শুধু আরেকজন মানবাধিকার কর্মীকে কারাগারে ফেরত পাঠাতে বন্দী মানবাধিকার কর্মী নাবিল রজবকে মুক্তি দিল বাহরাইন

Bahraini human rights activist was freed tonight after a royal pardon. Photograph shared widely  on social media. Source: @nawaf_alhendal

বাহরাইনের মানবাধিকার কর্মীকে একটি রাজকীয় ক্ষমার পর আজ রাতে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আলোকচিত্রটি সামাজিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। উৎস: কুয়েতের মানবাধিকার কর্মী @নাওয়াফ_আলহেন্দাল

বাহরাইনের মানবাধিকার কর্মী নাবিল রজব’কে নিম্নলিখিত একটি রাজকীয় ক্ষমার মাধ্যমে কারাগার থেকে আজ রাতে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বিস্ময়কর এই পদক্ষেপটি ইব্রাহিম শরীফ এর পুনর্নবীকরণ আটক সঙ্গে কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে, যেটি আরও ১৫ দিনের জন্য তদন্তনাধীন ছিল। শরীফ বাহরাইনের একটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন সোসাইটি’র (ডব্লিউএএডি) মহাসচিব। একটি দন্ডাদেশ থেকে মুক্তি পাওয়ার মাত্র তিন সপ্তাহ পরই তাঁকে গত ১১ জুলাই তারিখে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারের সমালোচকরা বলছেন, সেটা ছিল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

রজবকে বানি জামরাতে অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়িতে গত ২ এপ্রিল, ২০১৫ তারিখে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মার্চ মাসের শেষ থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালায়। সে সম্পর্কে প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদের সাথে সাথে বাহরাইনের জো কারাগারে বন্দী ব্যক্তিদের কল্যাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি টুইটারে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তাঁর সংকলিত এসব টুইট বিষয়ে তদন্ত মুলতুবি রেখে শাস্তি প্রদানের সময় গত ১৪ মে তারিখে টুইটারে তিনি আইএসআইএস সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন সে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে একটি বাহরাইনি আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড বহাল রেখেছে

রাষ্ট্রায়ত্ত বাহরাইনি সংবাদ সংস্থার ইস্যু করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নাবিল আহমেদ আব্দুল রসুল রজবের স্বাস্থ্যগত সমস্যা বিবেচনা করে মহামান্য রাজা তাঁকে আজ বিশেষ ক্ষমা প্রদান করে একটি রাজকীয় ডিক্রি জারি করেছেন”। তাঁর বিরুদ্ধে থাকা অন্যান্য মামলায় আনা অভিযোগ ক্ষমা করা হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। টুইটারের সংক্রান্ত সব মামলা, যেসব মামলার তারিখ এখনও ধার্য হয়নি অথবা আইএসআইএস সংক্রান্ত বিভিন্ন টুইটের জন্য আনা অভিযোগের সবগুলো ক্ষমা করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

সমগ্র বাহরাইন জুড়ে রজবের মুক্তির খবরকে বেশ সতর্কতার সাথে স্বাগত জানান হয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, সরকার কি তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে দাবা খেলায় মেতে উঠল কিনা?

ফ্রিডম প্রার্থনা টুইট করেছেন:

আমরা আলি সালমানকে গ্রেফতার করলাম, ইব্রাহিম শরীফকে মুক্তি দিলাম; আমরা শরীফকে গ্রেফতার করলাম, নাবিল রজবকে মুক্তি দিলাম। জেলখানাগুলো বন্দি দিয়ে ভরপুর। যখনই সেখানে একটি স্থান ফাঁকা হচ্ছে, তখনই অন্য কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

ফয়সাল হায়াতের নিম্নোক্ত মন্তব্যগুলোও যেন একই ভাবনার সুতোয় গাঁথা:

তাঁরা আলি সালমানকে গ্রেফতার করল, ইব্রাহিম শরীফকে মুক্তি দিল; তাঁরা শরীফকে গ্রেফতার করল, নাবিল রজবকে মুক্তি দিল। এর পর কে?

আলি সালমান হলেন আল উইফাক ইসলামিক সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল। শরীফের মুক্তির তিন দিন পূর্বে তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। গত ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে সালমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবাধ্যতা এবং ঘৃণা উদ্দীপকের কারণে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। “ঘৃণা উসকে দেয়া এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য সহিংসতার ডাক দেওয়ার” অভিযোগে অভিযুক্ত শরীফের তদন্ত এখনও চলছে।

এবং আজ যখন রজব মুক্ত, তখন মাইক্রো-ব্লগিং সাইটে তিনি কি লিখবেন সেই স্বাধীনতাও হুমকির সম্মুখীন। এই সাইটে ব্যবহারকারীরা একটি সময়ে বিশ্বের সঙ্গে তাদের চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি ১৪০ টি অক্ষরের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। বাহরাইন ওয়াচ এর সদস্য জন হর্ন সাবধানতা অবলম্বন করে বলেছেন:

চলুন আমরা ভুলে যাই যে বাহরাইনের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে আইএসআইএস সমর্থকদের কথা টুইটের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য @নাবিলরাজাব’কে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল।

এবং (যদিও ক্ষমার শর্তাবলী স্পষ্ট নয়) @নাবিলরাজাব এখনও ভুলক্রমে একটি ছবি টুইট করার অপরাধে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার সম্মুখীন, যেটি মূলত ইয়েমেন ছিল না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .