সৌদি আরবঃ ডাইনি শিকার চলছে; “ডাইনি” অভিযোগে এক ৬০ বছরের নারীর শিরোচ্ছদ

সৌদি আরবে, “তন্ত্রমন্ত্র এবং জাদুটোনা” অনুশীলন করার দায়ে ৬০ বছর বয়স্ক এক নারীর শিরোচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল দেশটির উত্তরের প্রদেশ জাওয়াফ-এ, আমিনা বিনতে আবদুল হালিম বিন সালাম নাসের-এর শিরচ্ছেদ-এর ঘটনা, আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংস্থার মধ্যে এক ক্ষোভের সঞ্চার করেছে এবং টুইটারে নেট নাগরিকদের মাঝে প্রবল বিদ্রূপের সৃষ্টি করেছে”।

সংবাদপত্রের সংবাদ অনুসারে, গ্রেফতার হওয়া উক্ত নারীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় পুলিশ অভিযোগ আনে যে “সে মানুষকে বিশ্বাস করাতো যে, তার রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে”। আর সে রোগ সারানোর জন্য টাকা দাবী করত। ২০০৯ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং সৌদি এক আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।

এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই শিরচ্ছেদের ঘটনাকে উল্লেখ করেছে “ভয়াবহ বলে এবং তারা সৌদি আরবে অনতিবিলম্বে এই প্রকার শিরচ্ছেদ বন্ধের উপর গুরত্ব আরোপ করেছে”।

মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রমের অর্ন্তবর্তীকালীন প্রধান ফিলিপ লুথার বলেন “তন্ত্রমন্ত্র এবং জাদুটোনা” মত অভিযোগ –সৌদি আরবে ঠিক অপরাধ হিসাবে এর সজ্ঞা নিশ্চিত করা হয়নি এবং এই সব অভিযোগের মাধ্যমে শিরচ্ছেদের মত কাজ নিষ্ঠুর এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে তা সত্যিকার অর্থে ভয়ঙ্কর”।

টুইটারে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবী থেকে আহমেদ আল আত্তার রসিকতা করেছে :

@আহমেদআলআত্তার:আসুন সবাই মিলে সৌদি আরবকে অভিনন্দন জানাই, বিভ্রান্ত এক বিচারে এক “ডাইনির” শিরচ্ছেদের জন্য।

আরব আমিরাতের সাংবাদিক টম গারা ঠাট্টা করছে:

@টমগারা: সৌদি আরব কি জানে না যে, ডাইনির মাথা কেটে ফেলার পর তার যাদুকরী ক্ষমতা আরো বেড়ে যায়?

কানাডার কেভিন কার্টার এর সাথে করে:

@ওয়াপিমাসকাওয়া৬৯:ডাইনি অভিযোগে এক নারীর শিরোচ্ছেদ করা হয়েছে। একটি মন্টি পাইথন নামক নাটকের কোন দৃশ্য নয়, সৌদি আরবের স্বাভাবিক আরেকটি দিন।

কাতার ভিত্তিক ফরেন পলিসি ব্লগের ব্লাক হাউনশেল প্রশ্ন করেছে:

@ব্লাকহাউনশেল: জানতে ইচ্ছে করছে: সৌদি আরবে কি ভাবে একজনের বিরুদ্ধে ডাকিনীবিদ্যার অভিযোগ আনা হয়?

এই প্রশ্নের উপর বেশ কিছু মজার প্রতিক্রিয়া এসেছে, ওমানের মাস্কট থেকে, ফাতেমা মাক্কি প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছে:

@ফাতামো: @ব্লাকহাউনশেল ১) যদি দেখেন যে তাকে একটা তেলের ব্যারেলে ফেলে দিলে সে ভেসে উঠছে। ২) তাকে গাড়ির চাবি দিন, যদি সে জানে যে তা দিয়ে কি করতে হবে তাহলে ধরে নিতে হবে যে অবশ্যই সে এক ডাইনি।

এবং বাহারাইনী আবদুল্লাহ আল রামাইয়া উল্লেখ করেছে:

@আবদুল্লাহ২৮৭:না , যাদের উপর সন্দেহ হয় যে তারা ডাইনি, তাদের ধরে এরা খাঁড়ির উপর থেকে ফেলে দেয়, যদি সে তখন পড়ে না গিয়ে উড়তে শুরু করে, তাহলে বোঝা যায় যে সে ডাইনি, আর যদি সে তা না করতে পারে, তাহলে সে উপর থেক পড়ে মারা যায় এবং বেহেশতে চলে যায় ( :

এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সূত্র মতে সৌদি আরব-এ বছর ৭৯ জন নাগরিকের শিরচ্ছেদের মাধ্যমে প্রাণদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, এর মধ্যে ৫ জন ছিল নারী। গত বছর ২৭ জনের শিরচ্ছেদ করা হয়, সেই অনুপাতে এ বছর এই সংখ্যা অন্তত তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান সমূহ-এর সাথে যোগ করেছে:

ধারণা করা হচ্ছে যে আগামীতে আরো প্রায় একশ জনের মত নাগরিকের শাস্তি হিসেবে শিরচ্ছেদ করা হবে, যাদের অনেক-কে মাদক পাচারের দোষে অভিযুক্ত হয়েছে। এই সমস্ত অভিযুক্তদের অনেকে, অনেক সময় নিজের সাফাই প্রদান করার জন্য উকিল পায় না এবং অনেক ক্ষেত্রে মামলার গতি প্রকৃতি সম্বন্ধে তাদের কোন ধারণা প্রদান করা হয় না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .