জাপানঃ সুমো মল্লযুদ্ধের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে

জাপানের জাতীয় খেলা সুমো মল্লযুদ্ধের খারাপ সময় যাচ্ছে কত কয়েক মাস ধরে। প্রথমে, মঙ্গোলিয়ার কুস্তিগীর আসাশোর‌ইয়ু, দুই ইয়োকোজুনার (শীর্ষ মল্লযুদ্ধের ক্লাস) মধ্যে একজন মানসিক সমস্যার জন্য তার দেশে ফিরে গেছে চিকিৎসা করাতে। এ সমস্যার উদ্ভব হয় তাকে তিরষ্কার করার পরে যে অসুস্থতার ভান করে সে তার কর্তব্য পালন করেনি। মঙ্গোলিয়ায় তোলা ভিডিওতে দেখা যায় যে সে ফুটবল খেলছে। মিডিয়ার একটা অংশ ধুয়া তুলেছে যে জাপানের ঐতিহ্যবাহী এই জাতীয় খেলা বিদেশী খেলোয়াড়দের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অথচ জুনে সমস্যা খারাপ মোড় নিয়েছিল যখন ১৭ বছরের কুস্তিগীর তাদাশি সাইতো (তার রিংয়ের নাম টোকিটাইজান) একটি ট্রেনিং সেশানের পরে মারা যায়। প্রথমে তার প্রশিক্ষক তকিতসুকাজে বলেছিল যে ক্লান্তির কারনে তার মৃত্যু হয়েছে কিন্তু পরে দেখা গেল যে তাকে তিরস্কার ও চাপ প্রয়োগের ফলে তার মৃত্যু ঘটে। তকিতসুকাজেকে সুমো এসোসিয়েশন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

অনেক ব্লগার তার সাথে যে ব্যবহার করা হয়েছে তা আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে তাকে যে খালি বিয়ারের বোতল দিয়ে মারা হয়েছে তারও উল্লেখ ছিল । একজন ব্লগার লিখেছেন:

তাকে কথা দিতে বাধ্য করা হয়েছে যে সে আর কখনো পালাবে না আর ভালো করার প্রানপন চেষ্টা করবে। তারা তার মোবাইল ভেঙ্গে দিয়েছেল যাতে সে তার মা-বাবার সাথে যোগাযোগ করতে না পারে। এটি ভীতিজনক, মানুষ কি এমন করতে পারে?

ব্লগার মাটিমুলোগ সর্বত্র ছড়ানো হতাশার অনুভুতিকে পুন:ব্যক্ত করেছেন যে কেমন করে এতদিন পরে সুমোদের যে তিরস্কার করা হয় তা এই ধরনের একটি নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ হলো।

মনে হচ্ছে যে একটা তরুন মল্লযোদ্ধার মৃত্যুর দরকার ছিল বিষয়টি লোকের সম্মুখে আনার জন্য। ওখানকার পরিবেশ এমন যে এরকম আঘাত রোজকার ব্যাপার মনে হয়, আর একটি মৃত্যুই শুধু দেখাতে পারলো সমস্যা কোথায়, কারন মনে হয় মানুষ মনে করে যে এরকম সংঘাতময় পরিবেশ ছাড়া তরুন কুস্তিগীররা শক্ত হবেনা। এটি জাপানের লজ্জা হিসাবে দেখা উচিত, তাদের জাতীয় খেলা হিসাবে না।

সবার একটি একটি সাধারন কৌতুহল এখন সুমো এসোসিয়েশনের দায়িত্ব নিয়ে। ব্লগার শোশান নো ব্লগ লিখেছেন:

সাইতোর মৃত্যুর পর পর সুমো এসোসিয়েশন তার প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জবাবদিহি তলব করেছে এর কারন সম্পর্কে। কিন্তু তার সাক্ষাৎকার দ্বিতীয়বার নেয়া হয়েছে শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রানলয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে যখন তকিতসুকাজে পুলিশকে বলেছে যে সংঘাত এখানে জড়িত ছিল। সে প্রথম সাক্ষাৎকারে একটি অন্য বক্তব্য দিয়েছিল।

অবশেষে তকিতসুকাজের উপর দোষ স্থাপন করে ব্লগার ইগাজিন নো তেন্সাই জিঙ্গো সুমোর অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা বলেছেন

এখনি সুমোতে যেতে আগ্রহী তরুনদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যদি তকিতসুকাজেকে সুমোর জগত থেকে বের করে না দেয়া হয় তাহলে এই ক্রীড়া ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

কে জানে সুমোর জগতে আর কি বিপদ আসবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .