ব্রাজিল: “পিনহেয়ারিনহো গণহত্যা”র এক বছর পরে

২২শে জানুয়ারী, ২০১২ ব্রাজিলের সাও হোজে ডস ক্যাম্পোস শহরের পিনহেয়ারিনহো বসতি থেকে সহিংস উচ্ছেদের এক বছর পুর্ণ হয়েছে। সে সময় গ্লোবাল ভয়েসেস যেমন রিপোর্ট করেছিল:

২২শে জানুয়ারী  সাও পাওলো সামরিক পুলিশ (পিএমএসপি) এবং সাও হোজে ডস ক্যাম্পোস শহরের মেট্রোপলিটান অসামরিক গার্ড (জিসিএম)  রাষ্ট্রীয় আদালতের দেওয়া একটি পুনর্দখল আদেশ বাস্তবায়নের জন্যে পিনহেয়ারিনহো হিসেবে পরিচিত সাও পাওলো রাজ্যের একটি বসতি আক্রমণ করে। বহিষ্কার এবং ভীতি প্রদর্শনের সময় পুলিশের সহিংসতা এবং নিষ্ঠুরতার প্রদর্শনী এর অধিবাসীদেরকে একটি বিশাল আইনি জটিলতার মধ্যে ফেলে দিলে সম্প্রদায়ের এই সহিংস উচ্ছেদটি “ম্যাসাকার দো পিনহেয়ারিনহো” (পিনহেয়ারিনহো গণহত্যা) হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে।

“আর কোন দৌড়াদৌড়ি নয়, আমরা একটা সমাধান চাই।” উচ্ছেদের প্রথম বর্ষপূর্তীতে বিক্ষোভের সময় তোলা ছবি। ছবি, বেয়াত্রিজ বেভিলাকুয়া। (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত।)

দিনটিকে স্মরণ করার জন্যে বর্তমানে খালি সাও হোজে ডস ক্যাম্পোসের পিনহেয়ারিনহো’র জমির প্রবেশদ্বারে একটি বিক্ষোভ। ঘটনাটির উপর একটি তথ্যচিত্রের চিত্রগ্রহণে অংশ নেওয়া ইতিহাসবেত্তা রোগেরিও বেইয়ের উচ্ছেদকৃত ১,৫০০ এর বেশি পরিবারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন [পর্তুগীজ ভাষায়], “জমিতে বসবাসকারী ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্যে অনেক কষ্ট এবং যন্ত্রণা সৃষ্টি করছে”:

Passado um ano desde a desocupação, essas pessoas seguem sem uma solução definitiva com relação a moradia adequada e, pior, continuam sofrendo diversos tipos de violências como preconceito e discriminação, desintegração da família, péssimas condições de moradia e dificuldades para encontrar emprego, dentre outras.

[…]

O ato foi muito importante para marcar um ano desde a reintegração de posse do Pinheirinho. O terreno, desde então, continua vazio e as pessoas que ali moravam, seguem desabrigadas. A data não podia passar em branco e a organização do evento está de parabéns por relembrar ao Brasil que a luta do Pinheirinho ainda continua. Também entendemos que é bastante importante saber que os políticos que participaram do ato, se posicionam claramente ao lado dos ex-moradores do Pinheirinho na luta por uma solução definitiva para a moradia dessas mais de 8 mil pessoas. Apesar disso, esperávamos que o ato fosse marcado pela participação dos ex-moradores como personagens principais das atividades que ali se desenrolariam, o que infelizmente não aconteceu. Foi impossível não sair com uma sensação de desapontamento ao constatar que, tal como alguns moradores haviam nos adiantado, o ato do Pinheirinho no Poliesportivo acabou dando muito mais um espaço aos políticos do que aos ex-moradores.

উচ্ছেদের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এইসব লোকেরা তাদের পর্যাপ্ত বাসস্থানের চূড়ান্ত কোন সমাধান খুঁজে পেতে সক্ষম হয়নি, বরং আরো খারাপ যা যা ঘটছে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা যেমন কুসংস্কার ও বৈষম্য, পারিবারিক ভাঙ্গন, খারাপ আবাসন পরিস্থিতি এবং কর্মসংস্থান খূঁজে পাওয়ার কষ্ট রয়েছে।
[…]

পিনহেয়ারিনহো পুনর্দখলের প্রথম বর্ষপূর্তিকে চিহ্নিত করার জন্যে বিক্ষোভটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তারপর থেকে জমিটি খালি এবং সেখানে বসবাসকারীরা গৃহহীন রয়েছে। তারিখটি স্বীকৃতিবিহীন ভাবে পার হয়ে না যেতে দেওয়ার জন্যে এবং পিনহেয়ারিনহোর সংগ্রাম এখনো চলছে সেটা আমাদের মনে করিয়ে  দেওয়ার জন্যে এই ইভেন্টের আয়োজকরা অভিনন্দন প্রাপ্য। আমরা এটাও বুঝি যে আবাসনের স্থায়ী সমাধানের জন্যে সংগ্রামরত পিনহেয়ারিনহোর ৮ হাজারের বেশি সাবেক অধিবাসীর পক্ষে পরিষ্কারভাবে অবস্থান নেওয়া এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী রাজনীতিবিদদের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের আশা অনুসারে বিক্ষোভটির কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে সেখানকার সাবেক বাসিন্দাদের যে অংশগ্রহণ ঢলে পড়ার কথা ছিল দুর্ভাগ্যবশত তা ঘটেনি। হতাশার অনুভূতিটি না হওয়া অসম্ভব নয়, কারণ কিছু অধিবাসী আমাদেরকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল যে ক্রীড়া কেন্দ্রে আয়োজিত পিনহেয়ারিনহো বিক্ষোভে শেষ পর্যন্ত সাবেক বাসিন্দাদের চেয়ে ঢের লাভ বেশি রাজনীতিবিদদের।

Photo taken during the political act recalling the one year of eviction. Photo by Beatriz Bevilaqua. Used under permission.

উচ্ছেদের প্রথম বর্ষপূর্তীতে বিক্ষোভের সময় তোলা ছবি। ছবি, বেয়াত্রিজ বেভিলাকুয়া। (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত।)

একবছরে কি কি পরিবর্তন ঘটেছে সেটা বর্ণনা করেছে [পর্তুগীজ ভাষায়] কোয়াদে  – কোলেতিভো দে অ্যাডভোগাদো পারা এ দেমোক্রাসিয়া (গণতন্ত্রের জন্যে আইনজীবীদের জোট) ব্লগ:

Um ano se passou e lamentavelmente a violência ainda permanece. Os moradores ainda não tem um teto para morar, ainda estão lutando por justiça e a justiça parece estar mais lenta do que de costume.

Por outro lado, estes cidadãos resistiram e resistem até hoje e não estão sozinhos. Temos o dever de exigir do poder público a devida reparação dos danos morais e patrimoniais causados àquela população.

Moradia é uma necessidade básica de sobrevivência. Trata-se de dignidade humana. É por isso que este Coletivo apoia incondicionalmente a luta das famílias do Pinheirinho.

এক বছর পেরিয়ে গেলেও দুর্ভাগ্যবশতঃ এখনো সহিংসতা রয়ে গেছে। এখনো অধিবাসীদের বাস করার মতো (মাথার উপরে) কোন ছাদ নেই,  তারা ন্যায়বিচারের জন্যে এখনো সংগ্রাম করছে এবং বিচার স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর গতির মনে হচ্ছে।

অন্যদিকে, এইসব নাগরিকরা ঘুরে দাঁড়িয়ে আজকে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা (আজ আর) একা নয়। জনগণের ক্ষতি এবং জখমের জন্যে আমরা সরকারের কাছে অবশ্যই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করবো।

গৃহসংস্থান বেঁচে থাকার একটি মৌলিক দাবি। এটা মানুষের মর্যাদার প্রশ্ন। এই কারণে এই কালেকটিভ (জোট) পিনহেয়ারিনহোর পরিবারগুলোর সংগ্রামকে পরিপুর্ণভাবে সমর্থন করে।

Photo taken during the political act recalling the one year of eviction. Photo by Beatriz Bevilaqua. Used under permission.

উচ্ছেদের এক বছর পূর্তীতে আয়োজিত বিক্ষোভের সময় ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবি, বেয়াত্রিজ বেভিলাকুয়া। (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত।)

ব্লগার কোন্সেইসাও অলিভেইরা (মারিয়া ফ্রো) জনগণের বিরুদ্ধে বিশেষ করে আঘাতের কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করা বৃদ্ধ ইভো টেলেসের প্রতি পুলিশের সহিংসতা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন [পর্তুগীজ ভাষায়]:

O senhor Ivo Teles dos Santos que aparece no vídeo abaixo com seu corpo frágil de  mais de setenta anos e que foi brutalmente espancado pelos PMs durante a invasão da tropa de choque no Pinheirinho e que após internação veio a falecer  é o símbolo da covardia e a violência do Estado contra seus cidadãos.

Militares da tropa de choque que espancaram idosos,  jogaram bombas de gás em mulheres e crianças e são acusados de violência sexual  foram parte do espetáculo grotesco do dia 22 de janeiro de 2012.

নীচের ভিডিওটিতে পিনহেয়ারিনহোতে দাঙ্গা পুলিশী আক্রমণের সময় কর্মকর্তাদের দ্বারা নৃশংসভাবে পেটানো এবং পরে হাসপাতালে মারা যাওয়া ৭০ বছরের বেশি বয়স্ক পলকা শরীরের জনাব ইভো টেলেস ডস সান্তোসকে দেখা যাচ্ছে। তার ঘটনাটি নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের কাপুরুষতা এবং সহিংসতার প্রতীক।

বয়স্কদের পিটানো, নারী ও শিশুদের মাঝে গ্যাস বোমা ছুড়ে মারা এবং যৌন নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত সামরিক দাঙ্গা পুলিশগুলো ছিল ২২শে জানুয়ারী, ২০১২ তারিখের কদাকার দৃশ্যের অংশ।

এছাড়াও তিনি পুলিশের সঙ্গে ইভো টেলেসের বাক-বিতণ্ডা এবং তার প্রতি সহিংসতার চিহ্ন দেখানো ব্যবহারকারী উইলিয়ান সেজারের একটি ইউটিউব ভিডিও পোস্ট করেছেন:

সংগ্রামের চূড়ান্ত বার্তাটি এসেছে [পর্তুগীজ ভাষায়]  সাও পাওলো একেবারে দক্ষিণ অংশের দরিদ্র জনগণ এবং সহিংসতায় আক্রান্তদের রেডে এক্সত্রিমো সুল (সর্বদক্ষিণের নেটওয়ার্ক) ব্লগ থেকে:

Enquanto esse sofrimento, tão disseminado, não cimentar nossa união, e enquanto ele não for canalizado para o combate desse sistema que nos massacra, a cada ano teremos mais massacres para lembrar e lamentar. Que os lutadores e as lutadoras não demoremos a decidir e a dizer numa só voz: este foi o último! A dor desses massacrados é a nossa dor!

ব্যাপক-বিস্তৃত এই যন্ত্রণাটি যতক্ষণ না আমাদের একজোট করে এবং যতক্ষণ না এটা আমাদের প্রাণনাশী এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিকে ধাবিত না হচ্ছে, প্রতি বছরেই আমাদের স্মরণ এবং বিলাপ করার জন্যে আরো গণহত্যা সংঘটিত হতে থাকবে। আসুন আমরা যারা যুদ্ধ করতে রাজি, আশা করি তারা যেন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি না করে একই কণ্ঠে আওয়াজ তুলি: এইবারই শেষবার! গণহত্যায় আক্রান্তদের যন্ত্রণা আমাদের যন্ত্রণা!

Photo taken during the political act recalling the one year of eviction. Photo by Beatriz Bevilaqua. Used under permission.

উচ্ছেদের এক বছর পূর্তীতে আয়োজিত বিক্ষোভের সময় ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবি, বেয়াত্রিজ বেভিলাকুয়া। (অনুমতি নিয়ে ব্যবহৃত।)

পিনহেয়ারিনহোরা যেখানে থাকতো সেই জমি এখনো খালি রয়েছে। জমির মালিক লেবাননী বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা নাজি নাহাস [পর্তুগীজ ভাষায়] এটি কোন কিছুর জন্যেই ব্যবহার করেননি। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি দিলমা রৌসেফের একই দল ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে সম্প্রতি নির্বাচিত সাও হোজে ডস ক্যাম্পোসের মেয়র কার্লিনহোস আলমেইডা জমিটির অথবা পূর্ববর্তী বিরোধীদলীয় ব্রাজিলীয় সামাজিক গণতন্ত্রের দলের সরকারের সময়ে উচ্ছেদকৃতদের জন্যে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়াও একই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বস্ব হারানো ৬ থেকে ৯ হাজার জনগণের জন্যে একটা সমাধান খূঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছে।

কাতার্সে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গণতহবিল সংগ্রহের একটি প্রচেষ্টার পরে “পিনহেয়ারিনহো: একবছর পরে” শিরোনামের একটি তথ্যচিত্র রেকর্ড করা হয়েছে।:

কাতার্সে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গণতহবিল সংগ্রহের একটি প্রচেষ্টার পরে “পিনহেয়ারিনহো: একবছর পরে” শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র রেকর্ড করা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .