কিরগিজস্তান: জাতিগত সংঘর্ষের পেছনে উস্কানি দাতাদের ইন্ধন ছিল

পূর্বে জানানো হয়েছে যে গত ১০ই জুন, জাতিগত কিরগিজ আর উজবেক লোকদের মধ্যে দক্ষিণ কিরগিজস্তানে সংঘর্ষ বেধেছে যা এখন বড় মাপের সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে আর কিরগিজস্তানে বসবাসকারী উজবেকদের আরো বের করে দেয়া হচ্ছে এর ফলে।

তিন দিনের বর্ণবাদী আক্রমণের ফলে বড় মাপের মানবাধিকার বিপর্যয় ঘটেছে বিচ্ছিন্ন স্থানে- টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুত আর খাদ্য সামগ্রীর সহজলভ্যতা জনগণের এখনো সীমিত পরিমাণে আছে বেশ কয়েক রাতের গোলাগুলি আর লুটের পরে। ভয় ছিল যে এই সংঘর্ষ দক্ষিণ কিরগিজস্তানের কিছু এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার মধ্যে ওশের কাছের জালাল-আবেদ (ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভের বাড়ী) সমস্যার মূল স্থানে।

বর্তমানে, পরিস্থিতি মনে হচ্ছে ভালো হচ্ছে, যখন অন্তবর্তীকালীন সরকার কঠোরভাবে জরুরী অবস্থা আরোপ করেছেন। এর ফলে সেনাদের অধিকার দেয়া হয়েছে লুটেরাদের প্রতি গুলি করার। উস্কানী প্রদানকারী বেশ কয়েকজন লোককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যার মধ্যে কর্মকর্তারা ‘ভূতপূর্ব উচ্চতর রাজনীতিবিদ’ কে চিনতে পেরেছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। দুই জাতিগত গোত্রের পিতৃ স্থানীয়রা মানুষের সাথে দেখা করে আহ্বান জানাচ্ছেন শান্ত হয়ে মিল করতে।

তদন্তে জানা গেছে যে কথিত আক্রমণগুলো (এক দলের প্রতিনিধি দ্বারা অন্য দলের একজনকে মারা আর ধর্ষণ করা) বানানো হয়, যার ফলে সংঘাত পর্যন্ত ঘটেছে। দেশের উত্তর দিকের ব্লগাররা খাদ্য আর বস্ত্র যোগাড় করেছেন মানবাধিকার সাহায্য হিসাবে তাদের সহকর্মীদের পাঠানোর জন্য। ওশে থাকা সাংবাদিকরা একে অপরকে ফোন করে ফোনের টাকা ভরে দিয়েছেন, আর তারা নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না – তাদের পোস্টে রয়েছে শান্তির জন্য প্রার্থনা:

“আমি এই শহরের প্রেমে পড়ে গেছি এখানে পৌঁছার পরে থেকেই। এটা শান্ত আর আত্মিক, অনেক বাচ্চা রাস্তায় খেলে। এখন এটা ধ্বংস হয়ে গেছে, আর মানুষ মারা গেছে…” সাম-ডেস লিখেছেন, আর একই সাথে এক সময়ের শান্তিপূর্ন ওশের ছবি দিয়েছেন।

সাবিনা রাইনগোল্ড ভয় পাচ্ছেন যে এমন রাজধানীতে একদিন ঘটবে, যখন কিরগিজস্তান জাতিগতভাবে বিচিত্র হবে:

আমি ভয় পাচ্ছি যে উস্কানি দেয়ার লোকেরা একই কাজ বিশকেকে করে। দেশ ভয়াবহ অবস্থায় আছে, আমি যারা উস্কানি দিয়েছে আর যারা তাদের অনুসরণ করছে তাদেরকে ঘৃণা করি। আমি ভালোতে বিশ্বাস রাখা পছন্দ করি, কিন্তু খারাপের জন্য আমি প্রস্তুত থাকি, আমি কাঁদি আর শোক করি…

মোরিরে জানিয়েছেন:

“বিশ্বাসযোগ্য সূত্র খুব কম আছে। ভাবাবেগ চরমে, আর এই সব প্রতিরক্ষা বিহীন মানুষের ভয় আমি বুঝতে পারি, অনেকেই উস্কানি দেয়ার জন্য থাকে। বাসিন্দারা সব সময়ে চিৎকার শোনেন।“

তিনি আরো বলেছেন,” সরেজমিন রিপোর্ট থেকে জানা গেছে যে, পরিস্থিতির ভয়াবহতা ইচ্ছা করে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।“

উলানমেলিসবেক টুইট করেছেন, অন্য অনেক কিরগিজস্তানীর মত বিবাদমান পক্ষের প্রতি শান্তির আহ্বান জানিয়ে:

কিরগিজ বা উজবেক কাউকে এই রক্তপাতের জন্য দোষ দেয়া যায়না। এটা বাকিয়েভের দোষ, আর তাদেরকে ধিক্কার দেন।

আজাম্যাট্রিক্স আবেদন করেছেন:

‘জাতিগত দাঙ্গার’ কথা বলা বন্ধ করেন। একদল ডাকাত উজবেক আর কিরগিজদের হত্যা করছে!

সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে আলাদা অনলাইনের সংস্করণগুলো সিআইএ আর রাশিয়া ও উজবেকিস্তানকে দোষ দিচ্ছে, সেগুলো ছাড়াও মূল সংস্করণ হল যে আগের ক্ষমতাবানরা উস্কানি জুগিয়েছেন, বিশেষ করে ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভ দুই মাস আগে কথা দেয়ার পরে যে ‘তিনি দেশকে রক্তে ডুবিয়ে দেবেন।‘

“এটা পরিষ্কার যে কেউ একজন উজবেক আর কিরগিজদের মধ্যে সংঘর্ষময় পরিস্থিতি নিজের সুবিধার্থে ব্যবহার করছেন। মনে হচ্ছে বাকিয়েভের লোক এর পিছনে আছে, যার ফলে দেশের বড় অংশ ঝামেলার মধ্যে পড়ে,” লিখেছেন ফটো-নেবো

বেশ কয়েক ঘন্টা আগে জানা যায় যে জালাল-আবাদে আটককৃত উস্কানিদাতা নেতাদের মধ্যে ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভের খুব ঘনিষ্ঠ এক সহচর ছিলেন আর একজন ছিলেন খুব সম্ভবত তার ভাগ্নে। লন্ডন থেকে আর একটা খবর এসেছে- পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসকের ছেলে আর ভূতপূর্ব কিরগিজ ধনী মাক্সিম বাকিয়েভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যুক্তরাজ্য সীমান্ত সংস্থার গোপন কার্যক্রমের পরে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .