নাইজার: নিরব দুর্ভিক্ষ

গুরুত্ব প্রদান না করে প্রকাশিত সাহেল নামক এলাকার খাদ সঙ্কট খানিকটা উদ্বিগ্ন অবস্থার সৃষ্টি করছে, কারণ নাইজারের ২.৫ মিলিয়ন (২৫ লক্ষ) লোক বর্তমানে এক খাদ্যসঙ্কটে আক্রান্ত হয়েছে। জাতি সংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বা ডাব্লিউএফপি) তার জরুরি কর্মসূচি পরিমাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে ঝুঁকিতে থাকা এই জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করা যায়। নাইজারের ব্লগাররা ২০০৫ সালের পর এ বছর আরেকটি খাদ্য সঙ্কট তৈরি হওয়ার বিষয়ের উপর মনোযোগ প্রতিফলিত করেছে করেছে। গত বছর কম বৃষ্টিপাত হবার কারণে এই খাদ্য সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।

পুরুষেরা সাহেল মরুভূমির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, ছবি নোয়াল-এর, ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর অধীনে ফ্লিকার থেকে তা ব্যবহার করা হয়

ডি.এভারিসটে ওয়েড্রারগো লিখেছে নিচের অংশ যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজনীতিবীদরা সব সময় নাইজারে খাদ্য সঙ্কট নিয়ে এক ঘূর্ণিজাল সৃষ্টির চেষ্টা করে যার ফলে তাদের উপর পছন্দনীয় ভাবে আলোকপাত করা হয় [ফরাসী ভাষায়]:

En 2005, les autorités avaient toujours tenté de convaincre l’opinion que la menace de famine était une simple rumeur malveillante, déshonorante. [..] Quelques jours après, son Premier ministre (PM), dans des propos non moins fallacieux, appelait pourtant à l’aide, la Communauté mondiale, pour cause de …famine [..] Aujourd’hui, la vérité est toute nue : dix jours seulement après le changement de régime au Niger, on apprend, dans une déclaration télévisée du chef de la junte au pouvoir, que la famine “menace l’existence de millions de Nigériens dans quasiment toutes les régions”. Le déficit en vivres est alors estimé à 400 000 tonnes. Tout le contraire donc des péroraisons de Mamadou Tandja, qui était allergique à l’idée de risques de pénurie alimentaire.

২০০৫ সালে দেশটির সরকার মতামতকে এমনভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে যে দুর্ভিক্ষের হুমকি কেবল লজ্জাজনক এক গুজব মাত্র [..]। কয়েকদিন পরে, প্রধানমন্ত্রী আর বিভ্রান্তিকর ভাবে নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন করল, কারণ.. দুর্ভিক্ষ। ২০১০ সালে আবার সত্যি প্রকাশ হয়ে পড়েছে: নাইজারে শাসকগোষ্ঠীর পরিবর্তনের দশদিন পর আমরা প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের টেলিভিশনে প্রদত্ত ভাষণে জানতে পারলাম যে, দুর্ভিক্ষ সারা দেশের লক্ষ লক্ষ নাইজারবাসীর জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। হিসেব করে দেখা গেছে এ বছর ৪০০,০০০ টন খাদ্য ঘটতি দেখা দিয়েছে। মামাদু তানডাজা যে হিসেব দিয়েছিলেন, এটা তার ঠিক একেবারে বিপরীত, যিনি খাদ্য সঙ্কটের ভাবনার কথা শুনলে জ্বলে উঠতেন।

গ্রিয়.কম বেশ জোরেশোরে কঠিন কিন্তু আকর্ষক একটা প্রশ্ন করেছে যে ঘটনায় অনেক নাইজেরিয়ান (নাইজারবাসীদের নাইজেরিয়ান বলে অভিহিত করা হয়) বিস্মিত:”ইউরেনিয়াম বিক্রির যে টাকা সেগুলো কোথায় গেল”? ফারাসী ভাষায়:

Qu’on se rappelle les tiraillements entre l’ex-chef de l’Etat du Niger et les premiers responsables d’AREVA à propos du renouvellement des contrats d’exploitation de l’uranium. [..] On ne dénoncera jamais assez ces slaloms qui permettent à des délinquants à col blanc d’extorquer impunément les fonds publics qui devraient servir à sauver de nombreux concitoyens en manque de nourriture, d’eau et de soins de base. Les masses d’argent tirées des ressources minières ne profitent généralement pas à la majorité silencieuse. Un paradoxe africain qui n’étonne guère. Mais aussi un scandale qui doit prendre fin en ce début de millénaire. A croire que les ressources minières n’apportent que misère aux populations africaines. Et il en sera tojours ainsi tant qu’elles ne seront pas utilisées à développer les cultures céréalières.

আসুন আমরা স্মরণ করি নাইজার নামক রাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রধান এবং আরেভার মধ্যে ইউরেনিয়াম বিক্রির চুক্তির নবায়নের মাধ্যমে সুবিধা নেওয়া নিয়ে যে উত্তেজনার সৃষ্টি, তা স্মরণ করি […]। নিচে নামার এই ঘটনায় আমরা কখনো যথেষ্ট অভিযোগ করব না, যা এই সমস্ত উত্তম পেশার মানুষদের দুষ্কর্ম করার সুযোগ করে দেয় জনতার টাকা মেরে দেবার, যে টাকা নাগরিকদের কাজে লাগত, যারা খাদ্যাভাব, পানি এবং মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবে ভুগছে। খনি সম্পদ থেকে পাওয়া অর্থ কোনদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ নিশ্চুপ জনতার মঙ্গলের জন্য ব্যবহার হয় না। এটা আফ্রিকার এক ধাঁধা, যা আর কাউকে বিস্মিত করে না। তবে, এই শতাব্দীর শুরুতে এ ধরনের কেলেঙ্কারিতে অবশ্য থামান উচিত। প্রায়শই যেন ধনী খনি মালিকেরা আফ্রিকার জনতার জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে। যতক্ষণ না সম্পদ সমূহকে শস্যক্ষেত-এর উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে, ততক্ষণ এই ঘটনাই ঘটতে থাকবে।

ক্যাথরিন রিচার্ডস এ্যাট কেয়ার কিছু চিন্তা এবং ঘটনার কথা জানাচ্ছেন যা এই “মঙ্গার সময়” ঘটে থাকে, তখন গ্রামের মানুষের আবিষ্কার করে পশুদের জন্য চারণ ভূমি খুঁজে পাওয়া ভীষণ জরুরি:

নাইজার এমন এক দেশ যা বৈপরিত্যে ভরা। দেশটি, সদ্য আবিষ্কৃত ইউরেনিয়াম এবং তেল সমৃদ্ধ, কিন্তু তার জনতা ভীষণ গরিব। […] বাজারে সব সময় প্রস্তুতকৃত খাবার পাওয়া যায়-কিন্তু তার দাম বেশি, যার ফলে খুব কম লোকই তা কিনতে পারে। এখন পরিবারগুলো কম দামে তাদের গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রি করে খাবার কিনছে। এ রকমই একজন মানুষ মোহাম্মদ গুসনাম:” এটা কঠিন একটা ব্যাপার। পশুপালনের কারণে আমরা অনেকটাই রাজকুমারের মত, এর জন্য আমরা গর্বিত। বর্তমানে চারণ ভূমিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা গ্রামেই আটকে থাকছি। গ্রামটা এখন আমার কাছে একটা বন্দিশালার মত’।

তবে বর্তমান খাদ্যসঙ্কটে সাড়া দেওয়ার ব্যাপারটি ২০০৫ সালের চেয়ে অনেক গতিশীল। ইউরোপীয় মানবিক ত্রাণ প্রদান সংস্থা (ইউরোপিয়ান কমিশন হিউম্যানিটারিয়ান এইড বা ইকো)-এর স্থানীয় প্রধান নিচের মূল্যায়নটি করেছেন [ফরাসী ভাষায়]:

Des mécanismes d’alerte précoce et d’intervention sont en place dans la plupart des pays touchés, et des fonds ont été alloués rapidement. Les opérations sont en bonne voie au Niger, au Burkina Faso et au Mali. Le Tchad a besoin de plus d’acteurs pour une intervention efficace.

অনেক সতর্কতা এবং অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা দেশের সবচেয়ে আক্রান্ত এলাকায় প্রয়োগ করা হয়েছে এবং সেই হিসেবে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। নাইজার, বুর্কিনা-ফাসো এবং মালিতে ভালোভাবে ত্রাণ কাজের অভিযান চলছে। কার্যকরী অন্তবর্তীকালীন কাজের জন্য চাদে আরো কর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন।

তারপরেও অনেক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস করে যে প্রয়োজনীয় সাহায্য আসতে অনেক দেরি হচ্ছে। দেরি করে আসার দু'টি কারণ তারা চিহ্নিত করেছে: ১) এটা নিশ্চিত করা যে দাতারা অর্থ সাহায্য নিয়ে আসছে এবং ২) সবচেয়ে দুর্গম এলাকায় বাস করা জনগোষ্ঠীর কাছে ত্রাণ পৌঁছানো। অনেকে মনে করেন অর্থ সাহায্য প্রদান আরো দ্রুত এবং কার্যকরভাবে করা উচিত: [ফারসী ভাষায়]:

Au cours de discussions avec les membres des communautés, davantage de personnes ont dit préférer les espèces aux semences. Les communautés ayant accusé les pertes de récoltes les plus importantes ou qui vivent plus loin des marchés tendent à opter pour les semences ; celles qui ont accès aux marchés, ont accusé des pertes de récoltes moins graves, ou ont un accès limité aux terres tendent au contraire à privilégier le cash.

সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ লোক বলছে যে তাদের কাছে বীজের নেই, কিন্তু বেশি টাকা রয়েছে। যে সমস্ত সম্প্রদায় বাজার থেকে অনেক দুরে বাস করে, তারা সাধারণত শস্যবীজ পেতে চায়। যারা বাজারের কাছে বাস করে এবং খুব বেশি কিছু হারায়নি, অথবা যাদের চাষের জমি খুব সামান্য তারা অর্থ সাহায্য পেতে আগ্রহী।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .