নতুন ব্লগাররা কবিতার মাধ্যমে তাদের সমাজ, বন্ধৃত্ব আর অনুভবকে প্রকাশ করছে

প্রথমে এটি রাইজিং ভয়েসেস এ প্রকাশিত

আমরা ধরে নিতে পারি যখন থেকে ভাষার অবয়ব দেয়া হয়েছিল তখন থেকেই কবিতা বা পোয়েট্রি (গ্রীক ‘পোয়েজিজ’ – “তৈরি করা” থেকে) হয়েছে আমাদের দু:খের বিবরণ, আনন্দের বহি:প্রকাশ এবং আমাদের সেই অজানা বা অচেনা ভালবাসা বা শোকের অভিব্যক্তি। যদিও এই সংশয়ের কমতি নেই যে বিট এবং বাইটের ডিজিটাল যুগে কবিতার ঐতিহ্য ক্রমেই বিলুপ্ত হবে, আমরা বেশ কিছু লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি (ব্লগিং কবি এবং কবি ব্লগারদের আদলে) যে কাব্যের নান্দনিকতা ও রস এখন আরও দূর দূরান্তে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারছে।

রাইজিং ভয়েসেস ব্লগ প্রসার প্রকল্প বেশ কিছু উদীয়মান নাগরিক সাংবাদিকের জন্ম দিয়েছে কলম্বিয়া, বলিভিয়া এবং বাংলাদেশে। তারাও আবিষ্কার করছে কাব্যের শক্তি যা অনায়াসেই মানুষের আবেগের প্রকাশ করতে পারে যা আমাদের কাছে এনে দেয়। এই প্রকাশের মধ্য যে স্থানীয় বিভিন্নতাগুলো রয়েছে তা বিভিন্ন সমাজকে বৈশিষ্টমন্ডিত করে তোলে।

কবিতা সবসময়ই অনুবাদের জন্যে বেশ কঠিন একটি বিষয়। সে জন্যেই আমরা মূল বাংলা এবং স্প্যানিশ ভাষার কবিতার চরণের সাথে সাথেই ইংরেজী ভাষায় আমাদের যথাসাধ্য অনুবাদগুলো রাখছি। (মূল লেখায় দ্রষ্টব্য, এখানে শুধু বাংলা অনুবাদ দেয়া হলো: অনুবাদক)

শ্রদ্ধান্জলি – কারমেন এলেঙ্গা পানিগুয়া (হাইপারবাররিও প্রকল্প)

অনুপস্থিতির গীত

কেঁদো না আমি যখন চলে যাব- তোমাকে ফেলে যেতে হবে এক কোনে
অথবা চিরকালের জন্য;
ভুলো না যে আমার কন্ঠ লিপিবদ্ধ হয়ে আছে
তোমার ওদরে।
ভুলো না যে আমার পদচিহ্ন রয়েছে তোমার সারা শরীরে
এবং স্মৃতি রোমন্থনের সময় তুমি জানো আমাদের গীত কিভাবে গাইতে হয়।
তোমার দু:খ এবং আমার কান্নার সুর নীচু কর্ডে হওয়ায় অনেক বারই ভুল বোঝাবুঝির
কারন হয়েছে এবং আমার অশ্রু ঝরে যাচ্ছে তোমার শোকের প্রতিদ্ধনিকে আটকাতে।
আমার অনুপস্থিতিতে দুর্দশাগ্রস্ত হয়ো না; তোমার ক্ষীণকায় দেহকে প্রশান্তি দাও কোন এক
রাত পর্যন্ত, যখন আমি ফিরব এবং আমরা দুজনে আবার চিরন্তনী গান গাইব।

আমরা নারী – শারমিন চৌধুরী শিখা (নারী জীবন প্রকল্প)

আমরা নারী

জেগে উঠ আজ, জেগে উঠ
বসে থেকো নাকো
সময় হয়েছে গো, সামনে যাবার
কেন বসে থাকো?
কেন ভিরু লাজ?
সামনে অনেক কাজ,
কেন বসে আছো, আধাঁরের ঘরে?
কেন কাটিয়ে দিচ্ছ জীবন, ধুঁকে ধুঁকে মরে?
বিশ্ব আজ আলোকিত, চারদিক উচ্ছাসিত।
তুমি কেন আধাঁরে, হয়ে আছো নিপতিত?
বেরিয়ে আস ঐ ঘর থেকে
তাকিয়ে দেখ নারী বিশ্বের দিকে।
বসে নেই তারা হাত পা গুটিয়ে
বাহিরে আসছে আধাঁর কাটিয়ে।
উন্নত দেশ, উন্নত বিশ্বে
নারীরা আজ অনেক শীর্ষে।
জ্ঞান চক্ষে তারা করছে অনেক ভালো
পালিয়ে যাচ্ছে সকল আধাঁর কালো।
হে মহীয়ান নারী
গর্জে উঠে একবার বল
আমরা পারি, সবই পারি
আমরা নারী।

ঘোষনা – দিয়েগো হসপিনা (হাইপার বাররিও প্রকল্প)

ঘোষণা

সুন্দরী – তোমার একটি চুমুর বিনিময়ে আমি একটি কথা দেব
এটি একটি ভাল বিনিময় কারন এই চুমু আমার সত্বাকে টলিয়ে দেবে
হৃদয়কে এত আনন্দ যোগাবে যে নাড়ী দ্রুত লয়ে চলতে থাকবে
এবং ভেজা ঠোঁটের স্বাদ পাব আমরা; সেই কথাটি
শোনা হলে আমাদের জীবনের ধারণা পাল্টে যাবে
এত যন্ত্রণা ও মৃত্যুর ব্যাপার গুলি বোঝা যাবে
এবং এক চমৎকার উদঘাটনকে অনুপ্রাণিত করবে।

কোন একদিন – জিনাত আরা আমজাদ (নারী জীবন প্রকল্প)

কোন একদিন

অজানা, অচেনা হয় যদি চেনা-জানা
কোন একদিন……..
তুমি, আমি ডানা মেলা
যেদিন আকাশ হবে নীল।

চোখে চোখে কথা বলা
না বলা যত কথা হবে সেদিন,
যেদিন হবে তোমার আমার
প্রণয় মালার দিন।
দিন-ক্ষণ জানি না,
সময়-অসময় বুঝি না,
কোন বাঁধা মানি না-
যদি না বাজাঁও ভালোবাসার বীণ ।

এন্ডেজের হৃদয় থেকে – হুয়ান এইচ আপাজা (ভসে বলিভিয়ানা প্রকল্প)

এন্ডেজের হৃদয় থেকে

ব্যাথার চিৎকার শোনা যায়
গল গল করে পড়তে থাকা রক্ত থেকে
পাঁচ শতাব্দীর নি:স্তব্ধ অনুপস্থিতির পর
এক হৃদয় উপস্থিতি ঘোষণা দেয়

এন্ডেজের গহীন পরিখা থেকে
যেখানে পৃথিবীর এক আত্মা আছে
আছে প্রতিফলন, সঙ্গতি, শ্রদ্ধা এবং জীবন
আছে আইনি, দেয়া নেয়া এবং কৃতজ্ঞতা।

বিশ্বকে বদলে ফেলা সম্পন্ন হয়েছে
সেই বিজয়ের দিন এসে গেছে
বেণী করা চুল গুলো নাচছে
পান্কারা গর্জন করছে, সিকাস
এবং থার্কা চিৎকার করছে
এন্দেজের হৃদয় ফিরে এসেছে।

তোমার শরীর তারা ভেঙ্গে ফেলেছিল সবার সামনে
রাস্তা এবং চত্বর দিয়ে টুকরো গুলো টেনে নিয়ে গিয়েছিল
তোমার মনকে বিদ্রূপ করেছিল..
তোমার হৃদয় ওয়াকা  হয়ে গিয়েছিল
তবুও তোমাকে তারা মারতে পারে নি

এন্দেজের হৃদয় ফিরে এসেছে,
হাজার আত্মার গর্জনে এটি চলছে
তোমার বীরত্ব এখনও অপ্রচ্ছন্ন জিলাতা
জুলিয়ান আপাজা….টুপাক কাটারী

বন্ধু- জোসমিন আরা আমজাদ -(নারী জীবন প্রকল্প)

বন্ধু

বন্ধু মানে ভালো লাগা
দুটি হৃদয়ের ভালোবাসা।
বন্ধু মানে একটু আশা
মনের মাঝে স্বপ্ন বাঁধা।
বন্ধু মানে একটু ছোঁয়ায়
পরশ লাগে যত।
বন্ধু মানে ছুটে চলা
জোড়া শালিকের মত।
বন্ধু মানে উদার আঁকাশ
মেঘলা রোদের ঘর।
বন্ধু মানে স্নিগ্ধ আলোয়
শিশির ভেজা ভোর।
বন্ধু মানে বেজায় খুশি
একটু অভিমান।
মনের মাঝে কোথায় যেন
একটু খানি টান……

অনুবাদ: ডেভিড সাসাকি এবং রেজওয়ান

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .