ভারত: আস্থা ভোট আর একটা পারমানবিক চুক্তি

এখনো সময় হয়নি ক্ষমতাশীন দলের তাদের রোমাঞ্চকর কিন্তু অল্পের জন্য জিতে যাওয়া “ভারত- আমারিকা পারমানবিক চুক্তির সিদ্ধান্ত বহাল” নিয়ে গর্ব করা, যা তাদের অস্তিত্বকে বেশ কিছুদিন ধরেই চুড়ান্তভাবে দিয়েছে। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে। লোক সভা টেলিভিশন ইন্টারনেট থেকে অনেক দর্শকের দৃষ্টি তাদের দিকে আকর্ষিত করেছে আর অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমদের তাদের সংবাদের জন্যে কষ্ট করতে বাধ্য করেছে।

এটা আমার আস্থা ভোট আর দরকার হলে আমি চিৎকার করবো” – মাহিমা কাউল তার ব্লগ ‘দ্যা লাইফ এন্ড টাইমস‘ এ লেখার এই শিরোনাম দিয়েছেন এবং সংসদের নিম্ন কক্ষের সংঘটিত ঘটনাবলীর সাথে তিনি আমাদের পরিচিত করিয়েছেন। তিনি লিখেছেন:

তারা সব জায়গা থেকে এসেছে; হুইলচেয়ার আর স্ট্রেচার (করে) – জেল (থেকে)। আর নাটকের জন্যে অপেক্ষা সার্থক হয়েছে! যখন বিজেপির ৩ জন এমপি এক কোটি টাকা কক্ষে দিয়েছেন তখনই সব কিছু পাল্টিয়ে গেল। পড়ে দেখেন কি ভাবে বিজেপির ঠিক করা নাটক আস্থা ভোট থামাতে পারেনি।

রাজনীতির এই চিত্র ফিনিক্স তার ব্লগ ‘পাব্লিক ডায়রি‘ তে তুলে ধরেছেন ‘ভারতীয় বিশাল নাটক: ব্যাপারটি কি আসলে‘ লেখায়:

বাম দল তাদের সমর্থন তুলে নিয়েছিল যখন ইউপিএ আমেরিকার সাথে ১-২-৩ চুক্তি থেকে পিছিয়ে যায় আর তখনি শুরু হয় সংখ্যার খেলা… যদি তেমন কিছুই হয় তাহলে বামের চলে যাওয়া কিছুটা শান্তির ব্যাপার ছিল কারন এর সাথে আশা জেগেছিল যে হয়তো সরকার যদি টিকে যায়, তাহলে কিছু সত্যিকারের সংস্কার হবে বামের সব সময়কার রাজনৈতিক চাপ ছাড়া। কারন গত ৪ বছরে ভারত প্রায় কোন বিপক্ষ দল দেখেনি, এনডিএ বেশীরভাগ সময় ঘুমাচ্ছে, আর সরকারকে নিজেদের মধ্যেই প্রাণপন লড়ে যেতে হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির কারনে।

এবার রাজনৈতিক দৃশ্যপট কিছুটা গরম হয়ে উঠলো বিজেপি পরিশেষে জেগে উঠায়…

টাকা ছড়ানো হচ্ছিল শুধু পারমাণবিক চুক্তির বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য। আর নিতা এর কারন তার ব্লগ ‘আ ওয়াইড এঙ্গেল ভিউ অফ ইন্ডিয়া‘ তে বলেছে ‘ঘোড়ার ব্যবসায়ী আর বিশ্বাসঘাতক যারা বাকি আছে তাদের মধ্যে‘ শিরোনামে তার লেখায়:

রাজনীতিবিদদের ভেতরে এতো দূর্নীতি আছে যে আমাদের কিছু এমপি স্বল্প পরিমান টাকা (৩০,০০০ রুপী থেকে শুরু) বানাতেও প্রবৃত্ত হয় শুধুমাত্র সংসদে প্রশ্ন উত্থাপন করার জন্যে আর বিজেপির এমন এমপিও আছে।

বাস্তবতা হচ্ছে যে সুইস ব্যাঙ্ক আকাউন্ট রাখাতে ভারত সবার আগে আর আমাদের জানার কোন উপায় নেই যে ওখানে কার আকাউন্ট নেই। যদিও সব ধরনের লোকের ওখানে আকাউন্ট থাকতে পারে, আমি নিশ্চিত যে আমাদের রাজনীতিবিদরা তাদের মধ্যে এগিয়ে। যারা আমাদের দেশকে সমৃদ্ধ করবে তারাই আমাদেরকে লুটছে!!

ভারতের মোট কতো টাকা সুইস ব্যাঙ্কে আছে তার হিসাব করলে ‘১৪৫৬ বিলিয়ন ডলার বা ১.৪ ট্রিলিয়ন ভারতীয় রুপী নিয়ে সুইস ব্যাঙ্কে বাকি দুনিয়ার থেকে বেশি টাকা ভারত সুইস ব্যাঙ্কে রেখেছে।’ কিন্তু সে বিরক্ত:

টেলিভিশনে লোক সভায় পারমাণবিক চুক্তির বিতর্ক যে সরাসরি দেখানো হচ্ছে (ঠিক আস্থা ভোটের আগে) এই রিয়ালিটি শো কে একটা ‘এ’ সাটিফিকেট দেয়া দরকার ছিল। বাচ্চারা এটা দেখলে তারা ক্লাসে কেমন আচরণ করবে বলে আপনার মনে হয়…! কিন্তু এইবার কোন সহিংসতা ছিলনা…চেয়ার ছুড়ে মারা, টানা টানি, ঠেলা ঠেলি, যে সব আমি টেলিভিশনে সংসদের সরাসরি সম্প্রচারে দেখেছি। আমার মনে হয় আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

সবার পরিশেষে, ভারতে প্রধানমন্ত্রীকে কয়েকটা জিনিষ বলার ছিল ইয়োসারিনের, যে বক্তৃতা মানমোহন সিং প্রস্তুত করেছেন কিন্তু এখনো দেন নি সে বিষয়ে। ‘অফস্টাম্পড‘ ব্লগে ইয়োসারিন লিখেছেন ‘মানমোহানের আস্থা ভোট- একটি উচ্চমুল্যের বিজয়‘ শিরোনামে:

আপনি ঠিক করেছেন ভারতকে পারমাণবিক শীতকাল থেকে বার করার কৌশলগত চেষ্টা করে। কিন্তু জনাব আপনি কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝাতে পারেননি আপনার রেকর্ডের উপর ভিত্তি করে আস্থা জানাতে। আপনি যথেষ্ট পরিমান সদস্যদের বোঝাতে পারননি যারা তাদের দলের সীমা পার হয়ে তাদের বিবেকের আওয়াজে সাড়া দেবে। প্রশ্নমুখর বিরতির উপর ভিত্তি করে এটা একটা উচ্চমূল্যের বিজয় আর এটা আপনার চুড়ান্ত বিকৃত মৈত্রীর শেষ হবার শুরু যা দুর্ঘটনাক্রমে দেখছে আপনাকে এই আগস্ট মাসে ক্ষমতায়।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষন এখানে পাওয়া যাবে। কারা আসল বিজয়ী? এই প্রশ্নের উত্তর এখানে আছে। গ্লোবাল ভয়েসেস এর দক্ষিন এশিয়া সম্পাদক নেহার মন্তব্য এখানে আছে

একটি বড় টেলিভিশন চ্যানেলের প্রচারিত নীচের ভিডিওতে সংসদের হট্টগোল দেখানো হচ্ছে যেখানে কিছু সদস্য ঘুষ দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে টাকার বান্ডিল দেখাতে থাকে:

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .