মিশর: ‘আমি আসলেই মোবারককে করুণা করি’

এই পোস্টটি আমাদের মিশর বিদ্রোহ ২০১১ সংক্রান্ত বিশেষ কাভারেজের অংশ।

এই সংবাদ শোনার পর থেকে যে ভূতপূর্ব মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ও তার ছেলে আলা আর গামাল এল-দিনকে আটক করে বিচার করা হচ্ছে, মিশরীয় ব্লগার আর বিপ্লবী হানি জর্জ, বলেছেন যে তিনি বেশ কিছু মানুষের সাথে দেখা করেছেন যারা বলেছেন যে তারা মোবারকের বর্তমান অবস্থার জন্য তারা দু:খবোধ করেন তার বৃদ্ধাবস্থা আর সাফল্যের কারনে।

মিশরীয় বিদ্রোহের সময়ে হানি তাহরির স্কোয়ারের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন। ফেসবুকে এপ্রিল ১৬, ২০১১ তারিখে তিনি তাহরির স্কোয়ার থেকে চাক্ষুষ একটি ঘটনা জানিয়েছিলেন যেটা তিনি নিবেদন করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে যারা এখনো মোবারকের প্রতি দু:খ বোধ করেন।

এখানে আরবি থেকে ভাষান্তর দেয়া হলো:

يوم 30 يناير رأيت العجوز، بدا مريضا للغاية، كان يتحرك بمفرده وسط صفوف المعتصمين بالميدان، وجهه المجعد بفعل السنوات لا يبتسم و لا يعبس، بعيون زائغة يتأمل وجوه الناس، يتفحصها، و كأنه كان يبحث عن شيء ما. بعد عدة ايام من تواجده الدائم بالميدان في نفس المكان بدأت اتسائل كيف يحيا وحده هذا العجوز !؟من يهتم بأمره هنا، راقبته لفترة طويلة، و لم اجد احدا معه، اقتربت منه متوددا محاولا فتح حديث، وعرفت منه ان ابنه الوحيد قتل في احدي المظاهرات، ولا يوجد في هذه الدنيا احدا اخر غير ابنه لكي يرعاه في ايامه الاخيره في الحياة، لذا فقد قرر أن يأتي الي ميدان التحرير و يعتصم

৩০ জানুয়ারী আমি বৃদ্ধ একজনকে দেখি। তাকে খুব অসুস্থ দেখাচ্ছিল, তাহরির স্কোয়ারের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একা হাঁটছিলেন। কুঁচকানো মুখ নিয়ে তিনি সবাইকে দেখছিলেন। হাসছিলেন না, মুখে বিরক্তি ছিল না। কেবল দেখছিলেন, মনে হচ্ছিল কিছু খুঁজছেন। কয়েকদিন পরে তাহরিরের একই স্থানে তার লাগাতার উপস্থিতি দেখে, আমি ভাবছিলাম এই বৃদ্ধ কি করে বেঁচে থাকে? তাকে কে দেখাশোনা করে? আমি দীর্ঘ সময় তার উপরে নজর রেখেছিলাম, কখনো তার পাশে কাউকে পাইনি।

তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ কথা বার্তা শুরু করার পরে, আমি জানতে পারি যে তার একমাত্র ছেলে একটা বিক্ষোভে মারা গেছে। তার ছেলে একমাত্র লোক ছিল যে তার শেষ দিনে তার দেখাশোনা করতে পারতো। তাই এই বৃদ্ধ তাহরির বিক্ষোভ করছেন এখন।

উটের যুদ্ধ

বিক্ষোভের চরম সময়ে, তাহরির স্কোয়ারে উটে করে মানুষ এসেছিল বিক্ষোভকারীদের মারতে। ছবি আমলসাওকির সৌজন্যে (২ ফেব্রুয়ারী ২০১১)।

قال لي، قتلوا ابني و انا كمان عايز اموت، بس اموت شهيد زيه علشان عايز اشوفه .في اليوم التالي لمعركة الجمل الشهيرة ذهبت الي المكان الذي نصب فيه العجوز خيمته لأسأل عنه، فلم اجده، وجدت في خيمته مجموعة من الشباب، سألتهم عنه فلم يعرفوه، قالوا لي انهم اتوا من مدينة المنصورة بالامس و شاركوا بمعركة الجمل، و وجدوا في الصباح هذه الخيمة بلا صاحب، و ظلوا بجانبها فترة طويلة حتي تأكدوا من خلوها، فسكنوها .

هذه الواقعة الحقيقية اهديها لكل من يتعاطف مع مبارك بدعوي انه رجل كبير السن و له انجازاته و لا يجب محاكمته، اهديها لكل من لا يعرف أن العدالة قيمة مهمه مثلها مثل الرحمة تماما إن لم تكن اهم منها كثيرا فيما يخص محاكمات الرئيس المخلوع، و ان كنت رحيما بالفعل فأدعوك أن تدعو بالرحمة للرجل العجوز و ابنه الشهيد

তিনি আমাকে বলেছেন, ”এরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে, আর আমিও মারা যেতে চাই, একজন শহীদ হিসাবে, তার মতো। আমি শীঘ্র তাকে দেখতে চাই।“

উটের লড়াই’ এর পরের দিনে, বৃদ্ধ যেখানে তার তাঁবু ফেলেছিল সেখানে আমি যাই তাকে দেখতে, কিন্তু সে সেখানে ছিল না। তার বদলে একদল বিক্ষোভকারীকে সেখানে দেখি। জিজ্ঞাসার পরে তারা জানায় যে তারা মান্সুরা শহর থেকে এসেছে আর ‘উটের যুদ্ধে’ অংশগ্রহন করেছে। সকালে তারা তাঁবুটা খালি পেয়েছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে যখন তারা নিশ্চিত হয়েছে যে এতে কেউ থাকে না তখন তারা ভিতরে ঢুকেছে।

আমি এই সত্যি ঘটনা তাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করি যারা মোবারকের প্রতি সমবেদনা জানান এই দাবি করে যে তিনি একজন বৃদ্ধ যার সাফল্যের ইতিহাসের কারনে তাকে বিচার করা উচিত না। এই গল্প সবার জন্য যারা বুঝতে পারেন না যে বিচার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়, ঠিক ক্ষমার মতো- যদি আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ না ও হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের জন্য। আপনার যদি আসলেই মায়া থাকে, দয়া করে এই বৃদ্ধ লোকের আত্মা আর তার শহীদ ছেলের জন্য প্রার্থনা করুন।

এই পোস্টটি আমাদের মিশর বিদ্রোহ ২০১১ সংক্রান্ত বিশেষ কাভারেজের অংশ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .