই সন্ত্রাসী হামলা প্রেসিডেন্ট মিশেল সুলেহমানের সাথে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পরিকল্পিত শীর্ষ বৈঠকের কয়েক ঘন্টা আগে হয়। তিন বছরের মধ্যে এই শীর্ষ বৈঠক দুই দেশের মধ্যে এই প্রথম। লেবানিজ ব্লগে প্রথম কয়েকটা প্রতিক্রিয়া এখানে তুলে ধরা হলো:

বৈরুত স্প্রিং এর মুস্তাফা দেখিয়েছেন যে যখনই এই ধরনের একটা সন্ত্রাসী হামলা হয় তখন লেবাননের রাজনীতিতে আর জনগনের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে লেবানিজরা, তাদের পক্ষপাতিত্বের উপর ভিত্তি করে, সাথে সাথে বিপরীতমূখী দুই দিকে চিন্তা করেন:

যারা সিরিয়ার ধংসাত্মক হাত এখানে দেখতে চায় তারা না দেখে পারেনা যে যখনই কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতে যায় (বড় সিরিয়া বিরোধী মিছিল, আজকের ক্ষেত্রে দামাস্কে প্রথম স্বাধীন একজন প্রেসিডেন্টের সফর) কেউ কোথাও অনেক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করে।

‘মার্চ ১৪’ দলের এম পি. জাওয়াদ বলুস আজ সকালে ভি এল রেডিও স্টেশনকে জানিয়েছেন: “ত্রিপলির বিষ্ফোরণ প্রেসিডেন্ট সুলেহমানকে বার্তা দেয়া যে আজকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎে অনেক নিষিদ্ধ বিষয় থাকবে।”

অন্য দিকে তারা আছে যারা বিশ্বাস করে যে উত্তর থেকে যত খারাপ জিনিষ আসছে তা সবই মুসলিম গোড়া সন্ত্রাসীদের ও দানবদের কাজ যাদের সম্প্রতি তুলে ধরা হয়েছে ‘মার্চ ১৪’ এর সুন্নি বিভাগ দ্বারা (হারিরির আলমুস্তাকবাল মুভমেন্ট) যা শিয়াদের উত্তোরণ হেজবুল্লাহ আকারে থামানোর একটা খারাপ প্রচেষ্টা ছিল।

এই দলের চোখে, সন্ত্রাসীরা লেবানিজ সেনাদের বিরূদ্ধে তাদের প্রতিশোধ নিচ্ছে যারা তাদেরকে হেট করিয়ে অপমান করেছিল নাহের আল বারেদ ঘটনার সময়।

লেবানিজ চেস ব্লগের আন্তুন কিছু ছবি আর নতুন রিপোর্ট দিয়েছেন। তিনি বিষ্ফোরণের ব্যাপারে তার ধারণার কথা বলেছেন। তিনি মনে করেন এই বোমা হামলা সাম্প্রতিক জাতিগত সংঘর্ষ যা ত্রিপলির চারদিকে হচ্ছে তার সাথে সম্পর্কিত না। তিনি শেষ করেছেন এই বলে যে এই আঘাত ‘লেবাননের অভ্যন্তরিন নিরাপত্তার অভাবের প্রমাণ আর দুর্নীতি লেবাননবাসীর জীবনহানী ঘটাচ্ছে।”

এখনই বলা মুশকিল যে ত্রিপলির বাস বিষ্ফোরণের জন্য কে দায়ী। শহর আর এর বেশ কিছু আশেপাশের গ্রাম সম্প্রতি সুন্নি আর আলাওয়াইতের মধ্যকার জাতিগত দাঙ্গার সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু এটা মনে হয়না যে দুই দলের কেউ এই ধরনের একটা আক্রমন করবে, যেটাতে ইসলামিক কাজের ছাপ মারা আছে।

গত বছর নাহের এল বারেদ ইসলামিক মুভমেন্ট, ফাতাহ আল ইসলাম আর লেবানিজ সেনাদের মধ্যে একটা বড় ধরনের সংঘর্ষের কেন্দ্র ছিল। আজকের বাসে বেশ কিছু সেনা ছিল, যাতে মনে হয় যে তাদেরকে লক্ষ্য করা হয়েছিল। এই মাপের একটা বাসে আক্রমন আজকে করার জন্য প্রধান সন্দেহভাজন হতে পারে ফাতাহ আল ইসলাম।

দ্যা ওউয়েত ফ্রন্ট ব্লগ বিষ্ফোরণের পরের বেশ কিছু ছবি দিয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .