মরোক্কো, ইজরায়েল আর প্যালেস্টাইন: এক ইতিহাসের অংশ

৬০ বছর আগে নাকবা দিবস আর ইজরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণার দিন থেকে ইজরায়েল আর মরোক্কোর মধ্যে একটা মজার সম্পর্ক আছে। ইজরায়েল রাষ্ট্র তৈরির আগে, মরোক্কোতে প্রভাবশালী না হলেও একটি বিশাল ইহুদি জনসংখ্যা ছিল। ইজরায়েলের স্বাধীনতার এক দশকের মধ্যে এদের মধ্যে একটি বড় অংশ ইজরায়েলে চলে গেছে। আজকে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর মধ্যে মরোক্কোর সাথে ইজরায়েলের সরকারীভাবে খুব ভালো সম্পর্ক আছে, যার কিছুটা অত্র অন্চলে বাদশা দ্বিতীয় হাসান শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা হিসেবে। কিন্তু কূটনৈতিক শিষ্টাচারের আড়ালে বেশীরভাগ লোক প্যালেস্টাইনকে সমর্থন করে। নীচে ইজরায়েলের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসে কিছু মরোক্কোন ব্লগারের উক্তি তুলে ধরা হচ্ছে।

আল মিনারাত/দ্য মরোক্কোন মিরর ব্লগের হিশাম প্যালেস্টাইনের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা দেখিয়েছেন কিন্তু আশার আলো দেখেন তিনি:

নাকবার ৬০ বছর পর খুব কম করে বললে প্যালেস্টাইনের চিত্র হতাশাজনক। কিন্তু গত এক দশকে আমরা বিচার আর শান্তি বিষয়ে নবযুগের অভ্যুদয় আর জন জাগরণ দেখেছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত অস্পৃশ্য বিষয়কে ভাঙ্গা গেছে যা এতদিন ইজরায়েলকে শুধু প্যালেস্টাইনেই না বরং ন্যায় আর ইতিহাসের প্রতি অপরাধ করে পার পেতে সাহায্য করত।

আশার অনেক চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। ওমেরটার ঢাল আর বুদ্ধিজীবি সন্ত্রাসবাদ ভেঙ্গে যাচ্ছে। অনেক বেশী লোক এখন মুখর হচ্ছে, আর ইজরায়েলি লবির আরামদায়ক আশ্রয় মিলিয়ে যাচ্ছে ক্রমে।

তিনি পরে বলেছেন:

এখন সাধারণ ভাবেই অনেকে বলে: ‘আরে বাদ দাও, সব কিছু অতীত, কেউ এখন তাতে উৎসাহী না, ওটা কাজ করেনি, সবাই জানে আমেরিকান আর ইজরায়েলিরা কেমন, আর এ ব্যাপারে করার মতো তো কিছু নেইও, বাদ দাও, কে এটা নিয়ে চিন্তা করে?’ কিন্তু আমি এটা এ ভাবে বলতে চাই- যারা মৃত তারা এখনো আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, ন্যায়ের জন্য অপেক্ষা করছে।

আমাদের বরং প্যালেস্টাইনের জন্য আশা করতে আর হাসতে পারি।

মরোক্কোর সিনাগগ
মরোক্কোর একটি সিনাগগের (ইহুদী প্রার্থনাস্থল) অভ্যন্তরের কারুকার্য। ছবি -ওমর সিমখা -ক্রিয়েটিভ কমন্সের আওতায় ব্যবহৃত

রেগুলার কমেন্টেস বেইজড অন ইস্যুস রেইজড বাই বিবিসি ওয়ার্ল্ড হ্যাভ ইয়োর সে ব্লগ এর আব্দেলিলাহ বোউকিলি চান ইজরায়েল যাতে ন্যায়ের সাথে আচরণ করে:

মধ্য প্রাচ্যের দরকার একটা সত্যিকারের শান্তি নীতির যাতে সবাই শান্তিতে থাকতে পারে। ইজরায়েল যেখানে তার জন্ম থেকে বছর গুনছে অন্যরা হিসাব করছে, তারা প্যালেস্টাইনের উপর কত মৃত্যু চাপিয়ে দিয়েছে তা। যার ফলে এদের মধ্যে টম আর জেরীর মতো সম্পর্ক। তারা বিড়াল ইঁদুরের খেলা না খেললে শান্তিতে থাকতে পারে না, শুধু মজার জন্য বা গুরুত্ব সহকারেই।

একটা জিনিষ নিশ্চিত। ইজরায়েল একটি বাস্তবতা যা তার শত্রুরা মানুক আর না মানুক। তারপরেও ওদের প্যালেস্টাইনের প্রতি সহনশীলতা দেখাতে হবে যেহেতু তাদের অবস্থান এখন শক্ত। তাদের দুর্বল দিকের উপর ভিত্তি করে আপোস বিরোধী নীতি চালাতে থাকলে বর্তমান সংঘাত বাড়বে।

আশা করা যাক যে পরের জন্মদিনে ইজরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে বড় হবে যেখানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্ত থাকবে এবং প্যালেস্টাইনের স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে যেখানে তারা ইজরায়েলের বন্দী হিসেবে নিজেদের ভাববে না।

সম্পর্কিত এক খবরে এ মোরো ইন আমেরিকা ব্লগ মরোক্কো, ইজরায়েল আর স্পেনের মধ্যে পর্যটনের একটা উদ্যোগের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন:

ইজরায়েল, মরোক্কো আর স্পেনের মধ্যে একটা নতুন যৌথ পর্যটন প্রকল্প শুরু হচ্ছে যা দ্বাদশ শতাব্দীর তোরাহ পণ্ডিত আর চিন্তাবিদ রাম্বামের ভ্রমণের পথকে অনুসরণ করবে।

জেমাক মরোক্কোর পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মাদ বুশিদকে মঙ্গলবার আমন্ত্রণ করেছিলেন ইজরায়েল সফরের জন্য যেখানে সহযোগিতার ব্যাপার আর রাম্বাম থীমের উপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক ভ্রমনের ব্যবস্থা আলোচিত হবে।

ব্যাপারটা প্রথমে মরোক্কান পর্যটন মন্ত্রনালয়ে পেশ করা হয়েছিল ইউরোমেড এর সময়, যেটা ইউরোপ আর মেডিটেরিয়ানিয়ান অঞ্চলের পর্যটন মন্ত্রানলয়ের একটা কনভেনশন যা মার্চে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মন্ত্রনালয়রা রাজি হয়েছে এই প্রকল্পে সাহায্য করতে।

1 টি মন্তব্য

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .