বুলগেরিয়াঃ একজন মন্ত্রীকে পদত্যাগে কিভাবে বাধ্য করা যেতে পারে?

গত ১৮ মার্চ বুলগেরিয়ার অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিশেষ বিভাগের (জিডিবিওপি) ডেপুটি ডাইরেক্টর ইভান ইভানোভকে দুর্নীতি আর সংগঠিত অপরাধ চক্রের সাথে যোগাযোগ রাখার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনা জানাজানি হয়ে যায় ভূতপূর্ব জিডিবিওপি ডাইরেক্টর ভানিও তানোভ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আর পাব্লিক অর্ডার সংক্রান্ত সংসদীয় কমিশনের সামনে কথা বলার পর।

শুনানীর সময় বেরিয়ে আসে যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রুমেন পেতকোভ ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ মিটিং করেছেন কিছু কথিত অপরাধীদের সাথে। পেতকোভ তানোভের উক্তি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। পরে দেখা গেছে যে এমন মিটিং আসলেই হয়েছে।

১৯ মার্চ এর নিউজ কনফারেন্সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর খারাপ ব্যবহার ব্যাপক সমালোচনার উদ্রেক করেছে। জাতীয় টেলিভিশন এটা দেখায়নি, কিন্তু এটা একজন সাংবাদিক ইউটিউব.কমে আপলোড করেছেন।

এটি ইভান বেদ্রোভের  ব্লগেও প্রকাশিত হয়েছে। এই স্বনামখ্যাত সাংবাদিক আর ব্লগার ভেবেছেন (বুলগেরিয়ান ভাষায়) যে মন্ত্রী কি ওই সময় বেসামাল ছিলেন কি না।

তার কথায় মানুষ বিস্মিত হয়েছে। ইন্টারনেটে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে কিন্তু তিনি এতে রাজি না।

এই ব্যাপারে ইয়োভকো ল্যাম্ব্রেভ জানতে চেয়েছেন (বুলগেরিয়ান ভাষায়) যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বুলগেরিয়াতে আর কি কি হলে “তারা খারাপ ডিম, খারাপ পুলিশ আর খারাপ মন্ত্রীদেরকে লাথি মেরে তাদের যেখানে স্থান সেখানে পাঠাতে পারবে.. “

জুলিয়ান পোপভ লিখেছেন (বুলগেরিয়ান ভাষায়):

এই দেশে যে কেউ একটা মজার ব্যবসা শুরু করতে পারে। অফিস খুলে বাজী ধরতে পারে যে রুমেন পেতকোভ থাকবে না যাবে। তাকে বহিষ্কার করা হবে কিনা। তাকে নতুন জায়গায় বদলি করা হবে কিনা। অথবা বাজী ধরা যায় যে যা হওয়ার তা আসলেই হবে কি না ভবিষ্যতে। সপ্তাহে, মাসে, ছয় মাসে, বছরে? এটা পরিষ্কার যে রুমেন পেতকোভ তার দল আর ক্যাবিনেটের জন্য একটা বোঝা । অবশ্য বাজী ধরার মজা আছে যখন একটা জিনিষ যা হবে বলে সবাই জানে তা যখন আসলেই হয়। যখন সে আসলেই পদত্যাগ করবে তখন পেতকোভ গণিত নিয়ে কাজ শুরু করা যায়। এই গণিত হিসাব করবে যে সবার জানা একটা সত্যি স্বীকার করতে কত সময় লাগে।

পেয়ো পোপোভ লিখেছেন (বুলগেরিয়ান ভাষায়):

আজকাল আমার দিন গুলো ফাঁকা মনে হয় যদি রুমেন পেতকোভের কোন সংবাদ সম্মিলন রেকর্ড করা না থাকে। আমার ভাগ্য ভালো থাকলে তা দেখে আমি হেসে ফেলি তার সব স্মরণীয় উক্তি যেমন “তোমাদের রক্ত পিপাসু ইচ্ছা আমাকে অনুপ্রাণিত করে না।” কিন্তু তার নোংরামি তে আমি অবাক হই না।”

এই ব্লগার স্বীকার করেছেন যে একটা প্রশ্ন তিনি বুঝতে পারছেন না নিজে থেকে:

কি ঘটলে আমরা একজন মন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য হতে দেখব?

এই কঠিন প্রশ্ন পেয়োকে একটা সাহিত্য নির্ভর প্রতিযোগিতা শুরুতে অনুপ্রানিত করেছে এই আশায় “যে বুলগেরিয়ায় এমন একটা মাথা নিশ্চয়ই থাকবে যে এই ধরনের পদত্যাগের দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য ঘটনা প্রবাহ বোঝার ক্ষমতা রাখবে, তাই নয় কি?”

অংশগ্রহণ কারিদের একটি ছোট গল্প লিখতে হবে যেখানে একজন মন্ত্রীর পদত্যাগের জন্য দায়ী ঘটনা বর্ণনা করতে হবে আর তার লিঙ্ক বা ফাইল পাঠাতে হবে। ব্লগার টাকা তুলছেন সেরা লেখককে পুরস্কার দেয়ার জন্য।

মজার মনে হতে পারে কিন্তু বেশ কিছু ব্লগার এই ফান্ডে টাকা দিয়েছেন আর স্থানীয় বিখ্যাত ব্লগার বোগোমিল শোপভ কথা দিয়েছেন যে সেরা গল্প দিয়ে তিনি একটা ছবি বানাবেন। ১৯টি ছোট গল্প জমা পড়েছে আর ৮ই এপ্রিল এর শেষ সময়ের আগে আরো মনে হয় জমা হবে, আর জনগণ চিন্তা করছেন কে জিতবে আর গল্পে বর্ণিত কিছু ঘটনা সত্যি হতে পারে কিনা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .