মিয়ানমারের কাছ থেকে সিঙ্গাপুর যা শিখতে পারে

Myanmar opposition leader Aung San Suu Kyi meets Singapore Prime Minister Lee Hsien Loong. Image from Facebook

মিয়ানমারের বিরোধী দলীয় নেত্রী অং সান সু চি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হেসিন লং এর সাথে সাক্ষাৎ করছেন। ছবিটি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু সিঙ্গাপুর ভ্রমণে গিয়েছেন।  এই সমৃদ্ধ শহর রাষ্ট্রটিতে তাঁর স্বদেশবাসীদের সাথে সাক্ষাতের পাশাপাশি তিনি একটি নেতৃত্ব প্রদান বিষয়ক সম্মেলনেও উপস্থিত ছিলেন। একটি প্রেস সভার সময় সু কি সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক সফলতার বেশ প্রশংসা করেছেন, কিন্তু তিনি বস্তুতন্ত্রের প্রভাবের বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছেনঃ

…সর্বোপরি কাজ কি ? মানব জন্মের উদ্দেশ্য কি ? মানব জীবনের অর্থ কি ?

কি করে আরো প্রশান্তির জীবন যাপন করা যায়, সম্পর্কগুলোকে কীভাবে আরো উষ্ণ ও কাছের করে নেয়া যায়, আমি মনে করি, সিঙ্গাপুর আমাদের কাছ থেকে তা শিখতে পারে। সিঙ্গাপুর যে উচ্চমান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, তা থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে চাই। কিন্তু আমি বিস্মিত হই এই ভেবে, আমাদের দেশের জন্য আদৌ আরো কিছু আমরা চাই কিনা। 

বার্থা হেনসন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেনঃ 

আমাদের কিছু উন্মত্ত চিন্তা করা উচিৎ এবং আমাদের আত্মার সন্ধান করা উচিৎ।

আমরা কি শুধুমাত্র একটি অর্থ-হস্তগতকারী জাতি ? ভবিষ্যৎ কর্মস্থলের জন্য দক্ষভাবে আঙ্গুল মন্থন করছি ? আমরা কি শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় জেলা ব্যবসার সর্বোচ্চ সীমারেখা সর্বস্ব ? আসলেই কি অন্য লোকেরা আমাদেরকে সেই নজরেই দেখে ? অন্যান্যরা কি আমাদের জ্ঞানতঃ স্বার্থপর মানুষ হিসেবে মনে করে, যারা মানবীয় সম্পর্ক স্থাপনে ততোটা মূলধন খাটায় না? 

ওয়ান্ডারপিস, সু কির সাথে সম্মতি জানিয়েছেনঃ 

মিস অং স্বীকার করে নিয়েছেন চাহিদাগুলো থেকে মুক্ত হতে হলে একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত বস্তুগত অর্জন অত্যন্ত জরুরী। তথাপি, এমন অনেক অবস্তুগত জিনিস আছে, যেগুলো কোন বস্তুগত অর্জন আমাদের দিতে পারে না – যেমন ভালোবাসা, বিশ্বস্ততা, আত্মীয়তা … এমন অনেক কিছুই আছে, যা আমাদের টিকে থাকতে সাহায্য করে। এগুলো বস্তুগত অর্জন থেকে তেমন লাভ করা যায় না। সবকিছুর শেষে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের কাছ থেকে সিঙ্গাপুর আরো প্রশান্তির জীবন যাপন করা, আরো উষ্ণ এবং ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক বজায় রাখা শিখতে পারে। 

জুয়ুন সিঙ্গাপুরের নেতাদের জিডিপি ছাড়িয়ে জীবনমান হিসেব করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেনঃ 

আমাদের বস্তুতান্ত্রিক মনের বুদবুদকে অং সান সু কি খোঁচা মেরে বিদ্ধ করেছেন। এই জাঁকজমকশালী অট্টালিকার সামনের চেহারা ছাড়িয়ে আমাদের হত দরিদ্রতাকে তিনি উদ্ঘাটন করেছেন। আমরা এই জাঁকজমকশালী অট্টালিকার ওপর আমাদের আত্ন-সম্মান প্রতিষ্ঠা করেছি এবং যা আমাদের সফলতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে।

এই প্রক্রিয়ায় বেশীরভাগ লোকের জন্য, (জিডিপি) – এর মাধ্যমে জীবনমান কমানোর মাত্রা খোঁজা উচিৎ নয়। এবং শুধুমাত্র জিডিপি একটি জাতির আত্মা এবং প্রাণের সংজ্ঞা দিতে পারে না।

আমি হয়তোবা ধারনা করতে পারবো না, অং সান সু কি তাঁর দেশের জন্য আসলে কি চান। কিন্তু এটা হৃদয়ের অনেক কাছাকাছি এবং পকেট থেকে অনেক দূরে হওয়া উচিৎ। 

সু কির বার্তাটিই @অকুপাইএসজি টুইটারে প্রতিধ্বনিত করেছেনঃ  

অং সান সু কি বলেছেন #সিঙ্গাপুর খুব বেশি বাধ্যবাধকতায় পূর্ণ এবং বস্তুতান্ত্রিক অর্জনের ওপর অতিরিক্ত পরিমানে ঘনীভূত হয়ে আছে। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .