ফেমেন অ্যাকটিভিস্ট নতুন অভিযোগের মুখোমুখি

তিউনশিয়ার ফেমেন একটিভিস্ট আমিনা টেইলার এর বিচারকার্য ৫ই জুন আবার শুরু হয়, যাকে রাজধানী তিউনিস শহর থেকে ১৮৪ কিলোমিটার দূরে কাইরোয়ানের একটি গোরস্থানে ফেমেন শব্দটির দেয়ালচিত্র আঁকার জন্য ১৯ মে তারিখে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিনা অনুমতিতে একটি মরিচ স্প্রে (পেপার স্প্রে) রাখার দায়ে ৩০শে মে তারিখে, আদালত আমিনাকে ৩০০ তিউশিয়ান দিনার (১৫০ ইউরো) জরিমানা করে। আমিনার উকিল বলেন যে আমিনা এটা আত্মরক্ষার্থে করেছে, কারন ফেসবুক নিজের বক্ষ উন্মোচন করা ছবি পোস্ট করায় গত মার্চে তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। যদি সে ৬ মাসের কারাদণ্ডের মত শাস্তি এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, তবে এখনো সে কারাগারে আটক রয়েছে এবং “গণ নৈতিকতাকে আহত করা”, “কবরস্থান অপবিত্র করা এবং “অপরাধী সংস্থার (ফেমেন) সাথে জড়িত থাকার” মত অভিযুক্ত হয়েছে। এই সমস্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৯ বছর বয়সী আমিনার কয়েক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

৩১শে মে তারিখে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তিউনিশীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমিনাকে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানায়। প্রতিষ্ঠানটি এই সমস্ত অভিযোগসমূহকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং নারী অধিকার কর্মকাণ্ডের কারণে আমিনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা” হিসেবে বর্ণনা করেছে

তথাকথিত “গণতন্ত্রমনা-দের” নিশ্চুপ থাকা?
তিউনিশিয়ার ধর্ম নিরপেক্ষ বিরোধীদের মাঝে আমিনাকে সাহায্য করার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে রক্ষণশীল ভোট হারানোর ভয়ে, দৃশ্যত বামপন্থী রাজনীতিবিদরা নীরব থাকাই পছন্দ করেছে। বাম রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদের “প্রগতিশীল” মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ণ করার মত অভিযোগ এটাই প্রথম অভিযোগ নয়। যেমন বলা যায়, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে “ঘাজি বেইজি এবং যাবেয়ুর মেজির” এর ঘটনায় তারা দুর্বল অবস্থান গ্রহণ করেছে।ইসলামের প্রতি আক্রমনাত্মক, এই ধারণা থেকে অনলাইনে লেখা প্রকাশের দায়ে গত বছর তাদের সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

আভয়াজ পিটিশন” আমিনাকে ছেড়ে দেয়ার দাবী জানিয়েছে, তরুণী এই ফেমেন একটিভিস্ট-এর সমর্থক কমিটি বলছে [ফারসী ভাষায়]:

Retour à la case prison pour Amina !
Nous avons toutes et tous été leurré(e)s par l’annonce de la relaxe d’Amina pour détention d’explosif. Amina, la prisonnière de l’hypocrisie politique tunisienne, du mutisme de celles et ceux qui veulent s’affirmer démocrates, mais qui n’osent prendre part à la lutte qui se joue actuellement.

আমিনা আবার জেলখানায় ফিরে এসেছে!
একটি দাহ্য ক্ষতিকর উপাদান রাখার দায়ে অভিযুক্ত আমিনাকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণাটি শুনে আমরা সকলে বিভ্রান্ত হই। আমিনা, তিউনিশীয় রাজনীতির কপটতা এবং যারা নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দাবী করে কিন্তু এই চলমান লড়াই-এ পক্ষ নেয়ার সাহস পায়না, তাদের নীরবতার বন্দী।

যারা দাবী করে তাদের অবস্থান গণতন্ত্রের প্রতি, তিউনিশীয় লেখক গিলবার্ট নাক্কাচে যথারীতি তাদের এই দাবীর সমালোচনা করেন [ফরাসী ভাষায়]:

La démocratie a vraiment du mal à se frayer un chemin jusqu’à nos cerveaux ! Les mêmes qui se disent prêts à se battre jusqu’au bout pour les libertés (…) hurlent à l’intolérable provocation quand Amina s’exprime(…)

Les justifications de la condamnation d’Amina, même par ceux qui l’accusent de donner un prétexte à détourner l’attention des vrais problèmes, de contribuer à diviser davantage les Tunisiens, ne sont en fin de compte qu’une façon de ne pas assumer son devoir qui est de défendre Amina contre la calomnie et les mensonges (…) et de défendre le droit de tous à s’exprimer à sa façon…

গণতন্ত্রকে আমাদের মস্তিস্ক পর্যন্ত পরিচালনা করা সত্যিই কঠিন! যখন আমিনা নিজেকে নিজে তুলে ধরল, যারা দাবী করে যে স্বাধীনতার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত, (…) তখন তারা আমিনার বিরুদ্ধে এক অসহনীয় প্ররোচনায় নিন্দা জানাতে শুরু করল।

আমিনার প্রতি নিন্দা জানানোর জন্য যে পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, এমনকি তারা, যারা তার বিরুদ্ধে জনগণের মনোযোগ মৌলিক সমস্যা থেকে সরিয়ে দেওয়া কিংবা তিউনিশিয়াকে আরো বিভক্ত করার মত অভিযোগ করেছে, ঘটনা হচ্ছে তারা আমিনাকে কলঙ্কিত এবং মিথ্যা অপবাদের হাত থেকে বাঁচানো (…) এবং সকল ব্যক্তির নিজের মত করে নিজেকে প্রকাশ করার যে ব্যক্তিগত অধিকার, তার প্রতি সমর্থন প্রদানের মত দায়িত্ব পালন না করার উপায় অনুসন্ধান করছে।

জুনের ৫ তারিখে আরো ৩ জন ফেমেন একটিভিস্ট –এর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাদের মধ্যে দুইজন ফরাসী এবং একজন জার্মান। ২৯ মে তারিখে আমিনার সমর্থনে তিউনিসের এক আদালতের সামনে বক্ষ উন্মোচন করায় দায়ে তারা অভিযুক্ত হয়েছে, যে অভিযোগে তাদের প্রত্যেকের ছয়মাসের কারাদণ্ড হতে পারে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .