তাজিকিস্তানঃ নতুন পরিবর্তনের সাথে পরিচিত হোন

সম্প্রতি কিছু বিশেষঞ্জ আর ব্লগাররা ‘ধর্ম সম্পর্কে করা নতুন আইনের খসরা” নিয়ে আলোচনা করেছেন যা তাদের মতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিপদ্গ্রস্ত করবে। মুসলিমরাও এই সংস্কার নিয়ে চিন্তিত কারন এটা যদি সংসদ দারা গৃহীত হয় আর ঠিকমত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্বারা প্রয়োগ করা হয় তাহলে মসজিদের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তাছাড়া, এতে ৭ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া যাবে না।

এই আইনটি আইন দুই ধরনের বাধা তৈরি করবে – একটা ইসলামের জন্য আর একটা অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য – যা আমরা পরে দেখব। আইনটি ইসলাম ধর্মের উপর সরাসরি প্রয়োগ হয়। মসজিদের সংখ্যাকে নিয়ন্ত্রন করা হবে – মফস্বলে প্রতি ২০,০০০ লোকের জন্য একটি মসজিদ , শহরে ৩০,০০০ এর জন্য একটি আর রাজধানি দুশানবেতে ৮০,০০০ জনের জন্য একটি।

স্ট্যাটগাই বলছেন যে সব ধরনের ধর্মপ্রচারমুলক কাজ সম্পুর্নভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি মনে করেন যে নতুন আইনের আওতায় যে কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন হওয়া অনেক কঠিন হবে।

আইনগত নিবন্ধনের জন্য যদিও কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আবশ্যকীয় বিপুল পরিমান সই যোগাড় করে কমিউনিটি থেকে তার পরও অনুচ্ছেদ ২০ অনুযায়ী রাষ্ট্র আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উভয়কে অনেক কাগজপত্র নিবন্ধনের দরখাস্তের সাথে দিতে হবে।

তাজিকিস্তানে ভারতীয় সামরিক ঘাটি স্থাপনা নিয়েও ব্লগে আলোচনা হয়েছে। আইনি বিমানবন্দরে এই ঘাটি অনেক আগের ঘটনা কিন্তু সরকার তা অস্বীকার করে যাচ্ছে। ভারতীয় ব্লগাররা ভারতকে পরবর্তী মহাশক্তিরুপে বর্ণনা করছে আর তারা মনে করে যে তাদের ভারতের বাইরে মিলিটারী ঘাটি থাকা দরকার আর আইনি বিমানবন্দর দিয়ে তা শুরু করা যায়। হারশা আর তার বন্ধুরা তাজিকিস্তানে ভারতের মিলিটারী ঘাঁটি থাকার সুবিধা আলোচনা করেছেন:

তাজিকিস্তানের সাথে সীমান্ত আছে চীন, আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান আর কিরগিজস্তানের আর পিওকে থেকে আফগানিস্তানের একটুকরো জমি একে আলাদা করে। পাকিস্তানের সাথে যদি যুদ্ধ হয় তাহলে ভারত দুই দিক থেকে পাকিস্তানকে আক্রমন করতে পারবে, এই বেসের এটি সব থেকে বড়ো সুবিধা।

নারকোটিক্স এর সমস্যা তাজিকিস্তানে অনেক দিনের আর ওলগা বর্তমান পরিস্থিতির খুব ভাল বর্ননা দিয়েছেন। মাদক পাচার নিয়ে কি হচ্ছে তাজিকিস্তানে তা নিয়ে ওলগা বিস্তারিত লিখেছেন।

ওলগার পোস্টটির পরিপুরক হিসেবে ডেভিড ট্রিলিং বেশ কয়েকজন মাদকাশক্ত রাশিয়ান মেয়ের গল্প বলছেন আর কি করে তারা এই দেশের সমস্যার সম্যুখিন হয় তা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি সিআইপিএতে ২য় বর্ষের এমাইএ হিসাবে আছেন আর বর্তমানে তাজিকিস্তানে কাজ করছেন মধ্য এশিয়াতে হেরোইন ব্যবসার উপর একটা ডকুমেন্টারি নিয়ে।

তাদেরকে অত্যাচার করা হয়, কন্ডোম ছাড়া যৌন কাজে লিপ্ত করা হয়, আঘাত করা হয় আর সিগারেট দিয়ে পোড়ানো হয়। তারা সব সময় পুলিশ থেকে পালিয়ে থাকে (কারন পুলিশ ধরলে কয়েকদিন ধরে তাদের লাগাতার ধরষন করে) এবং তারা তাদের বাসাতে গোসল পর্যন্ত করতে পারে না। তাদের একমাত্র পানির উৎস হচ্ছে সামনের উঠানের একটা ছোট কলতলায় (যখন পানি আসে) যে স্থানটি মনে হয় টয়লেট হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।

বনি বয়েড মধ্য এশিয়া থেকে জানিয়েছেন যে তাজাক সরকার বিশ্ব ব্যাংকের সাথে তুলার কারখানায় লগ্নি করার চেষ্টা করছে। সুতা ব্যবসা এখানে একটা বড়ো ব্যবসা কিন্তু লগ্নির অভাবে তা অলাভজনক হয়ে যাচ্ছে। বনি মনে করেন যে টাকার ব্যবস্থা যদি করাও যায় কিন্তু বর্তমানে সুতা কারখানার সমস্যা দূর করা কঠিন হবে।

… এই ইন্ডাস্ট্রিতে মুল্য সংযোজন করার মত ব্যবস্থা নেই আর জিন্নিং আর বেলিং এর ব্যবস্থা বা পর্যাপ্ত গুদামও নেই তুলার কারখানাগুলিতে…

তাজিকিস্তানের সুতা চাষের আর একটা দিক হল যে এখানে মধ্য আর লম্বা আঁশের সুতা হয় (লম্বা আঁশের সুতা সব থেকে দামি রেশমি সুতা তৈরি হয়) আর তাই মূল্য সংযোযন করতে গেলে এখানে খরচ বেশি হয়।

ডেভিড ট্রিলিং তাজিকিস্তানে পুলিশের দূনীতির উপরও লিখেছেন। ওনার ক্যামেরা দেখে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশ একবার ঘুষ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল:

দুশানবের মুল রাস্তায় ৫০-১০০ মিটার দুরত্বে বড় বড় টুপি পড়া ২ জন পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে। সারা দিন, সপ্তাহের ৭ দিন তারা তাদের লাঠি দিযে যে কোন চালককে আটকিয়ে কাগজ দেখার নাম করে ঘুষ চায়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .