একাকী আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে সৌদি কারাবন্দীদের সন্তানদের

সৌদি কারাবন্দীদের ঈদ সাক্ষাৎ বাতিল করলে তাঁদের আত্মীয়স্বজনরা হঠাৎ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে একটি ছোট সমাবেশের আয়োজন করেন। সৌদির গোড়া এই রাজতন্ত্রে যেকোন ধরনের সমাবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু কারাবন্দীদের আত্মীয়স্বজনরা ক্রমাগতভাবে সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছেন। সমাবেশে অংশ নেয়া বেশিরভাগ নারী এবং শিশুদেরকে গত ১৭ অক্টোবর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনকি শিশুদেরকেও একাকী আবদ্ধ করে রাখার আদেশ দেয়া হয়েছে।

One of the arrested children, Humam al-Rushodi, whose father is a prisoner. via @e3teqal

গ্রেপ্তারকৃত শিশুদের একজন হুমাম আল-রুশদি। তাঁর বাবা একজন কারাবন্দী। ছবিঃ @ই৩টেকাল  

একজন মহিলা তাঁর বাচ্চার অসুস্থতার কারনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি গভর্নরের দপ্তরের [আরবি] সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে টুইট করেছেনঃ

তাঁরা আমাদের বলেছেঃ “অপেক্ষা করুন”। আমরা তাই করেছি। এরপর তাঁরা বাস নিয়ে এলো এবং বিশেষ বাহিনী আমাদেরকে এক পাশ থেকে আক্রমন করল। আরেক পাশ থেকে নারী কারারক্ষীরা আক্রমণ করলো। তাঁরা এমন আচরণ করছিল, যেন আমরা যুবরাজকে হত্যা করেছি।

উম্মে আব্দুল্লাহ আল হারবি রিপোর্ট করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন কারাবন্দীর আত্মীয় মাহা আল-দুহায়ানকে মারা হয়েছে এবং তাঁর হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছেঃ

…তাঁরা আমার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে যেন আমি কথা না বলি এবং মাহা আল-দুহায়ানকে খুব নির্মমভাবে মেরেছে। এমনকি তাঁরা তাঁকে ধাক্কা দেয় এবং তিনি পড়ে গিয়ে মুখে ব্যথা পান…

এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সৌদির সমগ্র টুইটার ক্ষেত্র জুড়ে খুব বড় একটি নিন্দার ঝড় উঠেছে। আল-দুহায়ান সহ অন্যান্য মহিলাদেরকে ফোন কল করতে দিতে, সাক্ষাৎ করতে দিতে এবং আইনজীবীদের কাছে যাওয়ার অনুমতি দিতে নিষেধ করা হয়েছে। তাঁর ছেলে টুইট করেছেনঃ

আমি গত দু’দিন যাবত উত্তপ্ত সূর্যের নিচে আছি। আমি চেষ্টা করছি খোলা দরজা দিয়ে ঢুকতে। কিন্তু আমি ঢুকতে পারিনি। ব্যুরোর [তদন্ত ও গণ অভিযোগ] একজন কর্মকর্তা আমাকে একটি ফোন কল করতে দেবেন বলেছিলেন, কিন্তু তিনি তাঁর কথা রাখেননি। 

গত ২০ অক্টোবর তারিখে একদল নারী এবং তরুণ বুরায়দাহ পুলিশ প্রশাসনের সামনে তাঁদের আত্মীয়দের মুক্তি দাবি করে একটি অবস্থান কর্মসূচীর আয়োজন করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদেরকেও পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে এবং গ্রেপ্তার করে।  

এই মাত্রঃ পুলিশ প্রশাসনের সামনে যারা অবস্থা কর্মসূচী পালন করছিল, তাঁদেরকে জরুরী বাহিনী ঘিরে ফেলেছে। এবং অংশগ্রহণকারী নারী এবং তরুণদের মেরেছে।

যাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাঁদের মধ্যে দু’জন হলেন মিসেস আল-দুহায়ানের দুই ছেলে ইয়াসের এবং রায়ান। 

আমার মায়ের মামলা সম্পর্কে খোঁজ নিতে সাধারণ তদন্ত ব্যুরো থেকে এইমাত্র আমি বেড়িয়ে এলাম। আমার ভাই রায়ানের একটি ফোন কল পেয়ে আমি হতবাক হয়ে যাই। সে বলছিল যে আমার ভাই ইয়াসের সহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত নারী এবং পুরুষদেরকে এখনও বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক দণ্ডপ্রাপ্তদের সাথে একবার দেখা করতে দেয়া হয়েছে। কিন্তু জেল কর্মকর্তারা গতকাল ২২ অক্টোবর তারিখে একটি পরিবারের একজন সদস্যের কাছে বলেছে [আরবি], প্রতিটি শিশুকে পরবর্তী পাঁচ দিন একাকী আবদ্ধ রাখার ব্যাপারে তাঁদের কাছে তদন্ত ও গণ অভিযোগ ব্যুরোর আদেশ আছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .