#ডিজেড ২০১৪, আলজেরিয়ায় প্রতারণা এবং একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক হ্যাশট্যাগ

[উল্লেখিত লিঙ্ক ছাড়া সকল লিঙ্ক ফরাসী ভাষার]

আলজেরিয়া এক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। দেশটির ভবিষ্যৎ এখন বিপদের মুখে। ১৭ এপ্রিল–এ এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। ১৫ বছর ধরে শাসন করার পরও দেশটির রাষ্ট্রপতি আবদেলআজিজ বুতাফ্লিকা আরো একবার উক্ত পদে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করে চতুর্থ দফা রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তার এই ঘোষণাকে মোটেও স্বাগত জানানো হয়নি এবং অনেকে এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের প্রতি তাদের বিরোধিতা তুলে ধরেছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ও ওয়েবের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত করা হয়।

আর এর সকল কিছুর শুরু হয়, ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখে ফেসবুকে, আলজেরিয়ার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ রাজধানীর এক উপকণ্ঠ ও এলাকা বোউজারেহ-তে [ইংরেজী ভাষায়] আলজেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের [ইংরেজী ভাষায়] সামনে জড়ো হয়। প্রতিবাদকারীর স্লোগানে তাদের ক্ষোভ এবং রাগ প্রকাশিত হচ্ছিল। পরিবর্তনের প্রতি তাদের প্রবল ইচ্ছা তাদের দাবীর মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হচ্ছিল। কিন্তু বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু হতে না হতেই পুলিশ ওই সমস্ত বিক্ষোভকারীদের উপর হামলে পড়ে এবং গ্রেফতার করে। এটি সমাবেশের উপর তৈরী করা একটি ভিডিও:

এই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক মহিলা ব্যাখ্যা করছে কেন সে বুতাফ্লিকার চতুর্থ মেয়াদের বিপক্ষে:

 On s'y attendait pas du tout déjà en 2008. C'était tellement gros que c'est passé. Cette fois-ci avant même sa déclaration pour briguer un 4ème mandat on veut lui dire stop ! On n'en veut pas ! L'Algérie n'est pas une monarchie. L'Algérie n'est pas une dictature. C'est un état de droit et on voudrait tous oeuvrer pour çà. 

এর আগে ২০০৮ সালে, আমরা এটা আদৌও আশা করিনি [তৃতীয়বারের মত রাষ্ট্রপতি পদে বুতাফ্লিকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা]। তখন বিষয়টি বিস্ময়কর ছিল না যে সে সময় ঠিক তাই ঘটেছিল। কিন্তু এবার, এমনকি চতুর্থবারের মত নির্বাচনের ইচ্ছা প্রকাশের ঘোষণা প্রদানের আগে, আমরা তাকে বলতে চেয়েছিলাম থামো। আমরা আর তোমাকে চাই না! আলজেরিয়া একনায়কের দেশ না। এটা এমন একটা দেশ যার ভিত্তি আইনের শাসন, আর আমরা সকলে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে চাই।

আমিরা, ইদিয়ার, লেইলা এবং অন্যরা এই বিষয়ে নিশ্চিত ছিল যে বিক্ষোভের সময় পুলিশের সংখ্যা বিক্ষোভকারীদের ছাড়িয়ে যায়। তারপরেও তারা সমবেত হতে থাকে। তবে ঘটনাক্রমে, বিষয়টি ঘটুক বা না ঘটুক, তারা একই সাথে প্রমাণ করেছে যে আলজেরিয়ায় যে কোন গণতান্ত্রিক জমায়েত সম্ভব করাকে সামাজিক প্লাটফর্ম-এর মাধ্যমে করতে হবে। যখন প্রথম ফেসবুকে বিক্ষোভের আহ্বান জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় [আরবি এবং ফরাসী ভাষায়], তখন কেউ তাদের গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেনি। কিন্তু তারপর থেকে প্রতিদিন এই আহ্বানের প্রতি সমর্থন ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। তাদের লক্ষ্য ছিল একটাই–৭৭ বছর বয়সী আবদেল আজিজ বুতাফ্লিকাকে চতুর্থ মেয়াদের জন্য না বলা। আলজেরিয়ার এই রাষ্ট্রপতি ১৯৯৯ সাল থেকে দেশটি শাসন করে আসছে। তিনি এমন একজন রাষ্ট্রপতি যে কিনা ক্ষমতায় থাকার উপায় খুঁজছে, যদিও তিনি প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিলেন যে তরুণ নেতৃত্বের হাতে তিনি দেশের শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।

ঘটনাক্রমে বুতাফ্লিকার আরো পাঁচ বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরোধিতা করে প্রতি সপ্তাহ আলজেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

সাইবার একটিভিস্টরা অন্য আরো অনেক কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু দাবীর প্রতি একাত্মতার মত এক চেতনার ক্ষেত্রে, এই সমস্ত প্রচেষ্টা #ডিজেড২০১৪ নামক হ্যাশট্যাগের অধীনে একত্রিত করা হয়েছে। এই হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে নেট নাগরিকরা ফেসবুকের বিপুল সংখ্যাক পাতার সঙ্গে নিজেদের পুনরায় যুক্ত করতে পারবে যা তাদের ১৭ এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আলজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী সময়সূচী সম্বন্ধে তাজা সংবাদ জানাবে। ১,২,৩, উইন রায়া ইয়া সি, ডিজেড উইকিলিকস, এনভয়েস স্পেসুক্স আলজেরিয়ান, আন্টিচিটাডিজেড, আলজেরিয়ে ডিসকাশন, আলজেরিয়া ইলেকশন প্রেসিডেন্টিলে এই সমস্ত পাতা প্রাক নির্বাচনী প্রতারণার অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই-এর এক মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু ফেসবুক এবং টুইটার শুধু নতুন কোন সংবাদ উৎসের চেয়ে বেশী কিছু। এখানে হাস্যরস এবং ব্যাঙ্গাত্মক কিছুর মাধ্যমে অর্জন করা গতিশীলতাকে বেশ সফল করা সম্ভব। যেমন এর তাৎক্ষনিক উদাহরণ, রেডিও ট্রোট্রোইর পাতা-এর ফটো মন্তাজ, ঠাট্টা এবং উপহাস করা ভিডিওর কারণে সত্যিকার অর্থে জনপ্রিয় হয়েছে। এই ছবিটার নকশা করেছে কামেল লাবাইদ, যে যুক্তরাজ্যে বাস করা “আলজেরিয়ার একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা”, যা ফেসবুকে গণহারে ছড়িয়ে পড়েছে, তা আলজেরীয় হালকা রসিকতার এক উদাহরণ:

4e mandat satire

এই ব্যঙ্গচিত্রের মানে হচ্ছে: তারা আপনাকে ভোট দিতে বলেছে? চারটি না–এর মাধ্যমে এর উত্তর প্রদান করুন,চতুর্থ বারের মত ক্ষমতা অর্জন,বংশানুক্রমে ক্ষমতা হস্তান্তর,দূর্নীতি,ডাইনোসর।

চতুর্থ দফা রাষ্ট্রপতি হবার বিরোধিতায় যতটা সম্ভব বিক্ষোভকারী জড় করার ব্যাপারে ইউটিউবের বেশ ভালো ব্যবহার হচ্ছে। ইউটিউব ব্যবহারকারীরাও, তাদের নেতাদের কাছে জবাবদিহিতা দাবী করছে। এদের মধ্যে কয়েকজন এমনকি আব্দুল আজিজ বুতাফ্লিকার সাথে সরাসরি কথা বলেছে এবং তাকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে বলছে। এই তরুণ আলজেরীয়রা তার কথায় পরাভূত হয়নি:

même les serviteurs du régime s'opposent à ce 4e mandat qui humilie l'Algérie. Nous aussi on doit dire non et refuser d'accorder 5 années supplémentaires à Bouteflika

এমনকি এই শাসকের যারা কর্মচারী, তারাও বুতাফ্লিকার এই চতুর্থ দফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে যা কিনা আলজেরিয়াকে আঘাত করছে। আমরা একই সাথে এই বিষয়টিকে না বলব এবং তাকে আবার পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় যাবার বিষয়টি প্রত্যাখান করব।

নাগরিক দলগুলো নিজেদের বিক্ষোভের বিষয়গুলো চলচ্চিত্রায়িত করছে এবং গণমতের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সমস্ত ভিডিওগুলো ব্যাপক ভাবে প্রদর্শন করা হচ্ছে। তাদের এই প্রচারণার বিষয়টি আরো সম্ভব হয়েছে #ডিজে২০১৪ হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .