আবারো গ্রেপ্তার হলেন মিশরীয় সক্রিয়কর্মী আলা আব্দেল ফাত্তাহ

Alaa Abd El Fattah. Photo by Alaa And El Fattah via Wikimedia Commons (CC BY-SA 2.5)

আলা আবেদ এল ফাত্তাহ। ছবিঃ উইকিমিডিয়া কমনস থেকে আলা এবং এল ফাত্তাহ (সিসি বাই-এসএ ২.৫)

বিশিষ্ট মিশরীয় সক্রিয়কর্মী এবং ব্লগার আলা আব্দেল ফাত্তাহকে তাঁর বাসা থেকে গত ২৮ নভেম্বর তারিখে বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ১০ টায় গ্রেপ্তার করা হয়। কায়রোতে প্রতিবাদকারীদের প্রচন্ড বিচ্ছুরণের পর গত মঙ্গলবারে আব্দেল ফাত্তাহর জন্য একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ব্লগারের বাবা স্থানীয় প্রচার মাধ্যমকে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন মিশরের রাস্তায় প্রতিবাদ জানানো নিষিদ্ধ করে কার্যকর করা একটি নতুন আইনের অধীনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঐ দিনে কমপক্ষে ৫১ জন লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট সক্রিয়কর্মী আছেন। তাদের মধ্যে অনেককেই মারধর এবং যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।

শনিবারে নিজে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও পুলিশ আলাকে নিয়ে গেছে। তাঁর দেয়া একটি বিবৃতি অনুযায়ী এবং তাঁর খালা, সুপরিচিত মিশরীয় ঔপন্যাসিক আহদাফ সোউফ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

তাঁর স্ত্রী মানালের মতে, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে এসে সহিংসভাবে জোর খাটিয়েছেঃ  

পুলিশ আমাদের বাড়িতে জোর করে ঢুকে পরে @আলাকে গ্রেপ্তার করে এবং আমাকে প্রহার করে। তারা আমাদের দু’জনের ল্যাপটপ এবং দু’জনের মোবাইল ফোনই চুরি করে নিয়ে যায়।  

আমাদের শোবার ঘরে এসে যেখানে পুলিশ আমাদের মেরেছে, সেখানটা রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেছে @আলা

পুলিশ যদি ইতোমধ্যে আমাদের বাড়িতেই আমাকে মারধর করে, তবে তারা @আলার সাথে কেমন আচরণ করবে ? আমি তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত! 

এই গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। দেখা যাচ্ছে, আলা জনসম্মুখেই বলেছেন যে শনিবারে তিনি আত্মসমর্পণ করবেন।

মিশরের হিউম্যান ওয়াচের পরিচালক হেবা মোরায়েফ তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে প্রতিবাদ বিরোধী আইনের সাথে যুক্ত করেছেন, যেটি এই সপ্তাহের শুরুতে খসড়া করা হয়েছেঃ  

আলার গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, কেন এমওআই এই আইনটিকে ৭ নম্বর ধারায় অস্পষ্ট ভাষায় তৈরি করা হয়েছে = বিবেচনার ভিত্তিতে যে কোন কাঙ্ক্ষিত সক্রিয় কর্মীকে তাঁরা গ্রেপ্তার করতে পারবে।  

হেশাম মানসুর তাঁর নিজের বক্রাঘাতমূলক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেনঃ

প্রশ্ন করবেন না, আমাদের প্রতি মিশর কেমন আচরণ করেছে। প্রশ্ন করুন যে, আলাকে মিশর কতবার গ্রেপ্তার করেছে। 

আলার বোন, সক্রিয়কর্মী মোনা সেইফ তাঁর ভাইকে কোন কারাগারে রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁর অনুসারীদেরকে জানিয়েছেনঃ 

আমরা এখন নিশ্চিত যে আলাকে কায়রোর আলেকজান্দ্রিয়া সড়কের গিজাতে অবস্থিত সিএসএফ সৈন্যালয়ে রাখা হয়েছে। 

হোসনি মোবারকের শাসনামলে আলা আব্দেল ফাত্তাহকে ৪৫ দিনের কারাদন্ড দেয়া হয়। ২০১১ সালে সেনা বাহিনীর সর্বোচ্চ কাউন্সিল পুনরায় তাকে দু’মাসের কারাদণ্ডে দন্ডিত করে। মোহাম্মাদ মুরসির সরকারের অধীনে ২০১৩ সালেও তাকে জনপ্রিয় ব্যাঙ্গ রচয়িতা বাসেম ইউসুফ সহকারে অভিযুক্ত করা হয়। এসব অভিযোগের বেশির ভাগই যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা সহজেই বোঝা যায়। এগুলোকে ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেকবার, #ফ্রিআলা হ্যাশট্যাগটি সংহতি প্রকাশের জন্য নতুন করে উপরিভাগ তৈরি করেছে। এমন মনে হচ্ছে যেন, এটি আবার তাঁর চেনা পথে ফিরে এসেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .