শ্রীলংকা: জাতিসংঘ মানবাধিকার পর্ষদে মার্কিন সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া

বৃহস্পতিবার ২২ মার্চ ২০১২ জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্ষদ শ্রীলংকা বিষয়ক সভায়  লব্ধ শিক্ষা এবং সমঝোতা কমিশন (এলএলআরসি)-এর সুপারিশ বাস্তবায়নে এবং এলটিটিই’র সাথে দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের বিভিন্ন অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করার জন্যে সরকারকে উৎসাহিত করতে একটি মার্কিন সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিয়েছে চব্বিশটি দেশ।

একদম শুরু থেকেই শ্রীলংকা পদক্ষেপটির ঘোর বিরোধিতা করে এবং নেটনাগরিকেরাও তাদের মতামত দিয়েছে।

গ্রাউন্ডভিউজের ড. দয়ান জয়াতিলেকান মার্কিন সিদ্ধান্তটিকে একটা বিরাট মিথ্যাচার বলে অভিহিত করেছেন:

আজকের প্রকাশ্য জগতে অন্যতম সেরা একটি অসত্য হলো যুক্তিসঙ্গত একটা সময়সীমার মধ্যে এলএলআরসি রিপোর্ট বাস্তবায়নে শ্রীলংকা সরকারের প্রতিশ্রুতি চায় বলে এই মার্কিন সিদ্ধান্তটি নির্দোষ এবং তর্কাতীত।

আরেকটি পোস্টে কালানা সেনারত্নে মন্তব্য করেছেন:

শ্রীলংকা সরকারের কাছে যুক্তরাস্ট্রের এলএলআরসি’র সুপারিশসমুহ বাস্তবায়ন বিষয়ে একটি ‘সমন্বিত কর্ম পরিকল্পনা’ দাবির সেই তাড়াহুড়োর মধ্যে সর্বত্র উদ্বেগের চেয়ে বেশি ‘ঔদ্ধত্য’ এবং ‘অসহিষ্ণুতা’ লেখা রয়েছে।

কিন্তু কালানাও মনে করেন শ্রীলংকা সরকারকে এর ঔদ্ধত্য  পরীক্ষা করে দেখা দরকার:

শ্রীলংকা সরকার যত কিছু করছে তার মধ্যে অবাক ব্যাপার হলো, এটি এমন আচরণ করছে যেন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নীতি এবং পররাষ্ট্রনীতির মধ্যে একেবারেই কোনো সংযোগ নেই। এটা একটা মৌলিক ত্রুটি।

শ্রীলংকার যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে সারা ইউরোপ থেকে হাজার হাজার তামিল জেনেভার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে এসেছে। লি হার্পারের পাঠানো ছবি। কপিরাইট ডেমোটিক্স (৫/৩/২০১২)

সিদ্ধান্তটিকে সমর্থন দেয়ায় শ্রীলংকার বিরোধীপক্ষ অভিবাসী তামিল এবং কিছু কিছু মানবাধিকার রক্ষী শ্রীলংকার জাতীয়তাবাদীদের তীব্র রোষের মুখে পড়ে। এক্টিভিস্ট সুনীলা আবিসেকারা, নিমালকা ফার্নান্ডো এবং পাইকিয়াসোথি সারাবানামুত্তুকে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা দিয়ে একটি বক্তব্য প্রকাশ করতে হবে।

ইন্দ্রজিত সামারাজিভা খসড়া সিদ্ধান্তটি বিশ্লেষণ করে মন্তব্য করেছেন:

মনে হচ্ছে এখানকার (ইউএনএইচআরসি-এর) এবং আরো অনেক জায়গার যুক্তিটি হলো যুদ্ধটি মন্দ কারণ শ্রীলংকার জয়ী হওয়াটা ঠিক হয়নি। এলটিটিই’র সাথে সৌজন্য দেখিয়ে সমঝোতা প্রচেষ্টা বা যুদ্ধ করার ফলই হয়তো এলটিটিই’র টিকে থাকা, যাকে প্রভাকরন আক্ষরিক অর্থেই তার সমস্ত মানব বর্ম নিঃশেষিত এবং নিজে নিহত হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে রাখতে পেরেছিলেন।

অনেকভাবেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত প্রভাকরনের সন্ত্রাস টিকে থাকার জন্যে দায়ী, যাকে আমি প্রভাকরনের – তামিল জনগণকে মানব বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে দায় শ্রীলংকা সরকারের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুর্বল করে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করা এবং তার আড়াল রক্ষা করার – খেলা বলবো। এটা কার্যকরী হয়েছে, ঠিকই আড়ালটি রক্ষা করে কয়েক বছর একটু বেশি দেরী করিয়ে দিতে পেরেছে।

ব্লগার আরো যোগ করেছেন:

আসল সমঝোতা ইউএনএইচআরসি বা এমনকি সরকারের তরফ থেকে আসেনি। ইতিবাচক কিছু হলে তার জন্যে শাস্তি মেলে না। আমাদের সমস্যা দূ্র করে দেয়ার জন্যে আপনি কাউকে জেলে পাঠাতে পারবেন না। সমঝোতা এসেছে শ্রীলংকার জনগণের তরফ থেকে, এবং আরো আসছে।

আর শ্রীলংকার কাছে সিদ্ধান্তটির অর্থ কী? ইন্দ্রজিত আরেকটি পোস্টে বলেছেন:

আসলে এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শ্রীলংকাকে হোমওয়ার্ক দেয়ার মতো যেখানে উত্তরটিই ভুল। এটা চমকপ্রদ নয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .