লেবাননঃ প্রেসিডেন্ট বিহীন

নির্বাচনের শেষ সময় ২৪ নভেম্বর ২০০৭ এ পার হওয়ার পর থেকে লেবাননে কোন প্রেসিডেন্ট নেই। রাজনৈতিক ঝামেলা চলছে। বেশ কয়েকবার বিদেশী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বিভেদের সমাধানের জন্য কিন্তু কোন ফল হয়নি। সব শেষেরটি ছিল আরব লীগের চেষ্টা, যেটা এই সপ্তাহে চলছে। এখানে লেবানীজ ব্লগাররা এই প্রেসিডেন্ট না থাকা আর তার ফলে যে রাজনৈতিক অবস্থা তৈরি হচ্ছে তা সম্বন্ধে কি বলছেন তার নমুনা দেয়া হলো।

এই স্থবির অবস্থা শেষ করার জন্য বৈরুত লেটার প্রস্তাব করেছেন সংসদের পুন:নির্বাচন যার ফলে নতুন প্রতিনিধি আসবে যারা শাসনতন্ত্রের নতুন ব্যবস্থা প্রেসিডেন্টসহ করবেনঃ

এখন হয়তো আমাদের নতুন নির্বাচন দরকার। এটাই তো বিরোধী দল এক বছর আগে চাচ্ছিল। এখন আমরা যে স্থবির অবস্থায় আছি তাতে এটি গুরুত্ব সহকারে ভাবার সময় এসেছে আর এবার গত বছর নির্বাচন কমিটি যে নির্বাচন আইন প্রস্তাব করেছিল তা ব্যবহার করা যায়। তাহলে সবাই বেআইনি সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বাদ দিয়ে লেবাননের সবার জন্য একটা সমাধান পেতে পারে।

সব শেষ আরব প্রচেষ্টার সফলতা সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে বিলাদ এল শাম ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন যে এটা সফল হবে না আর পুর্বের মতো এটিও অসফল হবে :

আমার কথা মনে রাখেন: এই চমৎকার আরব চেষ্টার ফল আগের মতোই হবেঃ বেশী খুশি হয়ে আলিঙ্গন (এখন যা হচ্ছে); আগে হয় নি এমন সফর (আবার); আগে ঘোষণা করা সফরের স্থগিত ঘোষণা (আবার); আরো একই জিনিষ, আরব চেষ্টার সফলতা ঘোষণা; দুই পক্ষের অভিযোগ আর ব্যর্থতার জন্য একে অপরকে … এখন আসবে নতুন ইউরোপিয়ান চেষ্টা।

মার্ক্সিস্ট ফ্রম লন্ডন আলোচনা করেছেন প্রেসিডেন্সি যার মধ্যে তাদের ঐতিহাসিক আর বর্তমান সাংবিধানিক ক্ষমতার কথা আছে। তিনি ব্যাখা করেছেন কি করে এই ক্ষমতা তাইফ চুক্তির মাধ্যমে কমানো হয়েছে যা ১৯৮৯ এ লেবাননের গৃহযুদ্ধ শেষ করেছিল। তিনি বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হচ্ছে সমস্যার মূল, তবে আরো গুরুতর সমস্যা আছে যা শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে সমাধান হবে না:

ব্যাপারটি এখনো ওখানে আসেনি। প্রেসিডেন্ট দুটি জোটের মধ্যে কি করবেন যারা বিগত ১ বছরে দেশটাকে পঙ্গু করে ফেলেছে। আওন আর হারারি জু মনে হচ্ছে ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টের থেকে শক্তিশালী। প্রেসিডেন্টের পাগলামির উপসর্গ দেখা দিতে পারে দুই পক্ষকে খুশি রাখতে গিয়ে। আসলে, দুই দৈত্যের ভিতর এমন একজন প্রেসিডেন্ট কিছুই না। দুই জোটের মধ্যে বিরোধ চলতেই থাকবে আর মাঝে তিনি একটা নুড়ির মতো। তাই প্রেসিডেন্ট নিয়ে এতো হইচই কেন? আমরা সপ্তাহের পর সপ্তাহ প্রেসিডেন্ট ছাড়া থেকেছি। কার আবার প্রেসিডেন্ট দরকার? ( লোভী রাজনীতিবিদ ছাড়া!!!) আমরা সবাই জানি যে এই স্থবির অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টের চেয়ার কোন উত্তর দিতে পারবে না কারন সব বর্তমান রাজনৈতিক দল প্রোলিটারিয়েটের আড়ালে ক্ষমতা লোভী।

বৈরুত টু বেল্টওয়ে আরব লীগের পদক্ষেপের ব্যাপারে আর তারা কি অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে সেই ব্যাপারে আলোচনা করেছে :

কিন্তু শয়তান তার প্রতিরুপে উপস্থিত। সিরিয়া বলতে পারে যে এই পরিকল্পনা তারা সমর্থন করছে, কিন্তু আমরা এখনো জানি না যে নির্বাচন কেমন হবে। বিরোধী দল লেবানীজ মন্ত্রিসভার সাংবিধানিকতা স্বীকার করে না যারা সংবিধান সংশোধনের একটা প্রস্তাব দিয়েছে যার ফলে আমি জেনারেল নির্বাচিত হতে পারবেন। হিজবুল্লাহ'র মিডিয়া প্রধানমন্ত্রীকে আমেরিকার এজেন্ট বলছে। নাসরাল্লাহ তার শেষ মিডিয়া বাণীতে সিনিয়রাকে ১০ দিন সময় দিয়েছে যার পরে একটা সরকার বিরোধী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে, যে পরিকল্পনা বিরোধী দলে তার বন্ধুদের সমর্থন পায় নি।

জেহা'স নেইল দেশের সব রাজনৈতিক দলকে একত্রে দেখে বলেছেন যে তারা গত ৩ বছরে কিছুই অর্জন করতে পারেনি :

… আর সব দল ২০০৫ থেকে তাদের কাজের কি প্রমান দিতে পারে? কিছু না। তারা সবাই দেউলিয়া…

লেবানন আপডেটেও আরব প্রচেষ্টা নিয়ে লিখেছে আর ব্যাখ্যা করেছে যে তারা তাইফে হারানো কিছু ক্ষমতা প্রেসিডেন্টকে ফিরিয়ে দিতে চায় :

এই সমাধান প্রেসিডেন্টকে অনেক বেশী ক্ষমতা দেবে আর কার্যত তাইফ চুক্তিকে অগ্রাহ্য করবে যা মার্চ ৮ চিন্তা করছিল আর মার্চ ১৪ কোন ধরনের পরিবর্তনের বিরোধিতা করেছে যা তাইফ চুক্তির বিরোধী। এখন মার্চ ১৪ আরব লীগের প্রস্তাবকে সমর্থন করছে খুব সম্ভবত: তারা যে প্রার্থী চায় তা পেয়েছে বলে , জেনারেল মাইকেল সুলেমান । তারা নিশ্চয় নিশ্চিত যে উনি তাদের পক্ষে।

এটা লেবাননে প্রেসিডেন্ট বিহীন পরিস্থিতির এক ঝলক। পরের সপ্তাহে আরো জানতে আসুন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .