রাশিয়ানরা ইউক্রেনকে বলছেঃ “বাইরের বিশ্ব পুতিনকে ভয় দেখাচ্ছে”

Ukrainian protesters. YouTube screenshot.

ইউক্রেনিয়ান প্রতিবাদকারীরা প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও তাঁদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউটিউব স্ক্রিনশট। 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিকটর ইয়ানুকোভিচ ইইউ-ইউক্রেন সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনে ব্যাপক প্রতিবাদ দানা বেঁধেছে। তাদের সরকারকে চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করতে সারা দেশ জুড়ে জোর প্রচেষ্টা চালাতে এই প্রতিবাদ দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। টুইটার এবং ফেসবুকের মাধ্যমে #євромайдан, #евромайдан, ও #euromaidan, হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করে নাগরিকেরা প্রতিবাদের উন্নতি এবং অন্যান্য তথ্যসমুহ শেয়ার করছে। সহিংসতা সত্ত্বেও সেখানে কিছু ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে। টুইটার ব্যবহারকারী @ডিবিএনএমযেআর ইউক্রেনিয়ান এবং রাশিয়ান ভাষায় আপডেটগুলো একইভাবে একত্রিত করে লিখেছেনঃ 

শেভচেনকো আদালত সকল [গ্রেপ্তারকৃত] শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে। বিচারকগণ এই শাস্তির অবৈধতা চিহ্নিত করেছেন। [তারা] ভীত এবং আইন অনুযায়ী বিচারকগণ সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হল। 

প্রতিবাদ কর্মসূচীটি সম্পর্কে রাশিয়ানরা বেশ দ্বিধাবিভক্ত। উদাহরণস্বরূপ, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করে বলেছেন, প্রতিবাদটিকে “একটি বিপ্লবের চেয়ে অভ্যুত্থান বলেই মনে হচ্ছে।” সক্রিয়কর্মী অলেগ কজিরেভ (@অলেগ_অজিরেভ) প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টুইট করেছেনঃ 

বহির্বিশ্ব পুতিনকে ভীত করছে। 

বিরোধীদলীয় তরুণ সক্রিয়কর্মী @বেরিলি বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য করেছেনঃ 

দূর্ভাগ্যবশত, পুতিন বেশ দিশেহারা। 

পুসি রায়টের আইনজীবী মার্ক ফেয়গিন (@মার্ক_ফেয়গিন) লক্ষ্য করেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ প্রতিবাদকারীদের দাবির প্রতি সায় দিয়েছেনঃ 

হেই, ভিকটর ইয়ানুকোভিচ গলে যাচ্ছেন… 

আরাম কেদারায় বসে মস্কো থেকে যেসকল বিশেষজ্ঞ ইউক্রেন সম্পর্কে লেখালেখি করছেন, তাদের নিয়ে অন্যরা বেশ হতাশ। ছবি-ব্লগার ইলিয়া ভারলামোভ (@ভারলামোভ) গত ১ ডিসেম্বর কিয়েভে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি নালিশ করেছেনঃ 

এমন কোন টুইটার প্লাগইন কি আছে, যেটি ব্যবহার করে মন্তব্যকারী রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকারদের কথ্য বাদ দিয়ে দেয়া যাবে? তারা মস্কোর উষ্ণ ও আরামদায়ক ক্যাফেতে বসে বসে ইউক্রেনের ভাগ্য নিয়ে আলোচনা করে থাকে!  

এমনকি এই পীড়িত ইইউকে আরো বিস্তারিত করার জটিল যুক্তির বিভিন্ন অংশ নিয়ে কেউ কেউ আবার ঠাট্টা করেছে। রোমান ডলঝিনস্কি তাঁর ফেসবুকে [রুশ] নিচের লেখাটি পোস্ট করেছেনঃ 

Про Украину вот что думаю. Я категорически против ее евронтеграции. Потому что мне жалко Евросоюз. Он уже чуть не подавился Румынией-Болгарией, а Украиной точно подавится. Не выдержит, не прокормит.

আমি ইউক্রেন নিয়ে কি ভাবছি, তাই এখানে তুলে ধরলাম। আমি স্বভাবতই ইইউতে ইউক্রেনের যোগদানের পরিপন্থী। কারন আমি ইইউ – এর জন্য খুব দুঃখ বোধ করি। এটি বলতে গেলে রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়ার শ্বাসরোধ করে রেখেছে। নিশ্চিতভাবে এটি ইউক্রেনেরও শ্বাসরোধ করে রাখতে চাইবে। 

ইরেক মুরতাজিন নামের মস্কোর একজন সাংবাদিক দুই-মাত্রিক পথের সার-সংক্ষেপ সম্পর্কে ব্লগ [রুশ] লিখেছেন। এই সার-সংক্ষেপ অনুযায়ী “উজ্জ্বল চুলের নারী আলোচনা করছে, ইউক্রেনে কি ঘটছে” শিরোনামের অধীনে রাশিয়া ইউক্রেন নিয়ে পর্যালোচনা করছে। মস্কো মেট্রোতে দু’জন মেয়ের কথোপকথন মুরতাজিন আড়ি পেতে শুনেছেন। দু’জনের মাঝে একজন মেয়ে ইউক্রেনকে শুধুমাত্র রাশিয়ার কথা বলার একটি বিষয় হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছে। যাদের ইউরোপিয়ান হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা আছে, তাদের জন্য অন্যদের সামান্য সহমর্মিতা আছে বৈকি, এর বেশী কিছু নয়ঃ 

Иду на работу и думаю, девушки «по разную сторону баррикад», но в головах у обеих – винегрет и упрощение ситуации в Украине до абсурдности. Не правы обе. Но ведь подобный взгляд на события у наших соседей и братьев сформировался не только у этих девушек, точно так же думают миллионы. И есть серьезная опасность, что усиление поляризация Украины может стать еще одним фактором поляризации и России.

আমি কাজে যাচ্ছি এবং ভাবছি, এই মেয়ে দু’টি যেন বেড়ার বিপরীত দিকে অবস্থান করছে। কিন্তু তাদের দু’জনেরই ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে একেবারেই একটি মিশ্রিত এবং অদ্ভূত রকম একটি সরল চিন্তা রয়েছে। তাদের কেউই সঠিক নয়। কিন্তু একমাত্র এই মেয়েগুলোই যে এমন ধারণা পোষণ করছে, তা নয়; বরং লক্ষ লক্ষ মানুষ এভাবেই ভাবছে। এখানে একটি ভয়াবহ বিপদের কথা এই যে ইউক্রেনের এই অতিরিক্ত মেরুকরণ, রাশিয়ার মেরুকরণেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়ে উঠতে পারে।   

সবশেষে, যদিও বেশীরভাগ লোকই ইউক্রেনের সর্বোচ্চ মঙ্গল কামনা করছে। তথাপি টুইটার ব্যবহারকারী পাভেল সেনকো (@সেনকো) সরলভাবে টুইট করেছেনঃ 

আমি আশা করি ইউক্রেনের জনগণের জন্য অবশ্যই কোন সমাধান বের হবে। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .