সৌদি আরব: হিজাব আর ফ্রান্স

২০০৪ সাল থেকে ফ্রান্স তাদের স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের কোন ধরনের ধর্মীয় প্রতীক আর ধর্মকে নির্দেশ করে এমন পোশাক পরতে নিষেধ করেছে – যার মধ্যে মেয়েদের ইসলামী মাথার কাপড় বা হিজাব রয়েছে। ব্লগাররা বলছেন যে সৌদি মহিলারা এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করছে ৪ বছর পরে।

সৌদি জিন্স ব্লগের আহমেদ আল ওম্রান একটি সংবাদপত্রের রিপোর্টের ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। এই রিপোর্টে ফ্রেঞ্চ এই নিষেধাঞ্জার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এক ছাত্রীর সাক্ষাৎকার আছে।

এই ব্লগার বলছেন:

কয়েক বছর আগে ফ্রেঞ্চ সরকার যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের ধর্মীয় প্রতীক নিষেধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখন এর প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাপীই হয়েছিল। বিশেষ করে অনেক মুসলিমের কাছে মনে হয়েছিল যে এটা সরাসরি হিজাবকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। আমার কাছে যেমন এই ফ্রেঞ্চ নিয়ম বোকার মতো মনে হয় প্রায় একি রকম বোকার কাজ মনে হয় ফ্রান্সে স্কলারশিপ পাওয়া কিছু সৌদি মহিলার এই নিষেধাজ্ঞার উপর তাদের মন্তব্যকে বিশেষ করে এটি তাদের পড়াশোনার উপর কি প্রভাব ফেলবে সেই সম্পর্কে তারা যা বলেছে।

পত্রিকায় সাক্ষাতকার নেয়া একজন মহিলা চান সৌদি কর্তৃপক্ষ যেন ফ্রেঞ্চ কর্তৃ্পক্ষের সাথে এই ব্যাপারটা ফয়সালা করে, যাতে সৌদি মহিলারা তাদের হিজাব রাখতে পারে। সৌদি জিন্স তাকে আক্রমণ করে বলেছেন:

একমাত্র উপায় আমাদের কর্তৃপক্ষ এটা ঠিক করতে পারে বলে আমি মনে করি। তাদের কেউ একজন ফ্রেঞ্চ নাগরিকত্ব নিক, তারপর সেখানকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জিতুক, আর তারপর সে সংসদকে এই আইন পরিবর্তন করতে বলুক। বেশ সহজ, তাই না? জনাবা আব্দুল হাদিকে কোন অপমান না করেই বলতে চাই যে আপনার কি মনে হয় না কয়েক ঘণ্টা ব্যয় করে ফ্রান্স আর এর আইন সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্য আপনার জানা উচিত ছিল এখানে স্কলারশিপের আবেদন করার আগে?

আর এক ছাত্রী এমনও আবেদন করছে যেন সরকার কর্তৃক ফ্রান্সের স্কলারশীপ বন্ধ করে দেয়া হয়। দু:খিত জনাবা, কিন্তু ফ্রেঞ্চ আইন আপনার বিশ্বাসের সাথে বৈপরীত্য তৈরি করে বলেই আপনি অন্যদের ভালো শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ নষ্ট করতে পারেন না যতক্ষণ এটা তাদের বিশ্বাসের সাথে ঠিক আছে।

একজন পাঠক হালা ইন দ্য ইউ এস এ আল ওম্রানের বলার ধরনে খুশি না। তিনি বলছেন:

সৌদি জিন্স আপনার ব্যঙ্গ পূর্ণ কথা আমার ভালো লাগে নি, ওই মেয়েগুলো এখানে মানুষ হয়েছে, মাথা ঢাকার এই চল এটা একটা পবিত্র ধারণা, আপনি কি করে এমন করে বললেন? মানুষ আইন সম্পর্কে কি ভাবছে তা বলতে পারে, আইন আর পলিসি সব সময় পরিবর্তিত হচ্ছে কোন নতুন আর যোগ্য মতামতের ভিত্তিতে আর গণতন্ত্র বাধ্য করে সবার এমন কি বিদেশীদের মতামত ভেবে দেখার… মানুষ ফ্রান্সের মতো মুক্ত দেশে তাদের মতামত জানাতে পারেন, তাই না!!!

ক্রসরোড অ্যারাবিয়া সংবাদপত্রের এই লেখা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন:

এই আরব সংবাদপত্রের খবর বলছে যে সৌদি মহিলারা ফ্রেঞ্চ মেডিক্যাল স্কুলে হিজাবের কারনে সমস্যায় পরছে। এই লেখা আর কিছু ছাত্রী গুলিয়ে ফেলেছে ফ্রেঞ্চ আইনকে যেখানে ধর্মীয় প্রতীক প্রাথমিক আর মাধ্যমিক স্কুলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ( যার মধ্যে কিপেহ, ইয়ারমুলকে আর বড় ক্রুশ ও মানা করা হয়েছে) আর মাথা ঢাকা মেডিক্যাল স্কুলে অস্বাস্থ্যকর বলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে – এই দুটির মধ্যে।

ফ্রেঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব পরা আইনত নিষিদ্ধ না। মেডিক্যাল স্কুলে অন্য ব্যাপার আছে। আমি বুঝি যে সৌদি মেডিক্যাল স্কুল এটা সমস্যা হিসেবে দেখে না কিন্তু ফ্রেঞ্চরা অন্য রকম ভাবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .