বাহরাইন: অভিবাসী নাগরিকদের এখানে ভূমিকা পালন করার রয়েছে

এই পোস্টটি বাহরাইন প্রতিবাদ ২০১১-এর উপর করা আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

উপসাগরীয় সহযোগী সংস্থা (গাল্ফ কোঅপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসি)–এর সদস্যভুক্ত অন্যান্য দেশের মত বাহরাইনকেও উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের কাজের জন্য বিদেশী শ্রমিক বিশেষত: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শ্রমিকদের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করতে হয়। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাহরাইনের ১.২ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে বিদেশী অভিবাসী নাগরিকরা সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ, যাদের অনুপাত ৫১শতাংশ।

বাহরাইনের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতায় অন্য দেশ থেকে আসা এসব জনগোষ্ঠী তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যেই রাজধানী মানামায় পাকিস্তানীদের বাড়ী-ঘরে হামলা হয়েছে

::D::, বাহরাইনে জীবন কাটিয়ে দেওয়া ভারতীয় বংশদ্ভূত (মহিলা) একজন সাংবাদিক ও ব্লগার বাহরাইনের চলমান অস্থিরতা নিয়ে তার চিন্তা কি, সে সম্বন্ধে লিখেছে:

বাইরে থেকে বাহরাইনের আসা আমার মত আরো অনেকেই এ দ্বীপটিতে বেড়ে উঠেছে । আমাদের বাবা-মার বাহরাইনি পাসপোর্ট ছিলনা, আমাদেরও নেই। কিন্তু আমি বিস্মিত এ কারণে যে, শুধুমাত্র লাল রঙের পাসপোর্ট (বাহরাইনি পাসপোর্ট) না থাকার কারনে আমরা এ দেশের কম গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকে পরিণত হয়েছি।আমাদের এমন এক সম্প্রদায়, যারা ভারত,পাকিস্তান,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে থেকে এসেছি। আমাদের বাবা-মা কয়েক দশক আগে এ দেশে এসেছেন, এখানে আমরা আমাদের জীবন কাটাচ্ছি এবং আমরা বাহরাইনকে নিজের দেশ মনে করি।

The blogger at a pro-government rally at Al-Fateh Mosque

ব্লগার, আল-ফাতেহ মসজিদের কাছে সরকার পক্ষের এক শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছে

আমরা স্বীকার করি বাহরাইন ঠিক স্বাভাবিক অবস্থায় নেই; আমরা স্বীকার করি সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, রাজনৈতিক দল এবং প্রচার মাধ্যমগুলোর সংস্কার ও নব উদ্যোমে কাজ করা জরুরি। আরো অনেকেই আছেন যারা আন্দোলনকে যৌক্তিক মনে করেন। তাঁরা আন্দোলনে অরাজকতা তৈরি হওয়ার আগেই এর সমাধান চান। আমরা তাঁদের যুক্তিগুলো শুনেছি এবং এ ব্যাপারে আমাদের মতমত কি তাদের তা জানিয়েছি।

বাহরাইনে বাস করা এইসব বিদেশী জনগোষ্ঠী বাহরাইনের সরকারের প্রতি অনুরক্ত, কারন বাহরাইন সকল বিশ্বাস এবং ধর্মের প্রতি তুলনামূলকভাবে উদার এবং বিষয়টি নিয়ে বাহরাইন গর্ব করে।

বাহরাইনে বাস করা এ রকম প্রচুর অভিবাসী নাগরিক শাসক পরিবারের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থনে প্রদান করেছে। যখন অনেক বিদেশী নাগরিকরা সরকারের সমর্থনে এখানে বের হয়ে আসে, তখন তাদের অনেকে এতে প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। তারা বলে, এটা বাহরাইনের নিজস্ব ব্যাপার কেন তোমরা এর মাঝে নাক গলাচ্ছ? এই সমস্ত সমালোচকদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, যখন আপনার ঘর এবং দেশে আগুন লেগে যায়, তখন কি আপনি এর থেকে দুরে থাকবেন এবং চেয়ে চেয়ে দেখবেন?

এছাড়াও তিনি বাহরাইনের বাস করা বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে বাহরাইনের প্রচার মাধ্যমের উন্নয়নের বিষয়টি প্রদর্শন করছেন।

এখানে প্রচার মাধ্যম বেশ বড় এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি এখানে নিজস্ব বেসরকারি একটি দেশী (ভারতীয়) টিভি স্টেশন রয়েছে। এখানে আমাদের আরবী এবং ইংরেজী ভাষায় অনেকগুলো সংবাদপত্র রয়েছে। এছাড়াও বাহরাইনে ট্যাগালোগ, মালায়ালম এবং উর্দু ভাষায় সংবাদপত্র প্রকাশ হয়ে থাকে। গত মাস থেকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি (বাহরাইন টেলিভিশন) আমাদের দ্রুত তাজা সংবাদ প্রদান করতে ব্যার্থ হচ্ছে [যদিও এটি সরকারের দিকে ঝুঁকে থাকে]। হ্যাঁ, এখানে প্রচার মাধ্যম লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে, কিন্তু তারপরেও তাকে সামনে অনেক দুর যেতে হবে। বাহরাইনের ইতিহাসে এই প্রথমবার বিটিভি ট্যাগালোগ এবং হিন্দি ভাষায় সংবাদ প্রদর্শন করেছে।

বিদেশী হিসেবে এখানে বাস করা সম্প্রদায়ের প্রতি এটি শ্রদ্ধা এবং মূল্যায়নের প্রতীক।.

লেখিকা তার পোস্টের সমাপ্তি টেনেছে এভাবে যে, সরকার এই কঠিন সময়ে এখানে বাস করা বিদেশী নাগরিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

আমি এবং আমার পরিবারের জন্য, এই দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্ন কখনো মাথায় আসে না। এটি হচ্ছে সেই এলাকা, যেখানে আমার জন্ম হয়েছে, প্রায় ৩০ বছর ধরে আমার পরিবার এই দেশে বাস করছে, এটাই আমাদের বাসগৃহ। বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র-মন্ত্রী নিশ্চিত করেছে যে, আমাদের নিরাপদে রাখার জন্য তারা তাদের সেরাটাই করবে। আমি তাদের বিশ্বাস করি এবং আমি বাহরাইনকে বিশ্বাস করি।

এছাড়াও ব্লগারের টুইটারে উপস্থিতি রয়েছে এবং তাকে @ডিল্কএনএমএল-তে পাওয়া যাবে।

এই পোস্টটি বাহরাইন প্রতিবাদ ২০১১-এর উপর করা আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .