সাধারণ ধর্মঘট শুরু করেছেন ইন্দোনেশিয়ায় শ্রমজীবীরা

Thousands of workers left production in a Sanyo factory. Photo from Facebook page of Tia Claudia E. Mboeik

স্যানিও কারখানার হাজার হাজার কর্মী কাজে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। ছবিঃ তাই ক্লাউদিয়ার ফেসবুক পাতা থেকে। 

সরকারকে ন্যূনতম মজুরী বাড়াতে চাপ দেওয়ার লক্ষ্যে ইন্দোনেশিয়ায় শ্রমজীবীরা দুই দিনের সাধারণ ধর্মঘট শুরু করেছেন। জাকার্তায় কর্মীরা প্রতি মাসে ন্যূনতম ৩৩৪ মার্কিন ডলার মজুরী নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়।

আয়োজকদের মতে, ২০ টি প্রদেশের দুই মিলিয়ন শ্রমিক ধর্মঘট যোগদান করেছেন। ৩১ অক্টোবর – ১ নভেম্বরের ধর্মঘটের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে সারা দেশের শ্রমিকরা গত মাসে অনেকগুলো বিক্ষোভ করেছেন। সেগুলোর মধ্যে ছিল ধর্মঘট যোগদানের কর্মীদের নিয়োগের জন্য কারখানা বন্ধকরণ, ইউনিয়ন পরিদর্শন এবং র‍্যালিতে অংশগ্রহণ। গত ২১ অক্টোবর, জাতীয় সংলাপের জন্য ইউনিয়নে ২০,০০০ কর্মী জড়ো হয়।

বেতন বৃদ্ধি থেকে সরে এসে কর্মীরা এখন নিম্নলিখিত দাবী জানিয়েছে:

১) ন্যূনতম মজুরি ৫০% বৃদ্ধি

২) আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্য সুবিধা

৩) আউটসোর্সিং বিলুপ্তি করণ

৪) শ্রম বিরোধী আইন (রাষ্ট্রপতির নির্দেশ নং ৯/২০১৩) বিলুপ্তিকরণ, যেটি শুধুমাত্র ন্যূনতম মজুরির দাবি দমিয়ে রাখেনি বরং “ন্যূনতম মজুরী প্রক্রিয়া নির্ধারণে নিরীক্ষণ করতে ও ন্যূনতম মজুরী নীতি বাস্তবায়নে” পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৫) দেশীয় শ্রমিকদের রক্ষা করতে একটি আইন পাস করা।

আউটসোর্সিং বলতে শ্রম ও চুক্তি সিস্টেমের অপরিকল্পিত পদ্ধতিকে বোঝায়:

এমনটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সরকার ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে “আধুনিক দাসত্ব” সিস্টেম প্রয়োগ করতে যেন না পারে। অন্যকথায়, আউটসোর্সিং এবং অনিয়মিত/ চুক্তি কর্মসংস্থান পদ্ধতি দূরীকরণ করতে হবে। 

এছাড়াও দেশিয় শ্রমিকদের সুরক্ষায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোও চাপ দিচ্ছে। ম্যাথু রুলো ব্যাখ্যা করেছেনঃ

এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অনেক দেশের মত ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় শ্রম আইনে দেশীয় শ্রমিকদের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত নেই। এর ফলে তাদের কাজ অনেকাংশেই অনিয়ন্ত্রিত এবং দেশীয় কর্মীদের আনন্দের মৌলিক অধিকার তারা অস্বীকার করে। যেমন একটি ন্যূনতম মজুরী হিসাব, সাপ্তাহিক ছুটি এবং ওভারটাইম। শ্রমিকদের সুরক্ষায় তাদের দায়িত্ব বর্জনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন অন্যান্য দেশীয় শ্রমিকরা ঘটিয়ে থাকে – যেখানে তাঁরা প্রায়ই বিভিন্ন শর্তের অপব্যবহার এবং অপরাধমূলক কাজ করে থাকে।

যুগ্ম শ্রম সচিবালয় শ্রমিকের জীবনযাপন আরও নিম্নগামী করতে বড় ব্যবসাকে উপেক্ষা করায় সরকারকে অভিযুক্ত করেছে:

এমনকি আমাদের কর্মক্ষেত্রের মধ্যে, যেখানে ব্যবসা মালিকদের জন্য পর্বত সমান মুনাফা আছে কিন্তু আমাদের জন্য এক বিন্দুও নেই। সেখানে আছে শুধু সস্তা মজুরী, পরের দিনের কাজের জন্য আমাদের জীবিত রাখার জন্য যেটি যথেষ্ট।

আমাদের সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধ জীবন থাকা উচিৎ। কিন্তু দু:খের বিষয় যে, এই দেশটির ন্যায়বিচার ও সমৃদ্ধি শুধুমাত্র মালিকানাধীন কিছু ধনী মানুষদের একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে এটিকে পৃথক করে দেখা যাবে না, যা বর্তমান সরকারের দ্বারা পরিচালিত এবং যেটি পরিষ্কারভাবে মানুষের স্বার্থ অনুগত নয়।

কিন্তু সবাই বিশ্বাস করেনা যে, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে ধর্মঘট করা। পাকএমবি মন্তব্য করেছেনঃ

মজুরি বৃদ্ধি করলে কোম্পানি আরও দক্ষ হয়ে উঠবে, যেটি দীর্ঘ সময়ের জন্য জরুরী। শেষ পর্যন্ত যোগান ও চাহিদা দ্বারা মজুরি নিষ্পত্তি হবে, ইউনিয়ন এবং নিয়োগকারীদের দ্বারা নয়।  

সিয়াং মালাম সতর্ক করে দিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ায় ন্যূন্যতম মজুরি বাড়ালে বিনিয়োগকারীরা সব চলে যাবে:

সাধারণত নির্মান কাজের মোট ব্যয়ের প্রায় ৪০% হচ্ছে শ্রমিক খাতে খরচ। যদি উচ্চ মজুরির সাথে উচ্চ উত্পাদনশীলতা বা ফলাফল না আসে তবে বিনিয়োগকারীরা অন্যত্র চলে যাবে … কর্মীদের উৎপাদনশীল কাজ ছাড়া ধর্মঘট সংগঠনের মধ্য দিয়ে ইউনিয়ন দায়িত্বহীন হচ্ছে …

নীচে কিছু টুইটারের প্রতিক্রিয়া দেওয়া হল:

সাধারণ ধর্মঘটের এই অলঙ্কারশাস্ত্র দুর্বোধ্য। ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ লোক একমত হবেন যে, বৈষম্য ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রধান সমস্যা।

কোন অপারেটর নেই, নেই কোন উৎপাদন। কোন কাজ নেই, বেতন নেই।

#জাকার্তার #নার্স ও হাসপাতালের কর্মীরা #কালো ফিতা নিয়ে #মগকনাসিনাল এ যোগ দিন!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .