কুয়েত: উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠী প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে

এই পোস্টটি শরণার্থী সংক্রান্ত আমাদের বিশেষ প্রতিবেদনের অংশ।

২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কুয়েতের উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠী (বেদুইন) তাদের আইনগত অধিকার ও নাগরিকত্বের দাবীতে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। এই উদ্বাস্তু জনগোষ্ঠীটি দু'দশকেরও বেশি সময় ধরে উপেক্ষিত হয়ে আসছে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিক্ষা, চাকরি এবং সবধরনের আইনগত স্বীকৃতি থেকে।

এই জনগোষ্ঠীটি তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা এলাকাগুলো তাইমা ও সুলাইবিয়াতে নিয়মিতভাবে প্রতিবাদ করে আসছিল, ফলাফলে গণহারে গ্রেফতার করা সত্ত্বেও বাস্তবতা হল যে কুয়েতের আদালত প্রতিবাদকারীদের একে একে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতে লাগল। এই শুক্রবার, বেদুইন প্রতিবাদকারীরা পুনরায় বিক্ষোভ করেছে তাদের ১২জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে; যা এই জনগোষ্ঠীকে শনিবার ও রবিবারেও প্রতিবাদের মধ্যে সংযুক্ত রেখেছে।

শুক্রবারের প্রতিবাদ

আরব বিশ্বের অন্যান্য প্রতিবাদকারীদের মত বেদুইনরাও তাদের বিরুদ্ধে যে নিপীড়ন চালানো হয় তা বিশ্বকে জানানোর জন্য টুইটার ব্যবহার করেন। কয়েকজন কুয়েতি নিরীক্ষক এবং সমাজ ও রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিও ঐ প্রতিবাদটিতে ছিলেন, একমাত্র মাধ্যম টুইটার ব্যবহার করে সেখানকার সহিংস পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানোর জন্য। শুক্রবার বিকেলে, কুয়েতি মানবাধিকারের নিরীক্ষক মারিয়াম শাহ সেখান থেকে প্রতিবাদ শুরুর পূর্বে তোলা এই ছবিটি পোস্ট করেন যেখানে দেখানো হচ্ছে দাঙ্গা পুলিশের গাড়িগুলো তাইমা এলাকায় পৌঁছচ্ছে।

“মানব অধিকারের সংবাদ” এর অ্যাকাউন্ট থেকে এই সাধারণ মানের ছবিটি টুইট করা হয় যেখানে বেদুইন সাংবাদিক আবদুল্লাহ মায়াহকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে:

কুয়েতি পর্যবেক্ষক হানান প্রতিবাদের স্থান থেকে নিচের আপডেটগুলো টুইট করেছেন:

@হানানএসকিউ: তাইমাতে উদ্বাস্তু প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার জন্য শব্দ ও গ্যাস বোমা ছোড়া হয়েছে।

@হানানএসকিউ: নিরাপত্তা বাহিনী এলোমেলোভাবে তিনজন লোককে গ্রেফতার করেছে যারা তাইমায় বার্গার কিং এর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন।

বেদুইন অধিকার দলটিও প্রতিবাদের স্থান থেকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি টুইট করছিল। এখানে অনেকগুলো টুইট তুলে ধরা হয়েছে:

@বেদুইনরাইটস: তাইমা পুলিশ ষ্টেশন পুলিশ সদস্যরা যারা প্রতিবাদকারীদের আক্রমণ করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেয়া হচ্ছে না বলছেন আইনজীবী মোহাম্মদ আলতাইবি।

@বেদুইনরাইটস: আপনি স্পষ্টই দেখছেন যে, কর্তৃপক্ষ ভাড়াটে মিডিয়া কর্মীদের পরিষ্কার আদেশ দিয়েছিল সরকারী বিবৃতি অনুযায়ী বেদুইনদের বিরুদ্ধে আজ কাজ করতে।

বেদুইন সাংবাদিক @আহমেদবিনসালেম এই টিভি পর্দার ছবিটি পোস্ট করেছেন, একজন মহিলার উপর দাঙ্গা পুলিশের জল কামান থেকে অবিরাম পানি বর্ষণ করা হচ্ছে:

ইউটিউব ব্যবহারকারী আলজাইদিক৮ এই টেলিভিশন প্রতিবেদনটি পোস্ট করেছেন যেখানে দেখাচ্ছে যে একজন কুয়েতি সমাজ ও রাজনৈতিক সচেতন নারী ফাতমা আল-মাতার তাঁর গল্প বলছেন, প্রতিবাদের সময় একজন কম বয়স্ক প্রতিবাদকারীকে লাঠিপেটা করা থেকে একজন দাঙ্গা পুলিশকে বাধা দেওয়ায় কিভাবে ঐ দাঙ্গা পুলিশ তাকে আক্রমণ করেছিল।

প্রতিক্রিয়ায়, বাহরাইনী অতি পরিচিত সমাজ ও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি ও গালফ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস এর প্রধান নাবীল রাজাব টুইট করেছিলেন:

اعتقالات نشطاء فئة البدون في الكويت‬ الشقيقة واقتحام منازلهم هو عمل غير انساني لن ينهي ازمتهم التي تحتاج لتصحيح وليس لتصعيب وتعقيد ‎‪
@নাবীলরাজাব: বেদুইন সমাজ ও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিদের কুয়েতে গ্রেফতার করা এবং তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়া অমানবিক কাজ এগুলো তাদের সমস্যা সমাধান করবে না যেগুলো পুনর্গঠন করা দরকার জটিল করা নয়।

গালফ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস এর সহকারী পরিচালক @খালিদইব্রাহিম১২ তিনিও এর প্রতিক্রিয়ায় টুইট করেছেন:

@খালিদইব্রাহিম১২: কোন জাতীয়তা নেই কোন ভবিষ্যৎ নেই কোন চাকরি নেই নেই কোন মৌলিক অধিকার। এটিই হল কুয়েতে বেদুইনদের প্রকৃত অবস্থা তাই তাদের প্রতিবাদ করার সকল অধিকার রয়েছে।

বেদুইন সমাজ ও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তি আহমেদ আলফাদলি (@আহমেদ_এক্সএভিআই) আহমেদ নাজমের এই ছবিটি টুইট করেছেন, যাকে লাঠিপেটা করা হচ্ছে তিনি বেদুইন প্রতিবাদকারীদের একজন যখন তিনি পুলিশ সদস্যের কাছে গিয়েছিলেন:

বেদুইন ব্লগার ৭এমগান ইউটিউবে শুক্রবারের প্রতিবাদের ১৫মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র পোস্ট করেছেন:

শনিবারে, “বেদুইন রাইটস” প্রতিবেদন করেছে, দুজন প্রতিবাদকারীর উপর পুলিশের গাড়ি চালিয়ে দেয়া হয়, তাদের মধ্যে একজন মাত্র ১৬বছরের কিশোর:

এটা প্রতিবাদকারীদের জন্য দেখা খুবই মর্মঘাতী যে দাঙ্গা পুলিশের গাড়িগুলো তাদের ধরার চেষ্টা করছে এবং আসলেই দুজন প্রতিবাদকারীকে মাটির সাথে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলেছে। ১৬ বছর বয়েসি কিশোর খালেদ ওবায়েদ ফাদেল আল-ইনিজি পুলিশ দ্বারা মাটিতে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল এবং তাকে সাথে সাথে যাহ্‌রা হাঁসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাজ্যের নিরাপত্তা পুলিশ বেদুইন কিশোর ও তাঁর ভাইকে এই বলে জেরা করে যে, “কে তোমাদের প্রতিবাদী হতে উদ্বুদ্ধ করেছে? কেন তোমরা ঐসব শিয়াদের হয়ে প্রতিবাদ করছিলে?”। রবিবারে, আল-ইনিজিকে ছেড়ে দেয়া হয় যখন তাঁর পরিবার কোন অভিযোগ উত্থাপন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু অন্য প্রতিবাদীটি যার উপর একটি পুলিশের গাড়ি উঠিয়ে দেয়া হয়েছিল, তিনি গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে ঘটনাটি বর্ণনা না করেই তৎক্ষণাৎ পালিয়ে যান।

এই পোস্টটি শরণার্থী সংক্রান্ত আমাদের বিশেষ প্রতিবেদনের অংশ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .